শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ত্বকী হত্যা পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড: গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২০  

 

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকা- বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা।
 

শনিবার (৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় ত্বকী হত্যার সাত বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার সাত বছর’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ মতামত দেন বক্তারা। ‘সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চে’র উদ্যোগে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। শুরুতে ত্বকী হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি ধারণাপত্র করেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালম আজাদ।
 

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও নিহত ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব হালিম আজাদের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মনিরুজ্জামান, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, সাবেক সচিব ও কবি শফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম.এম.আকাশ, সাংবাদিক গোলাম মোর্তজা।
 

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ত্বকীকে কেন হত্যা করা হলো, কারা হত্য করেছে, এ হত্যার তাৎপর্য কী সেগুলো আমরা ভাববো। আর বিচার কেন হলো না তার কারণ তো আমরা এখানে পাচ্ছি। ত্বকী একজন মেধাবান কিশোর, অত্যন্ত সচেতন সাংস্কৃতিক কর্মী। ত্বকীকে কেবল একজন কিশোর হিসেবে না দেখে দেশে বর্তমান ব্যবস্থায় কৈশোর কী অবস্থায় আছে, কতটা বিপন্নের মধ্যে আছে, কতটা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছে সেটা ভেবে দেখা দরকার। কাজেই ত্বকী আমদের জন্য প্রতীক। প্রতীক হচ্ছে তার কৈশোরের বিপন্ন দশার, তার অসহায়ত্বের, তাকে আমরা রক্ষা করতে পারিনি, বাঁচাতে পারিনি।
 

২০১১ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ত্বকীর বাবার সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ, গণপরিবহনে চাঁদাবজী ও ভাড়া কমানোর ভাড়া কমানোর আন্দোলন এবং ভূমি দখলের প্রতিবাদে জনগণের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে তার বাবার অপরাধে। ত্বকী হত্যাকাণ্ড একটা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড এবং এটা অত্যন্ত পরিষ্কার যে, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ক্ষমতাবানারা এর সঙ্গে জড়িত। ত্বকীকে হত্যা করে তারা তার পিতাকে শায়েস্তা করেত চেয়েছে। তার পিতার কাছে এ বাণী পাঠাতে চেয়েছে যে তুমি যে কাজ করছো তা আমদের পছন্দ নয়।
 

তিনি বলেন, ত্বকী হত্যার বিচারের জন্য একটা পদক্ষেপ নিয়ে শুধু একটা ত্বকীর মামলা ও বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের লক্ষ্য হবেনা। ত্বকীরা আরও মারা যাবে, একটার পর একটা আরও ঘটতে থাকবে। ত্বকীরা এখানে নিরাপদ নয়। ত্বকীরা এখানে বাঁচতে পারবেনা যদি না আমরা এ ব্যবস্থা বদলাতে না পারি।
 
 
 
মনিরুজ্জামান বলেন, ত্বকী হত্যা বাংলাদেশের ইতিহাস একটি মাইলস্টোন ঘটনা। আবার পরবর্তীতে এর বিচারও একটি মাইলস্টোন ঘটনা হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ত্বকী হত্যা খুব বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে আমি মনে করি না। খুব বেশি দিনের কথা নয় একটা সময় সংবাদে একটা লেখা বেড়িয়েছিল যে নারায়ণগঞ্জে যেতে হলে দোয়ায় উইনুস পড়ে যেতে হয়। কারণ ওখানে গিয়ে ফিরে আসতে পারবো কী-না সে আশঙ্কাটা সবসময় থাকে। আর আজকে বাংলাদেশে এমন অনেক নারায়ণগঞ্জ তৈরি হয়েছে। অনেক জেলায় আজকে দোয়ায় ইউনুস পড়ে যেতে হবে। এ অবস্থাটা এক দিনে হয়নি-আমাদের রাজনীতি অর্থনীতি সমাজ ডিভোস্ট হয়ে গেছে। ত্বকী হত্যা একটি রাজনৈতিক পরিণতি। আমরা একদিকে যেমন ত্বকী হত্যাকাণ্ডের আইনিভাবে মোকাবেলা করেবো এবং আমাদের আরেকটি কথা হচ্ছে রাজনীতিটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। যারা অপরাধ করে তাদের চেয়ে বেশি ক্ষতি করে যারা অপরাধ দেখে চুপ করে থাকে। কারণ তাদের এ চুপ করে থাকাটা আরও অনেক নতুন অপরাধের জন্ম দেয়। আমি মনে করি নারায়ণগঞ্জের বিষয়টা স্বার্থের কারণেই করছেনা। কারণ এখন যে রাজনীতি চলছে তা লাঠিয়াল বাহিনী না থাকলে সেটা হয় না।
 

