শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঈদকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি রূপগঞ্জের নাবিল এগ্রো ফার্ম’র

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০১৯  

ষ্টাফ রিপোটার (যুগের চিন্তা ২৪) : কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার যাত্রামুড়া এলাকায় জবেদা টেক্সটাইল লিমিটেডের নাবিল এগ্রো ফার্মে গবাদি পশু কেনা বেচার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। 


হাটের ঝামেলা এড়িয়ে সুস্থ সবল উন্নত জাতের গরুর কারণে নাবিল এগ্রো ফার্ম দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ কারণে ইতোমধ্যেই বিক্রি শুরু হয়েছে কোরবানীর পশু বিক্রি। 


এছাড়াও এ ফার্মের গরুগুলো ক্ষতিকারক ক্যামিকেল মুক্ত ও কোনো প্রকার ইনজেকশন প্রদান না করে দেশীয় খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করা হয়ে থাকে। এই কারণে কোরবানীর ঈদে এ ফার্মের গরুগুলোর চাহিদা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। 


জানা গেছে, ২০০৮ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভার যাত্রামুড়া এলাকায় মাত্র ৬টি গাভী নিয়ে নাবিল এগ্রো ফার্মটি চালু করে স্থানীয় শিক্ষিত যুবক নাঈম ভূঁইয়া। 


বর্তমানে এ ফার্মটিতে ২০০ টি ষাঁড় ও ১৩৫টি ফ্রিজিয়ান গাভী রয়েছে। খড়, ভূষিও ঘাস খাওয়াইয়ে এক বছর লালন-পালনের পর গরুগুলোকে কোরবানীর ঈদে বিক্রি করেন তিনি। তাই এ ফার্মে কোরবানী ঈদে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা যায়। 


এ ফার্মের গাভীগুলো থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০লিটার দুধ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়ে থাকে। স্থানীয় বাজারে এখানকার দুধ ও মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখানে নিয়মিত কাজ করছেন প্রায় ৪০জন লোক। 


ফার্মটিতে উন্নত জাতের গাভীর পাশাপাশি চলছে স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়ায় গরু মোটা তাজা করণ। স্বাস্থ্যসম্মত দেশীয় পদ্ধতিতে মাংসের চাহিদা মেটানোর সাফল্য ও জনপ্রিয়তা অর্জন করায় বিভিন্ন  সংস্থা থেকে পুরস্কৃতও করা হয় নাবিল এগ্রো ফার্মের মালিক নাঈম ভূঁইয়াকে। 


এ ফার্ম করে তিনি বাণিজ্যিক ভাবেও বেশ লাভবান হয়েছেন। নাবিল এগ্রো ফার্মের সফলতা দেখে আগ্রহী হয়ে  উঠেছেন স্থানীয় যুবকেরা। 
নাবিল এগ্রো ফার্মের এক কর্মচারী জানান, আমরা গরুগুলোকে সঠিক সময় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়াই ও দেখাশোনা করে থাকি। যাতে কোরবানীর ঈদে গরুগুলোকে ভালো মূল্যে বিক্রি করা যায়। এছাড়াও এ ফার্মের গরুগুলোর কোনো সমস্যা দেখা দিলে উপজেলার চিকিৎসকের দ্বারা আমরা চিকিৎসা দিয়ে থাকি। 


নাবিল এগ্রো ফার্মে গরু কিনতে আসা ক্রেতা রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, আমি গত ৪বছর যাবৎ এ ফার্ম থেকে কোরবানীর পশু কিনতেছি তাই এবারও আগে ভাগেই কিনতে চলে আসলাম। 


কারণ এখানে স্বাস্থ্যসম্মত উন্নত জাতের মোটাতাজা গরু পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছরই এ ফার্মের গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকে। 
তিনি আরো বলেন, হাট থেকে গরু কিনতে গেলেই ঝুকি থেকে যায়। কারণ দূর-দূরান্ত থেকে আসা গরুগুলোকে মোটাতাজা করণ ঔষধ খাওয়ানো হচ্ছে কি না এটা গরু দেখেই বুঝার উপায় নেই।


কোরবানীর প্রথম শর্ত হলো সুস্থ সবল গরু কোরবানী দেয়া। এছাড়া গত বছর যেহেতু এ ফার্ম থেকে গরু কিনে মাংস ভালোই পেয়েছি। তাই এবারও কিনতে এসেছি। 


কোরবানী উপলক্ষে গরু মোটা তাজা করণ ও ইনজেকশন মুক্ত নাবিল এগ্রো ফার্মে ক্রেতারা গবাদি পশু কিনার জন্য ভিড় করছে । 
নাবিল এগ্রো ফার্মের মালিক মোঃ নাঈম ভূঁইয়া বলেন, আমার এ গরুর ফার্মটি মূলত শখের বশে করা হয়েছে,তবে বর্তমানে যেহেতু নিরাপদ মাংসের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে ঐ হিসেবে এ ফার্মের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। 


আমরা সম্পন্ন অর্গানাইট খাবার দিয়ে ফার্মের গরুগুলোকে মোটা তাজা করি। মানবদেহের ক্ষতি হবে এমন কোনো খাবার ব্যবহার করি না এ ফার্মে। এ জন্য আমাদের গরুর চাহিদা বেশি। 


এছাড়াও গত বছর কোরবানীর ঈদে আশানুভব গরু বিক্রি করতে পারায় এ বছরও সফল হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন তিনি। ফার্মের গরুগুলোকে সময় মতো স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করা হয়। তাই ক্রেতাদের কাছে এ ফার্মের সুস্থ সবল গরুর রয়েছে বেশ চাহিদা এমনটাই জানালেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা।


তিনি আরো বলেন, নাবিল এগ্রো ফার্মের গরুগুলো প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বধানে রয়েছে। এ ফার্মের গরুগুলোকে সঠিক সময় বেকসিন দেয়া হয়। 


মানব দেহের ক্ষতিকারক ক্যামিকেল ও ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়না বরং সম্পন্ন প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে মোটা তাজা করা হয়। এজন্য এ ফার্মে কোরবানীর ঈদে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় দেখা যায়। 
 

এই বিভাগের আরো খবর