রোববার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

টেবিলের নিচে লুকিয়ে রক্ষা পান শওকত চেয়ারম্যান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২২  

# সামেদ আলী আর আজগর গ্রুপের সংঘর্ষ
# তারা সামাজিকতা বুঝে না : শওকত চেয়ারম্যান

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী আকবরনগর এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু সামেদ আলী বাহিনী আর রামনগরের শহর আলী মেম্বারের পুত্র আলী আজগর কালুর সাথে জমি সংক্রান্ত জের ধরে মারামারি ঘটনা ঘটেছে।

 

রামনগর এলাকায় এক জায়গা নিয়ে সপ্তাহ খানিক আগে বক্তাবলী ঘাট সংলগ্ম ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি ও বক্তাবলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত আলীর অফিসে দুই পক্ষকে নিয়ে আপোষ মীমাংসার জন্য সালিশ বসা হয়। সালিশের এক পর্যায় উভয় পক্ষের মাঝে তর্ক-বিতর্ক হয়। যা এক পর্যায়ে সামেদ আলীর সন্ত্রাস বাহিনী আর প্রবাস থেকে আসা আলী আজগর সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ বাধে।

 


এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জায়গা নিয়ে দুই গ্রুপের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে জামেলা চলছে। তাদের মিট করার জন্য বক্তাবলী ইউপির চেয়ারম্যান শওকত আলী সহ স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা সহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠক বসেন। শালিসের এক পর্যায়ে সামদ আলীর পুত্র ওসমান গনি হুমকি দিয়ে বলে কালুরা কিভাবে এই জায়গা যায় তা দেইখা ছাড়মু। তাদের জায়গায় দেখলে মাটিতে পুতে রাখা হবে।

 

উভয়পক্ষকে ছাড়াতে গিয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন গনপিটনির সিকার হন। একই সাথে টেবিলের তলে পালিয়ে কোন রকম জানে বাচেন এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি শওকত আলী। টেবিলের নিচে লুকিয়ে জানে বাঁচলেন শওকত চেয়ারম্যান। পরে ফতুল্লা থানার পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।

 

ভূক্তভোগী আলী আজগর জানান, আমাদের রামনগর এলাকায় খরিদ সূত্রে ১০ শতাংশ জায়গা রয়েছে। আমি সেই জায়গায় কাজ করতে গেলে সামেদ আলী সন্ত্রাস বাহিনী বাধা প্রদান করে। অথচ এখানে তাদের কোন জায়গা নেই। এই বিষয়ে গত সপ্তাহে বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলীর অফিসে আকবরনগরের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও ডাকাত সর্দার সামেদ আলি এবং রামনগর এলাকার শহর আলী মেম্বারের ছেলে প্রবাস থেকে আসা আলী আজগর কালুর সাথে জমি সংক্রান্ত একটি বিরোধ মীমাংসার জন্য ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বক্তাবলী গুদারাঘাট সংলগ্ন চেয়ারম্যান এর অফিসে বিচারের আয়োজন করেন।

 

সালিশের এক পর্যায়ে সামেদ আলীর সন্ত্রাসী পাঁচ ছেলে ওসমান গনি, আরিফ, রাজিব,সজিব,হৃদয় সহ তাদের বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী নিয়ে হাজির হয়। অপরদিকে প্রবাসী কালু মোটা শওকত  চেয়ারম্যানের শালা সাইফুল এবং কাজী মোবারক সহ বেশ কয়েকজন নিয়ে হাজির হয়। বিচার মীমাংসার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মাঝে সংঘষের ঘটনা ঘটে। তখন তারা শওকত চেয়ারম্যান সহ আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীরের উপর পর্যন্ত হামলা চালান।

 

এক পর্যায়ে শওকত চেয়ারম্যান টেবিলের নিচে লুকিয়ে কোনরকম জানে বাচেন। এই সময় সামেদ আলীর পুত্রদের থামাতে গিয়ে দুই পক্ষের সন্ত্রাসীদের দ্বারা গণপিটুনির শিকার হন নেতা জাহাঙ্গীর।

 

ওই মারামারির ঘটনায় উপস্থিত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চেয়ার ছোড়াছুড়ি এবং লাঠিসোটা নিয়ে তুমুল ঝগড়ায় চেয়ারম্যান নিজেকে বাঁচাতে তার টেবিলের নীচে আশ্রয় নেন। এবং ওইখান থেকে চুপিসারে ফতুল্লা মডেল থানায় ফোন করে পুলিশ আনেন। পুলিশ আসতেছে এই সংবাদ আচ করতে পেরে দুই পক্ষই সামেদ আলীর ৫ছেলেসহ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী আর শহর আলী মেম্বার এর পুত্র দলবলসহ দৌড়ে পালিয়ে যায়।

 

এ ঘটনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। সন্ত্রাসীদের ঠেলাঠেলিতে, ধাক্কায় তিনি আহত হয়। পর্যন্ত হন। ঘটনা স্থলে পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নেতা জাহাঙ্গীর বলেন না তেমন কিছু না । চেয়ারম্যান সাহেব একটি বিচারে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

 

এবিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামীলীগ নেতা শহীদুল্লাহ এক পোষ্টে মন্তব্য করেন, কষ্ট পেলাম,দুঃখ পেলাম দারুণভাবে।বন্ধু শওকত চেয়ারম্যানকে শুধু অনুরোধ করবো সে যেন এ জাতীয় শালিসি করা হতে বিরত থাকে। এবং আইনকে আইনের কাছে নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সকল পক্ষকে পরামর্শ দেয়। কারণতার জন্য কেন জানি আমার দরধ অনেক বেশি।


 
বক্তাবলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত আলীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমিসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে উভয় পক্ষের যে জামেলা ছিল তা মিমাংসা করার জন্য চেষ্টা করি। শালিসের এক পর্যায়ে কাগজপত্র নিয়ে অভাব দেখা যায় তখন একে অপরকে কটাক্ষ করে কথা বলা নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ বাধে। পরে আমি পুলিশকে বিষয়টা জানাই। আমার জীবনে এই প্রথম এই ধরনের ঘটনায় পরি। তারা যেহেতু আমাদের মানে নাই তাই আমি তাদের বলে দিছি তারা যেন যে যার মত করে আইনি ভাবে ব্যবস্থা নেন। কেননা তারা সামাজিকতা বুঝে না।এমই/জসি
 

এই বিভাগের আরো খবর