শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শহীদ তাজুল দিবসে জেলা ট্রেড ইউনিয়নের নানা কর্মসূচি  

প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪): শহীদ তাজুল দিবসে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়নের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে নানা কর্মসূিচ গ্রহণ করা হয়েছে।

 

শহীদ তাজুল দিবসে কর্মসূচিগুলো হল- ১ মার্চ বিকাল ৩ টায় বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে শহরে লাল-পতাকা মিছিল, বিকাল সাড়ে ৩ টায় শহীদ মিনারে সিপিবি, বাসদসহ বাম দলগুলোর পুষ্পমাল্য অর্পণ। বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে শহীদ মিনারে শ্রমিক সমাবেশ।

 

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে জেলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন. নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল হাই শরীফ। বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি তপন কুমার রায়, সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাস, সহসাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক, মো.শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম, জেলা কমিটির সদস্য এম এ শাহীন প্রমুখ।

 

সভায় বক্তারা বলেন, ১ মার্চ শহিদ তাজুল দিবস। ১৯৮৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে আদমজী পাটকলে শ্রমিক ধর্মঘট বানচালের উদ্দেশ্যে তৎকালীন ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী এরশাদের গুণ্ডাবাহিনী শ্রমিক মিছিলে হামলা করে কমরেড তাজুলকে রক্তাক্ত জখম করে। ১ মার্চ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সারা দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান, যানবহন ও কল-কারখানার লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কাজ বন্ধ করে রাস্তায় নেমে আসে। 

 

বক্তারা উল্লেখ করেন, দেশব্যাপী শ্রমিকদের মহা বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। আন্দোলনের তীব্রতা দেখে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ৫ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। সেই থেকে প্রতি বছর ১ মার্চ শহিদ তাজুল দিবস পালিত হচ্ছে। তাজুল ছিলেন আদমজী পাটকল মজদুর ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ও শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতা। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি আদমজী শাখার সম্পাদক।

 

তাজুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন কুমিল্লা জেলার মতলব থানায়। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে ছোট বেলাতেই কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন।  ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত হন। আত্মোৎসর্গকারী এই তাজুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পর স্বচ্ছল জীবনের সুযোগ প্রত্যাখ্যান করে সমাজতন্ত্র ও শোষণ মুক্তির লক্ষ্য নিয়ে আদমজী পাটকলে বদলি শ্রমিকের কাজ করতে শুরু করেন। তার এই আত্মত্যাগ ও সাহসের কোন তুলনা নেই।

 

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে শ্রমিক আন্দোলনে বিভিন্ন প্রতিকূলতার সুযোগে শাসক ও মালিক শ্রেণি শ্রমিকদের অর্জিত আইনী অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। একের পর এক শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী কালো আইন তৈরি করছে। কর্মক্ষেত্রে জীবনের নিরাপত্তা নেই। বাঁচার মতো মজুরি নেই। মিথ্যা মামলা, ছাঁটাই, নির্যাতন করেই চলেছে। ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নেই। আন্দোলন হলেই সেখানে বর্বরোচিত আক্রমণ ও হামলা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শহীদ তাজুলের মত সাহসী ও আদর্শবান শ্রমিক নেতৃত্ব আজ প্রয়োজন।

এই বিভাগের আরো খবর