শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ট্রেন আসে-যায়, লেভেল ক্রসিংয়ে নেই গেটম্যান : দুর্ঘটনার আশঙ্কা

প্রকাশিত: ৮ জানুয়ারি ২০২০  

জহিরুল হক (যুগের চিন্তা ২৪) : ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ যোগাযোগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রেলপথের বিভিন্ন জায়গায় ক্রসিং এ গেটম্যান না থাকায় মানুষ ও যানবাহনের জন্য রেলপথটি ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার নগরীর উকিলপাড়া, বালুরমাঠ ইসদাইর, ফতুল্লা, পাগলা, শ্যামপুর, গেন্ডরিয়া এলাকার রেলপথের ওপর দিয়ে যাওয়া সড়ক পথের লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান না থাকায় এসব ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিভিন্ন যানবাহন। 

 

একইসঙ্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীসহ সবশ্রেণিপেশার মানুষ এসব লেভেল ক্রসিং এর মাধ্যমেই পারাপার হচ্ছে। গেটম্যান না থাকায় এসব লেভেল ক্রসিং এ যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকায় রয়েছে মানুষ।

 

সরেজমিনে শহরের উকিলপাড়া, ইসদাইর ও বালুরমাঠ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রেলক্রসিং থাকলেও সেখানে কোন গেটম্যানের উপস্থিতি দেখা যায় নাই। এলাকাবসী জানান, নপশ্চিম পাশের লেভেল ক্রসিং পাইপ নষ্ট হয়ে গেছে। পূর্ব পাশেরটি ভালো আছে কিন্তু ট্রেন আসার আগে গেটম্যানকে নামাতে দেখা যায় নাই। একই অবস্থা, বালুর মাঠ এলাকায় গিয়েও। স্থানীয় বাসিন্দা রূপ মিয়া জানান, রেলওয়ের থেকে গেটম্যান না দেয়ায় এলাকাবাসী নিজেদের অর্থয়ানে দুই জন গেটম্যান রাখেন। এরা দুই জন দুই ভাগে সময় দিয়ে থাকে।

 

উকিলপাড়ায় কিছুদিন আগে লেভেল ক্রসিংয়ে ‘এই লেভেল ক্রসিং গেটে গেটম্যান নাই, নিজ দায়িত্বে ও সাবধানে লেভেল ক্রসিং পারাপার হইবেন’ লেখা সাইনবোর্ড দেখা গেলেও এখন সেটি নেই। ফলে বোঝার উপায় নেই ট্রেন কখন আসছে। অধিকাংশ লেভেল ক্রসিংয়ে কোনো ধরনের নিরাপত্তা গেট বা এ জাতীয় কোনো সাইনবোর্ডও নেই। এসব এলাকায় নিরাপত্তাজনিত কোনো ধরনের বাতিও নেই। 

 

বিশেষ করে গলাচিপা, বালুরমাঠ এলাকায় লেভেল ক্রসিংয়ে বড় ধরনের বাঁক থাকায় ট্রেন আসছে কিনা সংকেত পাওয়া যায় না। ফলে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে এখানে। গতবছর অক্টোবরে এখানেই একজন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। ট্রেন-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনাও ঘটেছে।  ডেমো ট্রেনের আসার সংকেতও দূর থেকে পাওয়া যায়না। শীত মৌসুমে কুয়াশার কারণে আরও বেশি সমস্যায় পড়তে হয় যাতায়াতকারীদের।

 

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক বিকাশ সরকার বলেন, লেভেল ক্রসিংয়ে সিগন্যাল বার ও গেটম্যান নেই। বেশ কয়েকবার এখানে ট্রেনের সঙ্গে যানবাহনের ধাক্কা লেগেছে। এখানে রেলপথে বাঁক থাকায় ট্রেন আসছে কিনা তাও দেখা যায় না। ট্রেন না দেখেই যানবাহন পারাপার হতে গিয়ে প্রতিনিত দুর্ঘটনা ঘটছে।

 

অনেক সময় দেখা যায় অসেচতনা মধ্য দিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে পার হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় পাস দিয়ে ট্রেন আসছে তার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অনেকে আবার দৌঁড়ে ছুটাছুটি করছে পারাপারের জন্য।


এক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠে মানুষকে সজাগ করে তুলতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। এলাকাবাসীর দাবি, রেললাইন সংলগ্ন প্রতিটি রাস্তায় যাতে গেটম্যান দেয়ার ব্যবস্থা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যাতে সেখানে ট্রেন আসার কোন ধরণের সংকেত পায় মানুষ।

 

নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনের রেলমাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, ‘গলাচিপা ছাড়া নগরীর নন্দিপাড়া থেকে বালুরমাঠসহ আর যেকটি রেলক্রসিং আছে তার সবগুলোই অবৈধ। এগুলোর দায়দায়িত্ব আমাদের নয়। এলাকাবাসী নিজেরাই রাস্তা তৈরি করে নিয়েছে। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় দায়ও আমাদের না।’

এই বিভাগের আরো খবর