বান্ধবীকে নিয়ে হলে রাত যাপন বড় অপরাধ : রাবি প্রো-ভিসি

রাবি প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম

ছবি-সংগৃহীত
শার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে বান্ধবীকে হলে নিয়ে এক ছাত্র রাত যাপন করেছেন। ‘এটা অবশ্যই সাংঘাতিক একটি ঘটনা। এমন ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে সেটা অনেক বড় অপরাধ। আমরা খোঁজ নেব, বিষয়টি সত্যি হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন।
শার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে বান্ধবীকে হলে নিয়ে রাত্রিযাপন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিববুর রহমান হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী। ওই নারীও একই বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী।
গত ৪ জুন হলের ১৫৩ নম্বর রুমে এই ঘটনা ঘটে। তবে ঈদুল আজহার ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
মেয়ে নিয়ে আসা শিক্ষার্থীর নাম নাজমুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাসা মাদারীপুর।
প্রত্যক্ষদর্শী দুই ছাত্র জানান, ‘আমরা ৪ তারিখ ভোরে বাড়ি ফিরব বলে সবকিছু গুছিয়ে হলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে দেখি, একটা ছেলে সাইকেল চালিয়ে আমাদের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। তার সাইকেলের পেছনে একটি মেয়ে বসা, মেয়েটির গায়ে স্কুলের শার্ট আর মাথায় ক্যাপ। বিষয়টি আমাদের চোখে অস্বাভাবিক ঠেকায় আমরা তাকে ধরার চেষ্টা করি, কিন্তু সাইকেলের গতি এত বেশি ছিল যে পিছু নিলেও ধরতে পারিনি। এমনকি দারোয়ান মামাও তাকে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম নারী শিক্ষার্থীকে হলের রাখার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘গত ৩ তারিখে আমার জন্মদিন ছিল। সেদিন কেক কেটে রাত হয়ে যায়। এদিকে ওর (ওই নারী) মেস থেকে ৩ তারিখের মধ্যে চলে যেতে বলে। ও মেসে যেতে পারবে না বলে আমাকে অনুরোধ করে রাখার জন্য। পরে আমি ওকে রাতে হলে নিয়ে আসি। মূলত আমি ওকে শেল্টার দেয়ার জন্য রাখি। পরে সকালে চলে যায়। তখন কেউ হয়তো আমাদের দেখে। এবিষয়ে প্রভোস্ট স্যার আমাকে ডেকেছিল। আমি তাকে বিষয়টি খুলে বলি। তিনি আমাকে হল থেকে বহিষ্কার করেন এবং বিষয়টি জানাজানি হবে না বলেও আমাকে জানান।’
এদিকে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘হলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এটি একটি ভয়াবহ অপরাধ, এত বড় সাহস হয় কিভাবে? আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি এবং ওই ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে হল প্রাধ্যক্ষ, গেটম্যান ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে এমন গর্হিত কাজ কিভাবে ঘটল, তার সঠিক ব্যাখ্যা চাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হবিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো: মোতাহার হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত আছি এবং ঘটনাটিও সত্যি। হল প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। তার সিট বাতিল করা হবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি তার বিরুদ্ধে বাকি সিদ্ধান্ত নেব।’