
প্রিন্ট: ২৬ জুন ২০২৫, ০২:২৮ এএম
আশুলিয়ায় গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, মা-ছেলে দগ্ধ

সাভার প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম
-6852be9d90cc8.jpg)
ছবি-সংগৃহীত
সাভারের আশুলিয়ায় বাড়িতে রান্নার প্রস্তুতিকালে গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধসহ মোট ৬ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৮ জুন) সকাল ৭টার দিকে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর মণ্ডল মার্কেটসংলগ্ন বাঁধিয়ারপাড়ের জুয়েল আহমেদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে দগ্ধ ৩ জনকে উদ্ধার করে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে এবং অন্যদের স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
দগ্ধরা হলেন জাহানারা বেগম (৫০), তার ছেলে গার্মেন্টস কর্মী জুয়েল রানা (২৪) এবং আরেক ছেলে টাইলস মিস্ত্রী জহুরুল ইসলাম (২৬) । অন্য আহতরা হলেন- শান্ত (২১), হাওয়া আক্তার (২৩) ও নাসির (৩৮)। এদের মধ্যে জাহানারার শরীরের ৬৮ শতাংশ এবং জুয়েলের ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে।
দগ্ধ জুয়েল রানা জানান, সকালে ঘুম থেকে ওঠে তিনি বাথরুমে যান।
এ সময় সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে রান্না করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তার মা জাহানারা বেগম। তখন চুলা জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। এতে তার মায়ের শরীরে আগুন ধরে যায় এবং ঘরের দেয়াল ধসে পড়ে। এ সময় তিনি ও তার বড় ভাই আহত ও সামান্য দগ্ধ হন।
আহত জহুরুল ইসলামের স্ত্রী স্বপ্না পারভিন জানান, তারা পাশের রুমে ছিলেন। বিস্ফোরণটির শব্দ এতটা বিকট ছিল যে, তাদের রুমের দেয়াল ধসে স্বামী জহুরুলের শরীরের উপর পড়ে। এছাড়া তাদের পাশের বাসারও আরো দুইজন আহত হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাড়ির মালিক জুয়েল মিয়া নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িটি নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছিলেন। সেই বাড়ির একটি কক্ষে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে ভবনটির দেওয়াল ধসে পরে এবং অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়।
জুয়েল মিয়ার বাড়ির ম্যানেজার শামীম মিয়া বলেন, নিচতলার ভাড়াটিয়া জহুরুল ইসলামের রুমের রাইজারে লিকেজ ছিল। দরজা জানালা বন্ধ থাকায় সারারাত গ্যাস বের হয়ে ঘরে ভেতরে জমে ছিল। সকাল ৭ টার দিকে রান্নার জন্য আগুন জ্বালাতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে বাড়িটির দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিকট শব্দের কারণে পাশের বাড়ির জানালার কাচ পর্যন্ত ভেঙে গেছে। এখানে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এসেছিলেন, তারা বিষয়টি তদন্ত করছেন।
জিরাবো মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার আবু সায়েম মাসুম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে ঘরে গ্যাস জমে ছিল। সকালে এক নারী রান্না করার জন্য চুলায় আগুন দিতে গেলে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরিত হয়। এতে কয়েকজন দগ্ধ হয়েছেন।
আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের ম্যানেজার হারুন অর রশিদ বলেন, সকালে দগ্ধ এবং আহত অবস্থায় পাঁচজন আমাদের এখানে আসেন। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। এদের মধ্যে জাহানারার শরীরে ৬৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার ছেলে জুয়েল রানার শরীরের ছয় শতাংশ পোড়ার পাশাপাশি তার দুই পাসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তবে জহুরুলের শরীরে দগ্ধ হয়নি। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।