Logo
Logo
×

সারাদেশ

বেরোবি, ৮ হাজার শিক্ষার্থীর সেবায় চিকিৎসক চারজন

Icon

বেরোবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১০:৪৬ এএম

বেরোবি, ৮ হাজার শিক্ষার্থীর সেবায় চিকিৎসক চারজন

উত্তরের বাতিঘর নামে পরিচিত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। ২২টি বিভাগে প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থীর পড়াশোনা। নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন প্রায় চার হাজার। বিপরীতে মেডিকেল সেন্টারে রয়েছেন মাত্র চারজন চিকিৎসক। বিশাল সংখ্যক এই নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেই কোনো গাইনি চিকিৎসক। ফলে বাড়তি খরচ দিয়ে বাইরে থেকে সেবা নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীই রংপুর বিভাগের বাইরে থেকে আসা। এসব শিক্ষার্থীর অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের ওপর নির্ভরশীল। তবে প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও মেডিকেল সেন্টারের সেবার মান সন্তোষজনক নয় বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে জানা যায়, প্রাথমিক স্তরেই সীমাবদ্ধ বেরোবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা ব্যবস্থা। চিকিৎসক সংখ্যা মাত্র ৪ জন, নার্স মাত্র ১ জন। বিপরীতে সেবাগ্রহীতা শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সব মিলিয়ে প্রায় ৯ হাজার।
    
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি ১০০০ জনসংখ্যার জন্য ১ জন চিকিৎসক থাকা দরকার এবং প্রতি ১ জন ডাক্তারের জন্য ৩ জন নার্স থাকা আবশ্যক। কিন্তু বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ১ জন চিকিৎসক সেবা প্রদান করেন ২২৫০ জনের।

শিক্ষার্থীদের দাবি, শুক্রবার ও শনিবার মেডিকেল সেন্টার চালু রাখার পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা চিকিৎসক সংকট নির্মূলের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান। বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের জন্য গুরুত্বারোপ করেন। অধিকন্তু চিকিৎসা ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সুফলের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে মেডিকেল সেন্টারে যন্ত্রপাতির আধুনিকায়নের জন্য দাবি জানান।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার বলেন, ক্যাম্পাসে একটা মেডিকেল সেন্টার থাকলেও সেবার মান নিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তারা কি তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে সমাধান করার পথ খুঁজেছে? আপনি যখন ভারী অসুখে থাকবেন, সেখানে গেলে দেখা যাবে দুটি ওষুধ মেডিকেল সেন্টার দিচ্ছে, আর দুটি ওষুধ বাহিরে থেকে কিনতে হচ্ছে। তাই আমি বলবো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত মেডিকেল সেন্টারের দিকে নজর দেওয়া। আমরা ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছি কি না সেটার খোঁজ রাখা, একইসঙ্গে পর্যাপ্ত ওষুধের ব্যবস্থা করা।

ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার (ডেন্টাল সার্জন) ডা. এ. এম. এম. শাহরিয়ার বলেন, বেরোবির মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রাথমিক স্তরের, সে হিসেবে আমরা যে সেবা দিতে পারি তাতে সন্তুষ্ট। কিন্তু যেহেতু প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পেরিয়ে গেছে সেহেতু বর্তমানে সেকেন্ডারি স্তরের চিকিৎসা প্রদান করা দরকার। কিন্তু ৯০০০ জন সেবাগ্রহীতার জন্য চিকিৎসক আছেন মাত্র ৪ জন। যা সুচিকিৎসা প্রদানের পথে প্রধান অন্তরায়। তাছাড়া ঢাবি, জাবি, রাবি ইত্যাদি বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারকে সেকেন্ডারি স্তরের চিকিৎসা প্রদান করতে হলে মেডিকেল সেন্টারের জন্য আলাদা ভবনের পাশাপাশি সেকেন্ডারি স্তরের চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকার ও বেরোবি প্রশাসনের কাছে আমার প্রত্যাশা, মেডিকেল সেন্টারের যাবতীয় সংকট দূরীকরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত করবে।

সেকেন্ডারি মেডিকেল সেন্টার চালুর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর-রশীদ বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা মেডিকেল সেন্টার প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার ব্যবস্থা করব। চিকিৎসক সংকট থাকার কারণে আমরা বাইরে থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক হায়ার করে চিকিৎসক সংকট নিরসন করব। তাছাড়া মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা পদ্ধতি খুব শিগগিরই সেকেন্ডারি স্তরের উত্তীর্ণ করা হবে।

বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, মেডিকেল সেন্টার সেকেন্ডারি করতে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন। এজন্য এক হাজার ৮০ কোটি টাকার একটা বাজেট আনার চেষ্টা করছি।

উপাচার্য আরও বলেন, আপাতত আমরা চারজন ডাক্তার অস্থায়ীভাবে আনার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। চারজন ডাক্তারের মধ্যে একজন সাইকিয়াটিস্ট, একজন গাইনি, একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন