শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

পলাশেই ধরাশায়ী হতে পারেন শামীম ওসমান !

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগে প্রার্থীতা নিয়ে  নিজ দলের প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এ আসনে বর্তমানে সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন আওয়ামী মনোনীত এমপি শামীম ওসমান।

১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো আওয়ামীলীগের টিকিট নিয়ে  নির্বাচিত হন এই সাংসদ। তবে পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাকে ছাড়াই আওয়ামীলীগ মনোনয়ন দেয় সারাহ বেগম কবরীকে।  জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন কবরী।

২০১৪ সালের নির্বাচনে ফের এমপি হন সাংসদ শামীম ওসমান। তবে এ যাত্রায় তাকে জনগণের দ্বারস্থ হতে হয় নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবারের পরিস্থিতি অন্য যে কোন সময়ে চেয়ে আলাদা।

এ আসনে আওয়ামীলীগের টিকিট পাওয়ার যোগ্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শ্রমিকলীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশেই ধরাশায়ী হতে পারেন বর্তমান সাংসদ এমপি শামীম ওসমান।

এমনটি মনে করার পেছনে বেশ কয়েকটি যুক্তি দ্বার করাচ্ছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। তাদের মতে, নির্বাচনে প্রার্থীতা পাওয়ার অন্যতম শর্ত জনগণের সমর্থন পাওয়া। এ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে সে কাজটি করে দেখিয়েছেন পলাশ।

পলাশ ও শামীম দুজনেই ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা নেতা। তাই সাংগঠনিক ধার দুজনেরই জানা। তবে পলাশ শ্রমিকলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার পর শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় সারা বাংলাদেশেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। আর জনগণ শামীম ওসমানকে দুইবার সুযোগ দিয়ে যে সুফল পেয়েছে তার চেয়ে বিভিন্ন কারণে সমালোচনায় বিদ্ধ তিনি। এবার জনগণ পলাশকে সুযোগ দিতে চান। যার ফলে পলাশের যে কোন সমাবেশে মানুষজন হুমড়ি খেয়ে পড়ে।

শামীমের চেয়ে পলাশের আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রাপ্তির সম্ভাবনার পাল্লা ভারী হওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সেটি হচ্ছে কেন্দ্রের সুনজরে নেই শামীম ওসমান। কেননা হকার ইস্যুতে নিজ দলের জনপ্রতিনিধি নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর উপর আক্রমনের ঘটনায় বেশ রুষ্ট কেন্দ্র। পরবর্তীতে  বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্র এমপি শামীম ওসমানকে এড়িয়ে যেতে দেখা গেছে।

এছাড়া আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তো একদিন হঠাৎ করে পলাশের বাসায় ঝটিকা অভিযানে বিশ্রাম নিতে আসেন। পরে দৌড়ে ঘটনাস্থলে আসেন শামীম ওসমান।

কেন্দ্র থেকে সর্বশেষ কর্মসূচীগুলোতে শামীম ওসমানের সরব উপস্থিতি না থাকলেও কাউসার আহমেদ পলাশ নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণের কথা জানান দিয়েছেন।

আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদেরও পূর্ণ সমর্থন রয়েছে কাউসার আহমেদ পলাশের উপর। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের সমর্থন পলাশের ওপর।

অপরদিকে শামীম ওসমানের দীর্ঘদিনের বন্ধুৃ মহানগর আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী ভিপি বাদল, জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপুসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাথে সম্পর্কে বৈরীতা তৈরী করেছেন শামীম ওসমান।

অথচ সবার এখন সমর্থন রয়েছে কাউসার আহমেদ পলাশের উপর। ঢাকায় থাকার কারণে জনগণের কাছ থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন শামীম ওসমান। অপরদিকে মানুষের সমর্থন যোগাতে মাঠ কাপিয়ে বেড়াচ্ছেন কাউসার আহমেদ পলাশ।

কাউসার আহমেদ পলাশের জন্য মনোনয়ন প্রাপ্তির সবচেয়ে বড় সুযোগ একাদশ জাতীয় নির্বাচন। ইতিমধ্যে তিনি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীতা চাওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। পলাশের বিরুদ্ধে যে কোন অপপ্রচারে শক্তিশালী অবস্থান নিচ্ছেন জেলা, মহানগর ও তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

ফলে একাদশ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয় টিকিট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বর্তমান সাংসদ শামীম ওসমানের চেয়ে কাউসার আহমেদ পলাশ বেশ ফুরফুরে অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা।

তাই তারা মনে করছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাউসার আহমেদ পলাশেই ধরাশায়ী হতে পারেন শামীম ওসমান

এই বিভাগের আরো খবর