রোববার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বার নির্বাচনে গণতন্ত্রের কালো অধ্যায়ের সূচনা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪  

 

# বিএনপি প্যানেলের নির্বাচন বর্জন
# একটি পরিবারের ইশারায় নির্বাচন হচ্ছে : এড. সাখাওয়াত
# ভরাডুবির জন্য তারা নির্বাচনে আসে নাই : এড.রনি

 

 

সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বর্জন করেছে বিএনপি। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার নারায়ণগঞ্জ আইনজীবি সমিতি নির্বাচন বর্জন করে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তৈরী করেছে। তবে নির্বাচনে সম্পূর্ণ একতরফা নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে দুটি দাবী জানিয়েছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।

 

কিন্তু তাদের দাবী মেনে না নেওয়ায় এই নির্বাচন বর্জন করেছে বলে জানান বিএনপিপন্থী আইনজীবিরা। তবে আওয়ামীপন্থী আইনজীবিদের দাবী বিএনপির ভরাডুবি হবে বুঝতে পেরে তারা নির্বাচনে আসে নাই।

 

এদিকে নির্বাচন কমিশন সুত্রে জানাযায়, আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। নির্বাচনের জন্যে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এবং ৩ সদস্যের আপীল বোর্ড গঠন করা হয়। এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান এড. সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া।

 

নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী ১৭ জানুয়ারি জেলা আইনজীবি সমিতি নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ সময় যায়। কিন্তু শেষ সময় পর্যন্ত জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজী ফোরাম থেকে বিএনপি প্যানেলের কেউ মনোনয়ন জমা দেন নাই। এতে করে একতরফা ভাবে বিনাভোট নির্বাচিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী আইনজীবি প্যানেল। তা নিয়ে আদালত পাড়ায় ব্যপক আলোচনা সমালোচনা তৈরী করেছে। কেননা এর আগে ভোট বিহীন নির্বাচন নারায়ণগঞ্জ আ্ইনজীবি সমিতিতে হয় নাই বলে জানান বিএনপি নেতারা।

 

জানা গেছে, আগামী ৩০ জনুয়ারি জেলা আইনজীবি সমিতি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন সোনারগাঁ উপজেলার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন, অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম, অ্যাডভোকেট মেরিনা বেগম এবং অ্যাডভোকেট সুখ চাঁদ সরকার। আপীল বোর্ডে দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট ইমদাদুল হক তারাজুদ্দিন, অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা এবং অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির।

 

যদিও ২০২২ সনের নির্বাচনে এই কমিশনের অধিনে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের প্যানেল। তবে, এবার তাদের অধিনে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত না জানিয়ে তারা নির্বাচন বর্জন করেছে।

 

জানতে চাইলে এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘ইলেকশনের আগেই যদি ইলেকশন হয়ে যায়, তাহলে তো আর সেই ইলেকশন করে লাভ নেই। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে বানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনার। এই নির্বাচন আর কেমন হবে। আমরা চেয়েছি যে, নিরপেক্ষ লোকদের দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করানো হোক।

 

নারায়ণগঞ্জ বারে (আইনজীবী সমিতি) তো আওয়ামী লীগের মধ্যেই নিরপেক্ষ লোক আছে, তাদের দিয়ে নির্বাচন করুক। কিন্তু তারা না করায়। ওনারা আমাদের সাথে কোন কথা না বলে একতরফা ভাবে নির্বাচন ঘোষণা করছে।দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কুলশিত ও সকল নির্বাচনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এই সরকার।’

 

বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন খান অভিযোগ তুলে বলেন, নারায়ণগঞ্জ আইনজীবি সমিতিতে ২০১৭ সন থেকে প্রতিযোগিতা মূলক নির্বাচন হয় না। আইনজীবি সমিতি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মানুষকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেয়ার জন্য কাজ করে।

 

কিন্তু যখন থেকে একটি পরিবারের ইশারায় নারায়ণগঞ্জ আইনজীবি সমিতিতে নির্বাচন হচ্ছে তখন থেকে বারের আওয়ামী প্যানেলের আইনীজীবিরা ওই পরিবারের গুনগান গাওয়া নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। আর এতে করে বার এসোশিয়নে গণতন্ত্রের কালো অধ্যায়ের সুচনা হয়েছে। তাছাড়া এর আগে এমন ভাবে জেলা আইনজীবী সমিতিতে ভোট বিহীন নির্বাচন হয় নাই।  

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান বলেন, ‘তারা একটি একতরফা নির্বাচন কমিশন গঠন করছে। আমরা তাদের এই নির্বাচনকে বর্জন করেছি।

 

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রবিউল আমিন রনি জানান, বিএনপি এমন একটি দল তারা ক্ষমতায় থাকলে বলে নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। আর ক্ষমতায় না যেতে পারলে বলে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় নাই। বিগত সময়ে যত নির্বাচন হয়েছে সেগুলো ফেয়ার নির্বাচন হয়েছে। একই সাথে বার এসোশিয়নের নির্বাচনও সুষ্ঠ হয়েছে। আমাদের পূর্ববর্তী ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আইনজীবী সমিতি ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

 

সারা বাংলাদেশের মাঝে নারায়ণগঞ্জ জেলা বার ভবন হচ্ছে স্মার্ট বার ভবন। এমপি শামীম ওসমানের দিক নির্দেশনায় এবং এমপি সেলিম ওসমানের অর্থায়নে আমরা বার ভবনকে এগিয়ে নিয়েছি। এই উন্নয়নে কারণে এবং বিগত নির্বাচনে তাদের ভরাডুবির জন্য বিএনপি আইনজীবীরা নির্বাচনে আসে নাই। তাদের ডাকলে বলে আমরা নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারবো তাই নির্বাচনে যাবো না। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর