মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জান্নাতুল ফেরদৌস গর্জে উঠেছিলো

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গর্জে উঠেছিলো বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতীক, সামাজিক ও সাংষ্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।  শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) চাষাঢ়া শহীদ মিনারে জান্নাতুল ফেরদৌসের স্বরণে নাগরিক শোক সভা উদযাপন কমিটির ব্যানারে আয়োজিত শোক সভায় তারা এ কথা বলেন।  


শোক সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস একজন মাঠের মানুষ ছিলেন। বিভিন্ন পরিচয়ে তার বিচরণ ছিলো মানুষের ঘরে ঘরে। আমি তাকে চিনি বাল্যকাল থেকে এরপর সে আমাদের রাজনৈতীক সহযোগী হয়ে উঠে। 


আমরা যখন জেলে ছিলেন আমি তখন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জেল থেকে খবর পেতাম অনেকেই হালুয়া রুটি খেয়ে বিএনপির সাথে বেইমানি করেছে। সেই সময় আমার কাছে যেই নামের তালিকা দেয়া হয়েছিলো সেটাতে দেখি জান্নাতুল ফেরদৌসের নাম নেই। 


আসলে এই পুজিপতি রাস্ট্র ব্যবস্থায় রাজপথের সৈনিকদের আবস্থা হলো একদিকে পুলিশে পিটায় অন্যদিকে দলের তালিকায় নিজের নাম নেই। কিন্তু তখন যাদের কারণে জান্নাতুল ফেরদৌসের নাম আসেনি এখন তারা আর বিএনপিতে নেই। 
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে আমাদের শুধু একজন নেতা এবং কর্মীর সম্পর্কই ছিলোনা, তার সাথে সম্পর্ক ছিলো ভাইয়ের মতো। তার সাথে সম্পর্ক ছিলো বন্ধুর মতো নিবিড়। 


দীর্ঘ ১২ বছরে আমরা নারায়নগঞ্জে একটি মিটিং করতে পারিনি প্রাণ ভরে কথা বলতে পারিনি কিন্তু আজকে ফেরদৌস ভাইয়ের স্বরণ সভায় দাড়িয়ে মনে হচ্ছে এই শহীদ মিনার একটি ভিন্ন বাংলাদেশ। তাই তার আত্মার প্রতি আমাদের সকলের পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা রইল। 


নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পদক আবদুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সাবেক সাংসদ হাজী জালাল উদ্দিন সাহেব ৬ দফা আন্দোলনের সময় ১৫৫ জন লোকের জামিনদার হয়েছিলেন। তখন ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতার বাইরের দলের যেই রাজনীতির চর্চা ছিলো নারায়ণগঞ্জে সেই চর্চাটা কিন্তু এখন আর নেই। 


এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আমরা বিভিন্ন ভাবে যখন কারা নির্যাতিত ছিলাম তখন জান্নাতুল ফেরদৌস আমাদরে মুক্তির লড়াই এগিয়ে নিয়ে গেছেন। জান্নাতুল ফেরদৌস সেই রকম নেতা ছিলেন যিনি নির্যাতন ভোগ করেও এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। 


তাই জান্নাতুল ফেরদৌসের মতো স্বাধীন রাজনীতি করার মানুষ যত বেশি এই নারায়ণগঞ্জে তৈরী হবে ততই স্বৈরাচার বিরুধী আন্দোলনে সফলতা পাবে নারায়ণগঞ্জের মানুষ। 


নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের একটি রাজনৈতীক সম্পর্ক। তার মতো একজন সৎজন মানুষ বর্তমান সময়ে খুজে পাওয়া যায় না কারণ তিনি সহজেই মানুষের সাথে মিলতে পারতেন। নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতীক অস্থিতিশীলতার কারণে আমরা যখন হতাশার মধ্যে ছিলাম তখন এই লোকটি অদম্য উৎসাহ দিয়েছিলেন আমাদের। 


নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসীরুদ্দিন মন্টু বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস একজন দক্ষ রাজনৈতীক এবং সামাজিক সংগঠক হিসেবে নিজের যে পরিচয় দিয়েছেন সেটার প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল। সৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে অত্যাচারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য তাকে দিনের পর দিন পলায়ন করে থাকতে হয়েছে। এতেই বোঝা যায় যে তিনি ছিলেন একজন সাহসী রাজপথের নেতা। 


নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালের সভাপতিত্বে শোক সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দীক, সদও উপজেলার  চেয়ারম্যান আজাদ বিশ্বস, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুব দলের সভাপতি খোরশেদ আলম খন্দকারসহ অন্যান্য রাজনৈতীক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।  
 

এই বিভাগের আরো খবর