শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বিকেএমইএ’র সভাপতি হওয়া আমার জন্য বড় ব্যর্থতা : সেলিম ওসমান

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নীট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ’র সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, আপনারা আমাকে পঞ্চমবারের মত সভাপতি বানিয়ে সম্মানিত করেছেন। কিন্তু আমি মনে করি এটা আমার সব থেকে বড় ব্যর্থতা। 


কারন আমি নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বকে এগিয়ে আনতে চাইছি। কিন্তু নির্বাচনের সময় কেউ মনোনয়ন সংগ্রহ করেননি। আমাকে আবার সভাপতি দায়িত্ব দিয়েছেন। 


আমি নারায়ণগঞ্জের বিকেএমইএ নিজস্ব কমপ্লেক্সটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে আমি বোর্ডের সবাইকে সাথে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করবো। এরপর বলবো এবার আমার বিকেএমইএ এর সদস্য নীট ব্যবসায়ীদের জন্য কিছু একটা করেন।


শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শহরের চাষাঢ়া এলাকায় বিকেএমইএ এর প্রধান কার্যালয়ের পাশে অবস্থিত বাঁধন কমিউনিটি সেন্টারে বিকেএমইএ ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভা(২০১৮-২০১৯) তিনি এসব কথা বলেন।


তিনি আরো বলেন, নীট সেক্টরে এখন খারাপ সময় চলছে কিন্তু আপনারা ভীত হবেন না। সব জায়গায়ই খারাপ সময় আসে। এ অবস্থা থেকে আমরা বেড়িয়ে আসবো। বাংলাদেশের নীট ব্যবসা আরো ভাল হবে। এটা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয় এটা আন্তর্জাতিক সমস্যা। দাম বাড়লে সারা পৃথিবীতেই বাড়বে। 


আর পৃথিবীতে কেউই জামা কাপড় ছাড়া থাকতে পারবেনা। মনে রাখবেন আমাদের শ্রমিক আমাদের বড় শক্তি। এই শক্তি চীনের কাছেও নাই। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারা খারাপ থাকলেও শ্রমিকদের সাথে খারাপ আচরন করবেন না। 


শ্রমিকদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। শ্রমিকেরা ভাল থাকলে আমরা ভাল থাকবো। মনে রাখবেন বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের প্রথম স্থানে যেতে হবে। নতুন উদ্যোক্তাদের আপনারা ভীত করবেন না। মনে রাখবেন তারা ভীত হলে দেশের ১ কোটি মানুষের ক্ষতি হবে পাশাপাশি রাষ্ট্রের ক্ষতি হবে। তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে হবে তাদের উৎসাহ দিতে হবে।


নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব এগিয়ে আনার ব্যাপারে তিনি বলেন, নতুনরা এগিয়ে আসলে প্রয়োজনে বিকেএমইএতে তাদের দিয়ে আলাদা একটি কমিটি করা যেতে পারে। এছাড়াও নতুন আরো একটি পদ সৃষ্টি করা হবে যাতে করে আমার অনুপস্থিতিতে সেই পদে থাকা ব্যক্তিটি বিকেএমইএ এর কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে।


এছাড়াও বোর্ডের সকল সদস্যদের সম্মতি থাকলে ২জন নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে ২৯ সদস্যের পরিচালনা বোর্ড গঠন করা হবে।
নীট সেক্টরে বিদ্যমান সদস্যা এবং তা নিয়ে উদ্যোক্তাদের সাথে আলোচনা করতে তিনি বিকেএমইএ এর নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও চট্রগ্রাম কার্যালয় বা অন্যত্র ৩দিন করে বসে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান খুজবেন এবং তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন বলেও জানিয়েছেন বিকেএমইএ এর সভাপতি সেলিম ওসমান। যথসময়ে সদস্যদের চিঠি এবং ইমেলের মাধ্যমে কোথায় জানিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।


চাষাঢ়ায় বিকেএমইএ এর নিজস্ব ভবনের নির্মাণ কাজের আটকে থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএ ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করি। কিন্তু সামনের রাস্তাটুকু নিয়ে সিটি কর্পোরেশন রাজউকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে আমাদের ভবনের নির্মাণ কাজ আটকে রেখেছেন। 


