শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আড়াইহাজার থানা বিএনপি’র সভাপতি পদবাজিতে ধোঁয়াশায় নেতাকর্মীরা

প্রকাশিত: ২০ মে ২০১৭   আপডেট: ২০ মে ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪ ডটকম) : আড়াইহাজার থানা বিএনপির সভাপতির পদ নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে দলের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার ঝড়সহ দলের মধ্যে ভাঙ্গন ও নিত্য কাদাছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটছে। একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারুপের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছেন। কেন্দ্র দলের মধ্যে ঐক্য চাইলেও পদাকৃষ্ট নেতাদের চাপে দলে ঐক্য ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে বলে দাবি করছেন তৃনমূলসহ ত্যাগী নেতাকর্মীরা। মূলত এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বিএনপিতে “একনেতার একপদ”  এ ঘোষনার পর থেকে। এটা অনেকেই মেনে নিতে পেরেছেন। আবার অনেকেই এটা মেনে নিতে পারেননি। নারায়ণগঞ্জে এর নজির স্থাপন রেখেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার। তিনি জেলা বিএনপির কমটিেিত নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যহতিও চেয়েছেন। যদিও পরে জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষনা করা হলে ওই কমিটিতে তিনি স্থান পাননি। কিন্তু এর ব্যতিক্রম কান্ড ঘটিয়েছেন এ এম বদরুজ্জামান খসরু। তিনি একই সাথে আড়াইহাজার থানা বিএনপির সভাপতি এবং একই সাথে তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদকও। অনেকেই এ আচরণকে “পদবাজি” হিসাবেই দেখছেন। অনেকে আবার এটিকে দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ বলেও বাখ্যা দিচ্ছেন। এনিয়ে উপজেলার বিএনপির বিরাট একটি অংশের নেতাকর্মীরা ধোঁয়াশার মধ্যে পড়েছেন। তৃনমূলের নেতাকর্মীদের কাছে সভাপতির পরিচয় দিয়ে তিনি সবাইকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলেছেন। আড়াইহাজার বিএনপির রাজনীতিতে তিনি বর্তমানে বেমানান বলেও অনেকে দাবী করছেন। এদিকে, সভাপতির পরিচয় দিয়ে জেলা কমিটিকে তিনি প্রভাবিত করে ফের পদ বাগাতে চেষ্টা করছেন বলে নেতাকর্মীরা দাবি করছেন। বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একনেতার দুই পদ থাকার কথা নয়, কিন্তু খসরু একই সাথে দুইটি পদের পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছেন। জানা গেছে, খসরু থানা বিএনপির সভাপতি দাবী করলেও উক্ত কমিটিতে অন্যকোনো পদধারীকেও দেখা যায় না। এরই মধ্যে তিনি হাবুর কাছে পরাজিত হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে হাবুকে দলের বাইরে রেখেছেন তিনি। তার স্থলাভিক্ত করা হয়েছিল কাসেম ফকির নামে বিএনপির একনেতাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গলে ভিণœ চিত্র। ৭ মে’র নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আয়োজিত হিমালয় চাইনিজ এন্ড কমিউনিটি সেন্টারের কর্মীসভায় খসরু’র বহি¯ৃ‹ত সাধারণ সম্পাদক হাবুকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল। যার কর্মীকার্ড নং ছিল- ২৬৩। এ বিষয়ে থানা যুবদলের নেতা লায়েছ জানান, সেদিনের অনুষ্ঠানে হাবুকে দেখে রীতিমতো খসরু’র চোখ কপালে উঠে যায়। খসরু’র চক্ষুশুল হাবু সেদিনের কর্মীসভায় আড়াইহাজার বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য দিয়েছেন। এর পর খসরু বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়ে