শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

১৮ ফেব্রুয়ারিকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোষণার দাবি

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : শহিদ সাব্বির আলসম খন্দকারের শাহাদৎ বার্ষিকী ১৮ই  ফেব্রুয়ারিকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোষণার দাবি জানানে হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহিদ সাব্বির আলম খন্দকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শোক র‌্যালি পূর্ব সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

 

সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন এড. তৈমুর আলম খন্দাকার,  সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এড.আজাদ বিস্বাস, বিএিনপি নেতা খন্দকার মনিরুল ইসলাম, জেলা ওলামা দলের সভাপতি শামছুর রহমান বেনু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তু, আইনজীবি নেতা এড.সরকার বোরহান, এড. আবদুল হামিদ খান হামিদ ভাসানী, এড.শিপলু, জেলা শ্রমিক দল সভাপতি নাসির উদ্দিন, মহানগর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন প্রমুখ।

 

এড. তৈমুর আলম খন্দাকার বলেন, ‘আমার ভাইকে কোন ব্যক্তিগত কারণে হত্যা করা হয়নি। শুধুমাত্র সমাজসেবায় মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমার ভাই আইনশৃঙ্খলার মিটিংয়ে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজীদের নাম উল্লেখ্য করে এবং তারা কে কত টাকা পায় এসব বলার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আজও আমার ভাইয়ের হত্যা বিচার পাইনি। শুধুমাত্র টাকার কাছে হেরে গেছি। হত্যাকারীরা টাকা দিয়ে ত্রুটিপূর্ণ চার্জশিট করিয়েছে। তাই আজও বিচার পাইনি। খুনিরা আবারো ঢাকায় ফিরে আমাদের খুন করার হুমকি দিচ্ছে। তিনি ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোষণার দাবি করেন।

 

বক্তারা বলেন, আজ যেই মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারসহ দেশবাসী কথা বলছে, সেই মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শহীদ শাব্বির আলম খন্দকার নব্বইয়ের দশক থেকেই সোচ্চার ছিলেন। তিনি মাঠ পর্যায়ে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলায় মাদক ও সন্ত্রাসের গডফাদারদের চক্ষুশুলে পরিণত হন। সমাজের ও দেশের চিন্তা করেই একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়েও অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েও তার হত্যার বিচার পায়নি তার পরিবার।

 

বক্তারা সমাবেশ থেকে হত্যাকারীদের ফাঁসি ও নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করার এবং দাবি জানান ১৮ ফেব্রুয়ারিকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোণনার দাবি জোর দাবি জানান।

 

সাব্বির আলম খন্দাকার গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এর সাবেক সহসভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতা ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সেরও সহসভাপতি ছিলেন।

 

শহিদ সাব্বির আলম খন্দকারের ১৭ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী স্মরণে- খুনিদের গ্রেফতার ও বিচার এবং নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করার দাবিতে ও ১৮ই ফেব্রুয়ারিকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোষণার দাবিতে সকাল সাড়ে ১০ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে এ শোক র‌্যালি বের হয়।

 

শোক র‌্যালিতে দল-মত, জাতি-র্ধম নির্বিশেষে শত শত নারায়ণগঞ্জবাসী যোগ দেয়। শোক র‌্যালিটি মাসদাইর পৌর কবরাস্তানে গিয়ে শহিদের কবর জেয়ারত, দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

 

এর আগে সকালে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইরে সাব্বির আলম খন্দকারের স্মরণে ও খুনিদের গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সর্বস্তরের সন্ত্রাস বিরোধী জনগণ ব্যানারে মানববন্ধন করে বিএনপির নেতারা। ওই মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের ফাঁসি ও নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করার দাবি জানান বক্তারা। 

 

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ২২ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস, চাঁদা ও মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাসে অনুষ্ঠিত জেলার ৩২ টি ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে সেনাবাহিনীর মত বিনিময় সভায় শহিদ সাব্বির আলম খন্দকার ‘আমার জানাযায় অংশগ্রহন করার আহবান জানিয়ে বক্তব্য শুরু করছি’  বলে নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নাম, ঠিকানা ও তাদের গডফাদারদের নাম প্রকাশ করেন। সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্ঠা করেন। তখন তার ব্যাপক তৎপরতায় জুট সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি গার্মেন্টস ব্যবসায়ী, চুন ফ্যাক্টরি ও নারায়ণগঞ্জবাসী নিস্তার লাভ করে।

 

চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা কোনঠাসা হয়ে পরলে তাদের গডফাদারদের ষড়যন্ত্রে প্রাতঃকালীন ভ্রমণকালে সাব্বির আলম খন্দকারকে গুলি করে হত্যা করে। তৎসময়ে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদাররা পওভাবশালী হওয়ায় মামলা দায়ের থেকে শুরু করে তদন্তসহ সকল ক্ষেত্রে অবৈধ হস্তক্ষেপ করে। ফলে দীর্ঘ ১৬ বছরেও একটি গ্রহণযাগ্য চার্জশীট প্রসাশনের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ সাব্বির আলম খন্দকারের পরিবারের।

এই বিভাগের আরো খবর