শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে শিবির কর্মী!

প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০১৯  

রূপগঞ্জ (যুগের চিন্তা ২৪) : রূপগঞ্জে নবগঠিত উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

চলতি ফ্রেব্রুয়ারিতে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ। পাশাপাশি উপজেলা ছাত্রলীগের পরিশ্রমী নেতা ফয়সাল আলমকে সভাপতি ও মাসুম ভূইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্যর নতুন কমিটির অনুমোদন দেন তারা। 

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ ও সম্পাদক আশরাফুল ইসমাঈল রাফেল স্বাক্ষরিত সে কমিটিতে উপজেলা ছাত্রলীগের অচেনা মুখ মামুনুর রশিদকে প্রথম সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। 

উপজেলার গুতিয়াবো এলাকার নুরউদ্দিনের ছেলে মামুনুর রশিদ রূপগঞ্জে জন্ম হলেও বেড়ে উঠা ছিল শহরের ফতুল্লা এলাকায়। মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় কোরআনে হাফেজ ও আলিম পাশ করা মামুনুর রশিদ ছাত্র জীবন থেকেই শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

শহর ছাত্র শিবিরের সভাপতি নাছির উল্ল্যাহ ও সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমের বিশ্বস্ত হাতিয়ার মামুনুর রশিদ। 

মামুন শহরের ২নং রেলগেইটে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ওসিকে পিটিয়ে আহত, ফতুল্লার পিলকুনি এলাকায় যুবদলের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রশিবিরকে দাওয়াত না করায় সভামঞ্চে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মাদানী নগর মাদরাসা এলাকায় গাড়িতে আগুন ও পুলিশ পিটিয়ে জখম, শহরের মণ্ডলপাড়া এলাকায় পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ওয়ারল্যাস লুটসহ পুলিশের এসআই রবি চরন চৌহানকে হত্যার চেষ্টা, বন্দরের ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবঙ্গ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে বিভিন্ন মামলার নথিপত্রে পুলিশ উল্লেখ করেছেন। 

এছাড়া ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর ফতুল্লার পোস্ট অফিস নোয়াখাইল্যার বাড়িতে গোপন বৈঠকে শিবিরকর্মীরা নাশকতার পরিকল্পনা করার সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামুনসহ সাতজনকে আটক করে। 

শিবিরকর্মী হিসেবে নাশকতার ঘটনায় এখন অবধি চারটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে। মামলাগুলো বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। 

ছাত্র শিবিরের সক্রিয়কর্মী হঠাৎ করেই রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির শীর্ষ পদ পাওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগেও তৈরি হয়েছে বিভক্তি।  

এসব ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ছাত্র শিবিরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে মামুনুর রশিদ বলেন, আমি একজন কোরআনে হাফেজ। মাদরাসার ছাত্র ছিলাম বলেই পুলিশ ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করতাম, এখনো করছি।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, রূপগঞ্জের কমিটি রূপগঞ্জের নীতিনির্ধারকদের পছন্দ অনুসারে করা হয়েছে। আর আমি যতোটুকু জেনেছে ছেলেটা ফতুল্লা থানা শেখ রাসেল সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল। 

তাই তাকে ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে। তারপরও তার মামলার কাগজপত্র দেখে সাংগঠনিক নিয়ম অনুসারে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর