
প্রিন্ট: ২৩ জুন ২০২৫, ০৬:২২ পিএম
রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
গত কয়েকদিনের মতো বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিভিন্ন সড়কে বাস সংকট দেখা গেছে, যার ফলে অফিসগামী ও কর্মজীবী মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
সকাল থেকেই রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল অনেক কম। অল্পসংখ্যক যে বাস চলাচল করেছে, সেগুলো ছিল যাত্রীতে ঠাসা। ফলে অনেকেই বাসে উঠতে পারেননি। নিরুপায় হয়ে অনেকে সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা কিংবা রাইড শেয়ারিং বাইক ব্যবহার করেছেন, যার ফলে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়েছে।
বাস সংকটের কারণ হিসেবে জানা গেছে, সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নির্দেশনায় গাজীপুর-আব্দুল্লাহপুর রুটের ২১টি পরিবহন কোম্পানির ২,৬১০ বাস গোলাপি রঙে রঙিন করে ই-টিকিটিংয়ের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খিলক্ষেত মোড় থেকে মহাখালী যাওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী হামিদুর রহমান। তিনি বলেন, "অনেকক্ষণ ধরে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু বাস আসছে না। অফিস টাইমে শত শত মানুষ রাস্তায় অপেক্ষা করছে, অথচ যে কয়টি বাস চলছে, সেগুলোতে ওঠার সুযোগ নেই। গত কয়েকদিন ধরেই একই পরিস্থিতি চলছে। বাধ্য হয়ে রাইড শেয়ারিং বাইকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অফিসে যাচ্ছি।"
উত্তর বাড্ডা থেকে পল্টনে যাওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ খোরশেদ আলম বলেন, "বাসের রঙ পরিবর্তন ও টিকিট সিস্টেম চালুর কারণে অনেক পরিবহন মালিক বাস নামাচ্ছেন না। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে গণপরিবহন সংকট সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।"
এদিকে, বাস সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে ভিক্টর পরিবহনের এক সহযোগী রিপন মিয়া বলেন, "গোলাপি রঙ করার নিয়ম থাকায় অনেক বাস মালিক গাড়িগুলো রং করতে দিয়েছে। এছাড়া ই-টিকিটিং চালু হলে চালক ও হেলপারদের আয় কমে যাবে, তাই অনেকেই গাড়ি চালাতে আগ্রহী নন।"
তুরাগ পরিবহনের চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, "যেসব বাস নতুন নিয়ম অনুসরণ করছে না, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে পুলিশ। এ কারণে ভয়ে অনেকে গাড়ি বের করছে না। নতুন নিয়ম চালুর ফলে ড্রাইভার ও হেলপাররা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে, তাই অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছে।"
রাজধানীর রামপুরা সড়কে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশ সদস্য এরশাদ আলী বলেন, "সকালের দিকে বাসের সংখ্যা অনেক কম দেখা গেছে। মূলত বাস মালিকরা শৃঙ্খলার নতুন নিয়ম মেনে বাস চালাতে চাইছেন না, তাই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে।"
এদিকে, বাস সংকটের সুযোগ নিয়ে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগও উঠেছে। মহাখালী এলাকায় অটোরিকশা চালক মাসুদ রানা বলেন, "উত্তরা, এয়ারপোর্ট, মহাখালী, বাড্ডা, রামপুরা এলাকায় সবচেয়ে বেশি বাস সংকট দেখা গেছে। ফলে হাজার হাজার যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। তবে বাস কম থাকায় আমাদের যাত্রী বেড়েছে।"
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।