আমরা সকল সমস্যা সমাধান করে ভবনের কাজ শুরু করবো। তখন যদি কেউ আমাদের ভবনের কাজ বাধা দিতে আসে তাহলে আমাদের লাখো শ্রমিকদের সাথে নিয়ে আমরা সেখানে বাউন্ডারি দেয়াল দিয়ে আমাদের কাজ শুরু করবো।


উক্ত এজিএম এ ৫টি বিষয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ২০তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিরনী, বিকেএমইএ এর পরিচালনা পর্ষদের (২০১৮ -২০১৯) কার্যক্রমের প্রতিবেদন, ২০১৮-২০১৯ সালের অডিটকৃত হিসাব, ২০১৯-২০২০ সালের প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০১৯-২০২০ সালে বিকেএমইএ’র বার্ষিক হিসাব প্রতিবেদন অডিট ও প্রস্তুত করার জন্য অডিট ফার্ম নিয়োগ প্রদান এবং তাদের ফি নির্ধারণের বিষয়টি সর্ব সম্মতিক্রমে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।


এছাড়াও চট্রগ্রামে বিকেএমইএ এর নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য ৭কোটি টাকার বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা আছে। অপরদিকে ২০২০ সালের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে চাঁদমারি বা চাষাঢ়া বিকেএমইএ এর কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করা হয়েছে।


২০১৬ সালে বিকেএমইএ ভবন নির্মানের জন্য ১৫ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছিলো। তবে বর্তমানে চট্টগ্রামে অফিস ভবন নির্মাণের জন্য ৭ কোটি দিয়ে বিকেএমইএতে থাকছে ৯ কোটি ৭৩ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা।


অনুমোদন হওয়া কার্যবিরনীতে বলা হয় বিকেএমইএ’র ২০১৮ - ২০১৯ সালের অনুমোদিত বাজেট ছিল ৩৩কোটি ২১লাখ ৮০হাজার টাকা, যার মধ্যে খরচ হয়েছে ২৯ কোটি ৩২লাখ ২৭হাজার ২১১ টাকা এবং উদ্ধৃত্ত রয়েছে ৪কোটি ৮২লাখ ৭৫হাজার ৮৫৩ টাকা।  
২০১৯-২০২০ সালের প্রস্তাবিত বাজেট ধরা হয়েছে ৩৬কোটি ৫০ হাজার টাকা এছাড়াও বাজার সম্প্রসারণের জন্য মেলা, সেমিনার ইত্যাদি প্রয়োজনে অতিরিক্ত আরো ৫ কোটি টাকার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অডিট ফি ২০১৮-১৯ সালের জন্য অনুমোদিত ১লাখ ১৫হাজার টাকা এবং ২০১৯-২০ সালের জন্য অডিট ফি প্রস্তাবনা হচ্ছে ১লাখ ৩০হাজার টাকা। 


বিকেএমইএ এর সভাপতি এমপি সেলিম ওসমানের সভাপতিত্বে এজিএম অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রথম সহ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, দ্বিতীয় সহ সভাপতি অমল পোদ্দার, সহ সভাপতি(অর্থ) মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল, পরিচালক আবু আহম্মেদ সিদ্দিক, মনসুর আহম্মেদ, ফজলে শামীম এহসান, জিএম ফারুক, মোস্তফা জামাল পাশা, আশিকুর রহমান, খন্দকার সাইফুল ইসলাম, মোস্তফা মনোয়ার ভূইয়া, তারিক আজিজ, রাজিব দাস সুজয়, শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া সাজনু, সেলিম মাহবুব নাসিমুল তারিক মঈন, রতন কুমার সাহা, নন্দ দুলাল সাহা, কবির হোসেন, মোহাম্মদ হাসান, আহম্মদ নূর ফয়সাল, মির্জা মোহাম্মদ আকবর আলী চৌধুরী, ইমরান কাদির তূর্য, মজিবুর রহমান প্রমুখ। 
 

এই বিভাগের আরো খবর