শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

মেয়র আইভী বললেন অবৈধ, ভিপি বাদলের দাবি বৈধ

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির অনুমোদন করা নিয়ে মতবিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন আবারও জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। 


জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সদস্য বলছেন, সবজায়গায় যখন সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা ও থানা  কমিটি গঠন করা হচ্ছে তখন অবৈধ পন্থায় তখন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এড.শামসুল ইসলাম ভূইয়াকে আহবায়ক এবং  পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমানকে যুগ্ম আহবায়ক করে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন। 


অথচ এ আহবায়ক কমিটির বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আলোচনা করা হয়নি। এমনকি মাহফুজুর রহমান কালামকে অব্যহতি দেয়ার বিষয়টিও বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের অন্যান্যদের সাথে আলোচনা করা হয়নি। 


জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অভিযোগ, ১৫ জুলাই অবৈধ পন্থায় সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যেটি শুধুমাত্র সম্ভবপর হয়েছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদের স্বেচ্ছাচারিতায়।


নাম প্রকামে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা জানান, বর্ধিত সভায় সোনারগাঁয়ের আহবায়ক কমিটির বিষয়ে কোন আলাপই হয়নি। কথা হয়েছিলো সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বিষয়টি। তাদের ধারণা গোপনে এ কমিটি অনুমোদনের পেছনে আর্থিক কোন বিষয় জড়িত থাকতে পারে। 


বর্তমানে যখন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেশের বাইরে ঠিক এই মুহুর্ত্বে এ আহবায়ক কমিটির বিষয়টি সামনে আসলো। তাতে ক্ষুদ্ধ জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। 


সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির অনুমোদন প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড.আবু হাসনাত শহীদ মো.বাদল বলেন, আমরা কেন্দ্রের সাথে উপজেলা কমিটিগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম। 


সেখানে বললাম আমাদের কমিটি কোথাও ২০০৪ সালে, কোথাও ১৯৯৬ সালে আবার কোথাও ১৯৯৭ সালে হয়েছে। সারা বাংলাদেশে সম্মেলন হচ্ছে। তাই রূপগঞ্জ এবং আড়াইহাজারে সম্মেলন হয়েছে। সোনারগাঁয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী প্রত্যেকেই দাবি করেছে  প্রায় ২০ জনের অধিক সিনিয়র নেতা মৃত্যুবরণ করেছে। এই কমিটিও অনেক বছরের কমিটি যেটির বেশিরভাগ পদেই ভারপ্রাপ্ত। আমরা এখানে আহবায়ক কমিটি চাই। তার ভিত্তিতেই এ কমিটি দেয়া হয়েছে। 


যে কোন সিদ্ধান্ত সভাপতি ও সেক্রেটারি এককভাবে দেয়ার এখতিয়ার রাখেন মন্তব্য করে ভিপি বাদল বলেন, বর্ধিত সভার করার অর্থ দলীয় সববিষয়ে আলোচনা করা ও সিদ্ধান্ত নেয়া। তবে আমরা যে কোন সিদ্ধান্ত এককভাবে দেয়ার এখতিয়ার সভাপতি ও সেক্রেটারির রয়েছে। 


প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতির মতো ব্যক্তিরা যখন মুখে একটা কথা বলেন তখন সেটিই কার্যকরী হয়। সারা বাংলাদেশে নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে গেছেন তাদের শক্তভাবে দলীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। মাহফুজুর রহমান কালামকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কেন্দ্র যদি কখনো তার ব্যাপারটি বিবেচনা করে সেটি ভিন্ন বিষয়। 


জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে আপনাদের দুইজনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা যদি তৈরি হয় এমন প্রশ্নে ভিপি বাদল বলেন, দলের মধ্যে একেকজন একেক রকম কথা বলে এটি তার ব্যক্তিগত অভিমত। আর আমি ও সভাপতি যে কাজটি করি সেটি হলো সাংগঠনিক বিষয়।ধর্তব্যের বিষয় হলো, সভাপতি ও সেক্রেটারি বিষয়।

 

কেন্দ্রীয়ভাবেও দেখবেন সারা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম মেম্বার অনেক যাদের আপা আদর করেন। কিন্তু স্টেজে ওঠেন প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি। জেলা আওয়ামী লীগে কেন্দ্র থেকে ৩টি পোস্ট ডিক্লেয়ার করা হয়েছিলো। কিন্তু অনেকে ভাবেন প্রটোকলের বাইরে গিয়ে। আমরা যা করেছি     


জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও নাসিক মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি কি করে হলো এটি আমি জানিনা। তবে জেলা আওয়ামী লীগের ১৩ তারিখের বর্ধিত সভায় এধরণের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। 


বর্ধিত সভায় এধরণের কোন কথাবার্তা হয়নি। দপ্তর সম্পাদক সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির যে প্রেস রিলিজ দিয়েছে আমি মনে করি সেটি সম্পূর্ণ অবৈধ। 


জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিকে পাশ কাটিয়ে এ ধরণের কমিটি দেয়া মোটেও ঠিকনা এবং এটি একটি অবৈধ কমিটি। জেলা কমিটিতে এধরণের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।’  


সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমর, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সী ও সামসুদ্দিন খান আবু। 
 

এই বিভাগের আরো খবর