শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট ফতুল্লা আঞ্চলিক শাখার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ফতুল্লা রেল স্টেশন সংলগ্ন সংগঠনের কার্যালয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট ফতুল্লা শাখার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকাল ৩ টায় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে সভাপতি আশেকে রাসুল শাওন, সহ-সভাপতি গোলাম দস্তগীর, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রিগেল সহ ১৯ সদস্যের কার্যকরী কমিটি নির্বাচিত হয়।

 

গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট ফতুল্লা আঞ্চলিক শাখার সভাপতি আশেকে রাসুল শাওন এর সভাপতিত্বে কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, বাসদ ফতুল্লা থানা সমন্বয়ক এম এ মিল্টন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ প্রমুখ। 


 
নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৩ সালে গার্মেন্টস খাত রপ্তানি করেছিল ১৯ বিলিয়ন ডলার, বর্তমানে তা ৩১ বিলিয়ন ডলার। আজ জাতীয় রপ্তানির ৮৩ ভাগ গার্মেন্টস খাত থেকে আসে। অথচ এই শিল্প বিকাশের প্রধান ভিত্তি শ্রমিকরা পুরস্কৃত হওয়ার পরিবর্তে মালিকদের অমানবিক শোষণ-নির্যাতনের আর গার্মেন্টস মালিক প্রভাবিত সরকারের পক্ষপাতিত্বের শিকার হচ্ছে। তাই উৎপাদন বা রপ্তানি বৃদ্ধি হলেও নতুন মজুরি কাঠামোয় ৫ বছরে অর্জিত বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বাদ দিয়ে শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি বৃদ্ধি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

আর মালিকদের শোষণ বাধাহীন করার জন্য শ্রম আইনের  ২৩, ২৬, ২৭ নং এর মতো অগণতান্ত্রিক ধারা শ্রমিক নির্যাতনের জন্য মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মালিকদের স্বার্থ নিশ্চিত করে প্রণিত এই শ্রম আইনে শ্রমিকের অধিকারের যেটুকু স্বীকৃতি রয়েছে আজ তাও চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। 


 
কোন শ্রমিকের চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সে নিজে চাকরি থেকে অব্যহতি নিলে সে গ্রাচ্যুয়িটি পাওয়ার অধিকারী হবে না। শ্রম আইনের এই বিধানের সুযোগ নিয়ে মালিকরা শ্রমিকের চাকুরির মেয়াদ ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার কিছুদিন আগে শ্রমিককে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করছে। আবার যেসব শ্রমিকের চাকরির বয়স ৫ বছরের বেশি হয়ে গেছে তাদের বিরুদ্ধে ২৩ ধারায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের মিথ্যা অভিযোগ তুলে আইনানুগ পাওনাদি আত্মসাৎ করে শ্রমিককে চাকুরিচ্যূত করা হচ্ছে।

 

 এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদী শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদের ন্যায্য পাওনার দাবি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে। এর অতি সাম্প্রতিক উদাহরন কাঁচপুরের সিনহা গার্মেন্টস। সেখানে পুরাতন শ্রমিকদের একদিকে জোর করে চাকরি থেকে অব্যহতি দিতে বাধ্য করে আবার আইনানুগভাবে অবসর নেওয়া শ্রমিকের প্রাপ্য পাওনা মাসের পর মাস শ্রমিককে ঘুরাতে থাকে কিন্তু অর্থ পরিশোধ করে না। 


 নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর কেউই আইন লঙ্ঘনের কারণে মালিকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। গোটা প্রশাসনই যেন এখানে মালিকের স্বার্থরক্ষা ও শ্রমিক নিধনের পথ নিয়েছে।

 

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সিনহাসহ গার্মেন্টসের ছাঁটাইকৃত ও অবসর নেয়া শ্রমিকদের প্রাপ্য পাওনা প্রদান এবং ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টকে শক্তিশালী করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও অগণতান্ত্রিক শ্রম আইন বাতিল ও মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানান। 
 

এই বিভাগের আরো খবর