শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ফতুল্লায় বেড়েছে চোর-ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি!!

ফতুল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৯ মে ২০২০  

করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-পাগলা রুটে চোর ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফতুল্লা থানার ব্যস্ততম এই রুটের মাসদাইর কবরস্থান রোড হতে শুরু করে পাগলা-মুন্সিখোলা-পোস্তগোলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চোর ও ছিনতাইকারীদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র নানা কৌশলে এসব কুকর্ম পরিচালনা করছে। করোনা পরিস্থিতিতেও চোর ও ছিনতাইকারী বৃদ্ধি পাওয়াতে আতংকে রয়েছে ফতুল্লাবাসী।


সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-পাগলা সড়কের পাশাপাশি ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে বখাটেদের আড্ডাস্থল এবং পরিণত হয়েছে চোর ও ছিনতাইকারীদের নিরাপদ স্থানে। এর ফলে গত কয়েক মাস ধরে ফতুল্লাবাসী রয়েছে আতংকে। এমনকি সুযোগ বুঝে ছিনতাইকারীরা যাতায়াতরত সাধারণ মানুষকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কেড়ে নিচ্ছে নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে সর্বস্ব।


এ ব্যাপারে ফতুল্লার দক্ষিণ শিয়াচরের লালখা বায়তুল ফালাহ রোড এলাকার মুদি দোকানদার আলী হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে আমার দোকানের সার্টার ভেঙ্গে বেশ কিছু নগদ টাকা ও দোকানের মুদি মালামাল নিয়ে যায়। নগদ টাকা সহ প্রায় চল্লিশ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। থানায় অভিযোগ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,গরীব মানুষ দোকানদারি করে খাই,এত ঝামেলা কে করে বলেন?


এ ব্যাপারে লালখা বায়তুল ফালাহ রোড এলাকার আরেক মুদি দোকানদার  মোহাম্মদ আলী জানান, দোকানের সাথেই আমার বাসা। বৃহস্পতিবার রাতে দোকানের সার্টার ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করতে যায়। তখনি আমি শব্দ পেয়ে আসতে আসতে চোরেরা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। ইনশাআল্লাহ আমার দোকানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।


অপরদিকে ফতুল্লার হাজ্বী জালাল আহমেদ রোডের বোরহান ফার্মেসীর মালিক বোরহান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সার্টারের তালা ভেঙ্গে আমার দোকান থেকে ওষুধ সহ প্রায় ৩০/৪০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। আমি টাকাগুলো ওষুধ কোম্পানীর জন্য রেখেছিলাম, সকালে এসে ওষুধ কোম্পানীর লোক আসলে দিয়ে দিবো। কিন্তু তা আর হলো না।


অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজপড়ুয়া যুবক জানান, রাত ৭টার সময় আমার মা অসুস্থ হলে আমি ওষুধ কিনতে ফতুল্লার পোস্টঅফিস রিক্সাযোগে যাওয়ার পথে আমার কাছ থেকে চারজনের একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দল মানিব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমার মানিব্যাগে ৩২০০ টাকার মত ছিল। টাকা ছাড়াও মানিব্যাগে কলেজ কার্ড সহ অনেক কাগজপত্র ছিল।


আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যস্ত থাকার সুযোগে চোর ও ছিনতাইকারীদের দুর্ধর্ষ ওই চক্রটি গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-পাগলা সড়ক ও আশেপাশের এলাকায় তাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করে তুলেছে। এমনই অভিযোগ উক্ত সড়ক দিয়ে যাতায়াতরত একাধিক মানুষের। 


ফতুল্লাবাসী তাদের অভিযোগে জানান,ফতুল্লার ডিআইটি মাঠ, নদীরপাড়ের ওয়াকওয়ে, শিবু মার্কেট, স্টেডিয়াম রোড, দাপা ট্রাক স্ট্যান্ড, আলীগঞ্জ ট্রাকস্ট্রান্ড, পাগলা বাজার, মুন্সিখোলা ঘিরে একাধিক ছিনতাইকারী চক্র গড়ে উঠেছে।

 

করোনা পরিস্থিতি ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে এসব এলাকাসহ আশেপাশের এলাকাতেও চুরি ও ছিনতাইসহ অসামাজিক কার্য্যকলাপ চলে আসছে। এছাড়া পুলিশি ঝামেলা এবং বখাটেদের ভয়তে সাধারণ ভুক্তভোগী মানুষ আইনশৃংখলা বাহিনীর সহায়তা চাইতেও পারছে না।


মূলতঃ ব্যাটারী চালিত অটোরিকশার মাধ্যমেই এরা এসকল অপকর্ম চালিয়ে আসছে। এদের অবাধ বিচরণের কারণে উল্লেখ্য এলাকা দিয়ে চলাচল করতে প্রতিনিয়তই কুন্ঠাবোধ করছে পথচারীরা।

 

তাই জেলা পুলিশ সুপার এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ফতুল্লাবাসীর দাবি, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলার পাশাপাশি অচিরেই ফতুল্লাবাসীকে ভয়ানক এ চক্রের কবল থেকে রেহাই পেতে ভুক্তভোগী জনসাধারণ প্রশাসনের উদ্ধর্তন মহলের স্থায়ী পুলিশি টহলসহ আশু কার্যকরী হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
 

এই বিভাগের আরো খবর