রোববার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

সোনারগাঁয়ে ১০ বছর পর নৌকা মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লাঙ্গল

সোনারগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২ জানুয়ারি ২০২৪  


নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনে দীর্ঘ ১০ বছর পর নৌকার প্রার্থী পেয়ে শুরু থেকেই উচ্ছাসিত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। প্রতিক বরাদ্দের পর সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারের পক্ষে উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লায় প্রচারনায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামীলীগ সমর্থীত নেতাকর্মীরা।

 

 

অপর দিকে, সোনারগাঁ আসনে একাধারে ১০ বছর ধরে লিয়াকত হোসেন খোকা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচীত হলেও পুনরায় বিজয় লাভের আশায় লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে মাঠ প্রচারনায় রয়েছেন তিনিও।

 


প্রতিক বরাদ্ধের পর থেকে আব্দুল্লাহ আল কায়সার প্রথমে উপজেলার কাঁচপুর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামীলীগ কর্মী সমর্থকদের বিশাল উপস্থিতি রয়েছে। ইতিমধ্যে নৌকার প্রার্থী কায়সার তার নির্বাচনী প্রচারণায় রোডম্যাপ প্রকাশ করে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।

 

 

প্রতিদিন নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে সক্রিয় রয়েছেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

 


উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুই দফা জোটের মধ্যে সমঝোতার কারণে গত দুটি সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। যার ফলে দুই দফা সোনারগাঁয়ে নৌকার কোন প্রার্থী ছিলনা। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টীর লিয়াকত হোসেন খোকা।

 

 

দীর্ঘ ১০ বছর পর আসনটিতে নৌকা পেয়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনায় মাঠে সক্রিয় আওয়ামীলীগের কর্মী সমর্থকরা। তাদের ভাষ্য মতে, এবার আর ছাড় দেওয়ার অবকাশ নেই। দীর্ঘ ১০ বছর মাঠ বঞ্চিত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা এবার প্রতিটি ইউনিয়নের হাট-বাজারে, পাড়া মহল্লায়, অলি-গলিতে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন পুরোদমে।

 


অপর দিকে, নৌকার মুল প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টীর সমর্থীত লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে প্রচারনায় মাঠ চষে বেরাচ্ছেন লিয়াকত হোসেন খোকা। বিগত ১০ বছরে সোনারগাঁ উপজেলায় রাস্তাঘাট, সেতু নির্মাণ, নতুন নতুন স্কুল কলেজ নির্মাণ ও স্বাস্থ্য শিক্ষায় ব্যাপক উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে প্রতিদিন তার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়নের হাট-বাজারে, পাড়া মহল্লায়, অলি-গলিতে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

 


নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনে ৭ জন প্রার্থীকে প্রতিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার পেয়েছেন নৌকা। জাতীয় পার্টী মনোনীত প্রার্থী  লিয়াকত হোসেন খোকা পেয়েছেন লাঙ্গল। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন মোঃ মজিবুর রহমান মানিক পেয়েছেন ফুলের মালা, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টীর মোহাম্মদ আসলাম হোসেন পেয়েছেন একতারা।

 

 

বিএনএম পার্টীর এবিএম ওয়ালিউর রহমান খান পেয়েছেন নোঙ্গর, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ পার্টীর নারায়ন দাস পেয়েছেন কুলা, মুক্তিজোট পার্টীর মোঃ আরিফ পেয়েছেন কলার ছড়ি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এএইচএম মাসুদ দুলাল পেয়েছিলেন ঈগল প্রতিক। এদের মধ্যে এএইচএম মাসুদ দুলাল নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

 

 

স্থানীয় ভোটারদের দাবি, এবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকার প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সারের সঙ্গে লাঙ্গলের প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার। সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারনাকে কেন্দ্র করে মূল প্রতিদ্বন্দ্বি দুই প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মাঝে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

 


রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনে ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ থেকে আব্দুল্লাহ আল কায়সার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর পর ২০১৪ সাল থেকে পাল্টাতে থাকে এখানকার রাজনৈতিক চিত্র। সরকার দলীয় জোটের কল্যাণে জাতীয় পার্টির টিকিটে ওই বছর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচীত হয়েছিলেন লিয়াকত হোসেন খোকা।

 

 

সে সময় জোটগত কারণে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সারের চাচা মোশারফ হোসেনকে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য করা হয়। পুনরায় ২০১৮ সালে লিয়াকত হোসেন খোকা আবারো জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেলে সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়।

 

 

কায়সারের বিপুল জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়ে নির্বাচনের মাত্র দুদিন আগে কায়সারের বাড়িতে হামলা করে এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে তাকে জিম্মি করে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয় খোকা। পরে ২০১৮ সালে লিয়াকত হোসেন খোকা আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচীত হয়েছিলেন।

এই বিভাগের আরো খবর