শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঈদে দর্জিপাড়ায় ভীড়, তবে পারিশ্রমিক কম দর্জিদের

প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৯  

শাহজাহান দোলন (যুগের চিন্তা ২৪): কোন এক সময় ঈদ মানেই ছিল দর্জির দোকানে আগে থেকেই পোশাকের মাপজোপ দিয়ে আসা। এর আগে গজ-কাপড়ের দোকান থেকে পছন্দের কাপড় কেনা ইত্যাদি। আর এখন সময় স্বল্পতার কারণে অনেকেই ঈদে তৈরি পোশাকের দিকে তাকিয়ে থাকেন। 


কিন্তু তবুও নগরীর দর্জির দোকানগুলোতে যেন, ব্যস্ততার কমতি নেই। আর ব্যস্ততা এতই বেশি যে ১৮ রমজানের পর থেকে অধিকাংশ দর্জিই কাজের অর্ডার নেবেন না। কারণ ঈদের আগেই তো গ্রাহকের কাছে তাঁদের পছন্দের পোশাকটা তুলে দিতে হবে। 


কিন্তু দিনরাত পরিশ্রম করে যেসব দর্জিরা স্বদ্বায়িত্বে আমাদের কাছে পছন্দের পোশাকগুলো তুলে দিচ্ছেন, দিনশেষে তাঁরাই আবার ঠকছেন। তাই বলাই যায় যে, দর্জিপাড়ায় কাজের ভিড় থাকলেও পরিশ্রমিক কম।


এর কারণ হিসেবে দর্জিরা জানান, সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে প্রতিটি পোশাকেই এসেছে তারতম্য। সংযুক্ত হয়েছে নতুন নতুন ডিজাইন (নকশা)। তাই এক একটি পোশাক তৈরিতে লাগছে বাড়তি সময়। কিন্তু কাজের সাথে তাল মিলিয়ে কোন দর্জিই তাঁদের মজুরি পাচ্ছেনা। 


অথচ দীর্ঘদিন যাবত এই কাজের সাথে জড়িত থাকায়, শৈল্পিক এ কাজের সাথে দর্জিদের রয়েছে একগুচ্ছ ভালোবাসা। তাই ন্যায্য মজুরি না পেয়েও অধিকাংশ কারিগররা (দর্জি) এই কাজকে ছাড়তে পাড়ছে না।


মঙ্গলবার (২১ মে) নগরীর দুই নং রেলগেট সংলগ্ন সোঁনারগা মার্কেটে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি দর্জির দোকানেই চলছে সেলাইয়ের কাজ। তৈরী হচ্ছে-ছেলেদের শার্ট, প্যান্ট, কমপ্লিট স্যুট, কাবলি, পাঞ্জাবি, সাফারিস্যুটসহ আরো বিভিন্ন রকমের পোশাক।


একই মার্কেটে স্টার টেইলার্স’র মালিক রতন মিয়া। কথা হয় তাঁর সাথে। তিনি নিজেও একজন দর্জি। ঈদে কাজের চাপ ও মজুরির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ব্যস্ততার কথা বাদ দেন! পারিশ্রমিকের কথাই কই, আসলে ভাই আমাদের দর্জিদের চাক্কার টাকা ফাক্কা। 


প্রতিদিন যা কামাই বাড়িতে যাইতে যাইতেই শেষ। কারণ সব ধরণের পণ্যের দামই বাড়ছে কিন্তু আমাদের মজুরি বাড়ে নাই। ৫ বছর আগেও একটা শার্টের মজুরি ৩০০ টাকা ছিলো এখনো ৩০০ টাকাই আছে। বরং গ্রাহকরা আইলে আমাগো ৩০০ টাকা মজুরির জায়গাতে ২৫০ টাকা ধরাইয়া দেয়। না নিলে আবার মন খারাপ করে।


পাশের দোকানের কারিগর স্বপন মিয়া বলেন, শুধু রোজার মাস এলেই আমরা প্রতিদিন বেশি হলে ৩ টি থেকে ৪ টি শার্ট শেলাই করতে পারি। আর অন্য সময়ে ১ থেকে ২ টা শেলাই করা যায়। 


যার পারিশ্রমিক হিসেবে আমরা ৩ থেকে ৪০০ টাকা পাই। সব কিছুর এত দাম যে, এই টাকা দিয়ে কিছুই করা যায়না। মন চায় কাজটা ছেড়ে দেই কিন্তু অনেক দিন হইয়া গেছে এই কাজে। তাই মন চাইলেও পারিনা।


দর্জিদের দাবি শুধুমাত্র পারিশ্রমিকের জন্য যেন তাঁদের এই পেশাকে ছেড়ে না যেতে হয়। সংবাদ পরিবেশনের পর এই সংবাদ পড়ে সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে অবগত হয়ে দর্জিদের সঠিক মূল্যায়ন করবে এটাই দাবি তাঁদের।
 

এই বিভাগের আরো খবর