যান। এখানে খসরু’র নৈতিক পরাজয় হয়েছেন। অন্যদিকে থানা বিএনপির নেতা মনির বলছেন, দলের বারোটা বাজিয়ে খসরু একাধিক পদ আকঁড়ে ধরে দলের মধ্যে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। অতীতেও তিনি পদ-পদবী পেতে মরিয়া ছিলেন। যাকেতাকে দলের বিভিন্ন পদে আশিন করেছেন। কিন্তু কোনো ইউনিয়নেই তার অধীনে দলের কোনো সংগঠনেরই অস্তিত্ব নেই। তার দ্বারা নেতাকর্মীরা তুচ্ছতাচ্ছিল্যের শিকার হয়ে অনেকেই দলত্যাগেও বাধ্য হয়েছেন। থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহীদউল্যাহ বলেন, খসরু সাহেব নেতাকর্মীদের কোনো দিনই মূল্যায়ন করেনি। আড়াইহাজার বিএনপিতে অনেক ত্যাগী নেতারই পদ নেই। পদ ছাড়াই অনেকেই রাজনীতি করে যাচ্ছেন। কিন্তু খসরু সাহেব একই সাথে দুইটি পদের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা পত্রপত্রিকায় দেখেছি বিএনপির গঠনতন্ত্রে “একনেতার একপদ”। কেন্দ্রে বড় পদ থাকার পরও তিনি ছোট্র পদের পরিচয় দিচ্ছিন কিন্তু কেন ? এটা আমার বোদগম্য নয়। এতে দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হচ্ছে। আমি জেলা বিএনপির কাছে দাবী জানাচ্ছি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার। সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটিতে সম্পাদকের পদ থাকার পর, থানা বিএনপির কমিটির সভাপতি পরিচয় দেয়াটা বেমানান। কেন্দ্র থেকে একটি নির্দিষ্ট তারিখ বেঁধে দেয়া হয়েছিল। সেই তারিখের পর থেকে থানা কমিটি অটোমেটিকই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। খসরু সাহেব এখনও নিজেকে কমিটির সভাপতি দাবি করছেন। এটা বোধগম্য নয়। জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, এখনো আমরা থানা কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। তাই হয়তোবা তিনি (খসরু) আড়াইহাজার থানা বিএনপির সভাপতির পরিচয় দিচ্ছেন। তবে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে সম্পাদকের পদে থাকার পর যদি সভাপতির পরিচয় দিয়ে থাকেন সেটা মোটেও ঠিক করছেন না। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী “একনেতার একপদ”। এদিকে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও থানা বিএনপির সভাপতি দাবিদার এ এম বরুদজ্জামান খসরু বলেন, কমিটিতে আমি আছি এইটাই জানি আর বাকি খবরা খবর জানা নাই। একই সাথে কেন্দ্রীয় কমিটির  ধর্ম  বিষয়ক সম্পাদক ও আড়াইহাজার কমিটির সভাপতি এ  দুই পদে কিভাবে হাল থাকবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আড়াইহাজরের  সাধারণ জনগণ চায় আমি থানার নেতৃত্বে থাকি এবং দলের স্বার্থে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমি কেন্দ্রীয় কমিটির পদ ছাড়তে রাজি আছি। আমি  থানায় থাকতে চাই কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাওয়ার ইচ্ছা নাই। অনেকে বিএনপি করে সুযোগ সুবিধা নিয়ে আবার চলে যায়। দলের স্বার্থে আমি কাজ করি এবং ম্যডাম যা বলবে আমি তার স্বিদ্ধান্ত মেনে নেব। এ সময় তিনি বিএনপি নেতা সাবেক এমপি আঙ্গুরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তার রাজনৈতিক সহায়ত ছিলাম আমি তাকে এমপি বানিয়েছি আমি তার পরেও সে দলের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে। তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসতে পেরেছে তার মত বিশ্বাস ঘাতকদের হাত ধরেই। আমি সাধারন মানুসের পক্ষে রাজনীতি করি, আড়াইহাজারের মানুষ চায় তাই আমি তাদের সেবায় কাজ করবো।
এই বিভাগের আরো খবর