সার্ভিস রুল না থাকায় মেট্রোরেল কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডে (ডিএমটিসিএল) স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা প্রণয়ন না হওয়ায় মেট্রোরেলের ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা শুক্রবার থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারের (১১ ডিসেম্বর) মধ্যে সার্ভিস রুল প্রকাশের আলটিমেটাম দিয়েও ফল না মেলায় কর্মচারীরা সব ধরনের যাত্রী পরিষেবা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বুধবার রাতে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে তাদের কর্মবিরতি শুরু হবে। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ এক দশক পেরিয়ে গেলেও ডিএমটিসিএলের ৯০০-এর বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি-বিধিমালা প্রণয়ন না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ জমে উঠেছিল। ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, শিফট অ্যালাউন্স, ওভারটাইম, গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স এবং পদোন্নতিসহ নানা আর্থিক ও প্রশাসনিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তাদের।
গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সার্ভিস রুল প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ কারণে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলনে নামলেও বারবার ডিএমটিসিএলের আশ্বাসে তা স্থগিত রাখেন কর্মচারীরা। সর্বশেষ ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আলোচনায় পরিচালক এ কে এম খায়রুল আলম ৯ ডিসেম্বরের বোর্ড সভায় সার্ভিস রুলের বিষয়টি উত্থাপনের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বরং বোর্ড সভার পর ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ জানান, 'বিশেষ বিধান' থাকায় সার্ভিস রুল প্রণয়ন করতে আরও সময় লাগবে। কর্মচারীরা এই বিশেষ বিধানকেও প্রশ্নবিদ্ধ বলে দাবি করছেন। তাদের অভিযোগ, এই বিধান প্রকল্পভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা তৈরি করছে, যা নিয়মিত কর্মীদের জন্য বৈষম্যমূলক।
প্রকল্পগুলো থমকে থাকায় অনেক কর্মচারীকে ডিপোতে বসিয়ে রাখা হয়েছে এবং নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের মধ্যে ছাঁটাই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকল্পের জনবল কমানোর সিদ্ধান্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। এমন বাস্তবতায় কর্মচারীরা কর্মবিরতি ছাড়া বিকল্প দেখছেন না বলেই জানান।
শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে তারা দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেল ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করবেন। যদিও শুক্রবার সকালে মেট্রোরেল বন্ধ থাকে এবং বিকেল ৩টা থেকে চলাচল শুরু হয়, তবু এর মধ্যে সংকট নিরসন না হলে তিন লাখের বেশি যাত্রীকে ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে।
কর্মচারীদের দাবি, জনদুর্ভোগের দায় পুরোপুরি ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।