প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বা বিচার হচ্ছেনা এ কথাটায় অত্যন্ত আবেগ আছে। আমরা একথাটা গতবছরও বলেছি যে, ত্বকী হত্যা মামলার চার্জশীট আদালত দিতে বলেছেন। কিন্তু না দিলে কী হবে সে বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নেয় দরকার এই গোলটেবিল বৈঠক থেকেই। যারা পিআইএল করেন আমি বলি যে, তাদেরকে দিয়ে আমরা একটা কমিটি করি। কীভাবে এটাকে উচ্চ আদালতে নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে কাজ করবে। মামলার বিষয়ে আমরা অনেক কিছু জানিনা। আমাদের এগুলো জানা দরকার। যে দুজন স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দী দিলেন তাদেরকে হাইকোর্ট কী শর্তে জামিন দিয়েছিল। সে জায়গাটা আমাদের আলোচনায় আসা দরকার। জামিন যদি এবইউজ হয়ে থাকে তাহলে তার প্রতিকারের জন্য আমাতেদর উচ্চ আদালতে যওয়া দরকার।
 

তিনি বলেন, এ মামলার চার্জশীটটা প্রিপেয়ার এবং রাষ্ট্র সেটা সরকারিভাবে ঘোষণা করেছে। খেয়াল করে দেখবেন যিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি চাকরিতে অত্যন্ত দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন। এবং সরকার কিন্তু বলেনি যে, ঐ চার্জশীট ভুল হয়েছিল। সুতরাং এ মামলার এসব ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কীভাবে অগ্রসর হতে হবে। বিষয়টি যদি উচ্চ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে যদি কোনো প্রতিকার না পাওয়া যায় তাহলে বার বার বিভিন্ন বেঞ্চের কাছে যাওয়া যায়। এখন আমরা যদি দাবি জানাই...নির্দেশের অপেক্ষায়; আমরাতো এ কাজগুলো এতদিন করে আসছি। যেহেতু এটা আর কাজ করছেনা তাই নতুন কী করা যায় তা ভাবতে হবে?
 
তিনি আরও বলেন, শুধু বললাম ত্বকী হত্যার বিচার চাই এরকমের একটা জায়গায় শেষ না করে এটাকে আমরা একটা বিদ্যমান আইন ব্যবস্থায় একটা বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে। এগুলোতে যদি একটা ইমিডিয়েট সুফল না পাওয়া যায় তাহলে এটা বারবার নিয়ে যাওয়া যাবে। তাতে আমরা যে নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি সেখানেও হয়তো একটা মনোজগতের পরিবর্তন আনার জন্য এ চেষ্টাগুলো ভূমিকা রাখতে পারে।
 
 

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, আমদের লিগ্যাল প্রসেসের মাধ্যমে ত্বকী হত্যার বিচারের চার্জশীট দেওয়ার জন্য বলা দরকার। আমদের সংবিধান সমস্ত জায়গায় সমস্ত ক্ষমতাগুলোতে কেন্দ্রীভূত করে এক ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করেছে। যা কিছু হয় তার সবকিছু হচ্ছে একজনের নির্দেশে। যিনি নির্বহী প্রধান তার মতামত ছাড়া কিছুই করার নেই। নিয়োগ দেওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুতেই তার পরামর্শ নিতে হয়। পরামর্শ মানে তার অনুমোদন নিতে হয়। এরকম একটি স্ট্রাকচার থাকা অবস্থায় অবশ্যই এরকম কথা আসার কথা যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই নির্দেশনা দেবেন (ত্বকী হত্যা মামলার) তদন্তটা যেন শেষ হয়।

 
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যা হচ্ছে সবগুলো আইনের নামে। কিন্তু এ আইনগুলো আইন কি-না। আমাদের সংবিধান আমাদের যেমন আমাদের মত প্রকাশের স্বধীনতা দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের লাঠি দিয়ে পেটানোর যে ব্যবস্থাগুলো হচ্ছে সেখান থেকে পার পেয়ে যাওয়ারও কিন্তু আইন আছে। সে যে আমাকে বেআইনীভেিব পেটালো আমি তাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারছিনা তুমি আমাকে মারছো কেনো একথাটা যে আমি বলতে পারছিনা সেটাও আইন।
 

মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ত্বকী হত্যা একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। এই হত্যার মধ্য দিয়ে আমরা দেশে যে একটি রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন চলছে আমরা সেটির প্রমাণ পাচ্ছি। ত্বকীসহ সাগর-রুনি, তনু হত্যার বিচারগুলো হচ্ছেনা। এখন এসব হত্যার প্রতিবাদে একটি বিশাল সার্কেল হয়ে গেছে। ত্বকীর বাবা শুধু ত্বকী হত্যারই বিচার চাচ্ছেনা। সব হত্যার বিচার চাচ্ছে এবং এ হত্যার বিচারের মধ্য দিয়ে গোটা দেশকে ওলট-পালট করে দেওয়া।
 

সাবেক সচিব ও কবি শফিকুল ইসলাম বলেন, ত্বকী যখন মারা যায় তখন মে আলোর দিকে যাচ্ছিল, পাঠাগারের দিকে যাচ্ছিল। ত্বকীর এ হত্যা কাকে ব্যথিত করেনি! সারা বিশ্বে যারা বাঙালি আছে তাদেরকেও ব্যথিত করেছে। এ বিচারটি না করলে সারা বিশ্বে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।
 

অধ্যাপক এম এম আকাশ বলে, ত্বকী হত্যার কেন বিচার করছেনা এ বিষয়টি আমাদের খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, তিনি ওসমান পরিবারের সঙ্গে থাকবেন। এ জন্য এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হবেনা। আসলে বিচার প্রক্রিয়া কোন জায়গায় গিয়ে আটকে গেছে সেটি আমরা বোঝার চেষ্টা করি। ত্বকী হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কর্মকর্তার অভিযোগপত্র আটকে আছে। অভিাযোগপত্র দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী যথাযত নির্দেশ দিবেন বলে আমরা দাবি করছি।
 

গোলাম মোর্তজা বলেন, শাসকের চরিত্র সারা পৃথিবীব্যাপী একই। যেটি দিয়ে তাদের স্বার্থ রক্ষিত হয় সেটি তারা করে, যেটি দিয়ে রক্ষিত হয়না বলে তার মনে করেন সে কাজগুলো তারা করেনা। আমাদের সমাজে যে অংশের কাছে প্রত্যাশা বেশি, যারা  স্রোতের প্রতিকূলে দাঁড়িয়ে সত্য বলবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে। কিন্তু আমরা যে সমাজে বসবাস করছি সে সমাজে সেই জায়গাটি আমরা বড় রকমের একটা ব্যত্যয় দেখছি, দুর্বলতা দেখছি।
 

তিনি বলেন, ত্বকী হত্যার বিচার যে হয়না এ ইস্যুটি যে এখনও আমাদের সামনে আসে এটির মূল কারণ ত্বকীর বাবার সন্তান হারনো। তার যে সারা জীবনের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড তার উপরে দাঁড়িয়ে শুধু তার ছেলে হত্যা নয়, অন্যায় অনিয়মের বিরদ্ধে, দানবীয় শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। তার সামর্থ্য অনুযায়ী তিনি সঙ্গে পেয়েছেন স্থানীয় কিছু মানুষ। সে কারণে তিনি মানুষের দ্বারে-দ্বারে ঘুরছেন, মানুষকে ডেকে আনছেন তার প্রেক্ষিতে কেউ কেউ এসে কিছু বলেছে। আর এ কারণে গণমাধ্যম বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসছে।
 

তিনি আরও বলেন, যার কাছে যাচ্ছেন তিনি কথা বলছেন। যার কাছে যাচ্ছেন না তিনি কথা বলছেন না। যারা প্রতিবাদ করবে সে জায়গা থেকে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। যারা প্রতিবাদ করছেন না, নিজের জায়গায় বসে তারা নিজের ক্ষতি না করে দেশ এবং জনগণের ক্ষতি করছেন। অন্যায় দেখছেন কিন্ত নীরব থাকছেন। যারা কথা বলছেননা তোষামোদী করছেন, যিনি তোষামোদী করছেন না কিন্তু নীরব থাকছেন তাহলে ইতিহাস আপনাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবে। ইতিহাস আপনাকে তোষামোদকারী এবং দালাল হিসেবে স্বীকৃতি দিবে। তাই আমরা যে জায়গায় আছি সে জায়গা থেকে আমদের প্রতিবাদ করে যেতে হবে।
 
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, সাবেক সভাপতি জাহিদুল হক দীপু, জিয়াউল ইসলাম কাজল, সহসভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমিত রায়, ন্যাপ জেলার সাধারণ সম্পাদক এড.আওলাদ হোসেন, বাসদ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, খেলাঘর নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক ফারুক মহসিন, উদীচী নারায়ণগঞ্জ জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক পলাশ দে, প্রথম আলো বন্ধুসভা নারায়ণগঞ্জের সভাপতি রাসেল আদিত্য প্রমুখ।

এই বিভাগের আরো খবর