শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ব্যানার-পোস্টারে সয়লাব নগরী!

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০১৯  

শাহজাহান দোলন (যুগের চিন্তা ২৪): কথায় আছে “প্রচারেই প্রসার ঘটে”। তবে সমাজে বেমানান এবং সাধারণ মানুষের কাছে অগ্রহণযোগ্য কোন রকমের প্রচারণায় প্রসার ঘটে না। বরং জনসাধারণের মধ্যে সমালোচনা ও বিব্রতবোধ তৈরি করে! শিশুদের নিয়ে পথ চলতে বাবা-মা, বড় ভাই, বা বড় বোনদের মাঝে মাঝেই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে তৈরি হয়। সোজাকথায় প্রবীণ, নবীন কিংবা শিশুরা এসব অশ্লীল ব্যানার পোস্টারে পথ চলতে অস্বস্তিতে পড়েন। এমন পরিস্থিতিকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের ব্যবসার ফায়দা হাসিল করতে অনেকে অনিয়ন্ত্রিত এবং অশ্লীল প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ব্যানার-পোস্টারে সয়লাব নগরী।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর বঙ্গবন্ধু রোড, নবাব সিরাজদ্দৌলা রোড, ইশাখাঁ রোডসহ বেশ কিছু সড়কের দু’পাশে অবস্থিত ভবনের দেয়ালে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়া বাংলা সিনেমার অশ্লীল পোষ্টার। সিনেমা হলের আশেপাশে কিংবা রাস্তায়ই শুধু নয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা জুড়ে এসব অশ্লীল ব্যানার কিংবা পোস্টারে সয়লাব। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের আঙুল ধরে স্কুল পথে হাঁটা অভিভাবকরাও পড়েন অস্বস্তিতে। বখাটেরা এসব অশ্লীল পোস্টার ঘিরে জটলা পাকায়। স্কুল-কলেজের পথচলতি শিক্ষার্থীরা বখাটেদের কটু কথার সম্মুখীন হন। সিনেমার পরিচালক, কলা-কৌশলি ও সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ রুচিবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নাগরিক সমাজ। যারা এসব অশ্লীল পোস্টার-ব্যানার দেদারচে ছাপিয়ে প্রচারণায় যুক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনও কোন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করছেননা। বিব্রতকর বিধায় অনেক সচেতন অভিভাবকও এসব বিষয়ে মুখ খুলতে চাননা।

শহরের ডিআইটি’তে অবস্থিত গুলশান হলের সামনে কথা হয় সালাম মিয়ার সাথে। তিনি যুগের চিন্তা ২৪’কে বলেন, ‘আমি আমার ছোট ছেলেকে নিয়ে প্রতিদিন কলোরব কিন্ডার কেয়ার স্কুলে আসি, এই হলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই নগ্ন ও অশ্লীল পোস্টার দেখে ছেলেটা বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে। তখন উত্তর দেওয়ার কিছুই থাকে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুলশান হলের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কি করবো হলে এখন সিনেমাহলে ভালো রুচি সম্পূর্ণ মানুষ আসে না। যারা আসে  তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা বিভিন্ন রকমের ছবি দেখাই ও পোস্টারে নানা রকম অশ্লীল ছবি জুড়ে দেই। প্রচারণার জন্য তো বিভিন্ন জায়গায় এসব পোষ্টার লাগাতেই হবে!’

তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী রেহেনা বিনতে ফিরোজ বলেন, ‘বাইরের মানুষের কথা কি বলবো, ক্লাসের বন্ধুরা একসাথে হেঁটে যাওয়ার সময়ও এসব অশ্লীল পোস্টার নিয়ে নানা ধরণের খারাপ মন্তব্য করে। সুন্দর নগরী ও সুন্দর সমাজ গড়তে কোন প্রকারের অশ্লীলতারই আসলে ঠাঁই দেয়া যায়না। এসব পোস্টার আসলে তারাই ছাপায় যারা মানসিক বিকারগ্রস্থ।’

সুন্দর ও প্রাণবন্ত সমাজ গড়তে সরকার ও নাগরিক সমাজ নানা ধরণের প্রচেষ্টা গ্রহণ করছেন। শিশু-কিশোর, অগ্রজ ও অনুজদের সমন্বয়ে সুন্দর সমাজ গড়তে সুস্থ্য মানসিকতার কথা বলেন বিশিষ্টজনেরা। সুস্থ্য মানসিকতা তৈরির অন্তরায় এসব অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ব্যানার- পোস্টারের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও যথাযথ কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এমন প্রত্যাশা নাগরিক সমাজের।     

এই বিভাগের আরো খবর