শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঢাকা-৫ আসনে প্রার্থীর ছড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২০  

ছবি: সংগৃহিত

ছবি: সংগৃহিত

মুহম্মদ আকবর: ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী ও আংশিক কদমতলী) আসনের এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুর এক সপ্তাহ পার হতে না হতেই উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে প্রচার চালাচ্ছেন একঝাঁক নেতা। করোনার মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায়দের খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালেও জানান দিচ্ছেন নিজেদের আকাক্সক্ষার কথা। আর তাদের সমর্থকরা নেমেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে, নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করে চালাচ্ছেন জোর প্রচার। আওয়ামী লীগের নেতাদের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন ১৪ দল ও মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাপা) কেউ কেউও নিজেকে যোগ্য প্রার্থী মনে করে অবস্থান জানান দিচ্ছেন।


আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে সাবেক সাংসদ প্রয়াত হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল, সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান মাসুদ, সিনিয়র সহসভাপতি ও আমুলিয়া মডেল টাউনের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান (আতিক), যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। একমাত্র নারী হিসেবে আছেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও শহীদ শেখ কামালের স্ত্রী শহীদ সুলতানা কামালের ভাতিজি নেহরীন মোস্তফা দিশি। এ ছাড়া জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুর সবুর আসুদ, ১৪ দলের শরিক জাসদের সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগরের (পূর্ব) সভাপতি শহীদুল ইসলাম বিগত দিনের মতোই প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ দুজন মনে করেন, দীর্ঘদিন এলাকার মানুষের পাশে থাকার কারণে তাদের জনপ্রিয়তা বেশি।


শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এলাকার মানুষের সঙ্গে সুখে-দুঃখে আছি বলেই তারা আমাকে ভালোবাসেন। তাই ১৪ দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে আমার বিশ্বাস।’ আবদুস সবুর আসুদ বলেন, ‘আমার বাবা এ এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছেন। বাবার পথ ধরে পল্লীবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমান সংকটেও আমি আমাদের দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নির্দেশে কাজ করছি। সুতরাং এ এলাকার জন্য আমিই যোগ্য প্রার্থী।’


আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা সবাই আশায় বুক বেঁধে আছেন। প্রত্যেকেই নিজেকে ঢাকা-৫ আসনের যোগ্য হিসেবে মনে করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষেই কাজ করবেন বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা। অন্যদিকে নারী প্রার্থী নেহরীন মোস্তফা দিশি মনে করেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী দিনের যে বাংলাদেশের কথা ভেবে সামনে এগোচ্ছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেনÑ সেখানে আমি যোগ্য একজন প্রার্থী।’ ঢাকার অন্য আসন থেকে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও দৃশ্যমান উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা এ এলাকাটিকে সামনে নিয়ে যেতে কাজ করতে চান বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


অন্যদিকে আতিকুর রহমান আতিক মনে করেন, বংশানুক্রমে এ এলাকার উন্নয়নে তারা কাজ করে চলছেন। বিভিন্ন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। তার পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা বিবেচনায় এনে আওয়ামী লীগ তাকেই মনোনয়ন দিবে বলে মনে করেন ত্যাগী এ নেতা। হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল জানান, তার প্রয়াত বাবার রাজনৈতিক আদর্শের কথা ভেবে তিনি রাজনীতি করেন। এলাকার মানুষের সঙ্গে তার বোঝাপড়া ভালো। সে বিবেচনায় তিনি মনোনয়ন পেতে পারেন।


যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না জানান, দেশের নানা সংকটেও তিনি রাজনীতি ছাড়েননি। বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় তৎকালীন সরকারের জেল, জুলুম ও অত্যাচার সহ্য করেছেন। বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। তাই এবার আওয়ামী লীগের টিকিট মনোনয়ন তিনিই পাবেন বলে আশায় বুক বেঁধে আছেন।


ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনের সময় যেসব ছাত্রলীগ নেতা সামনের কাতারে ছিলেন আমি তাদের অন্যতম। নেত্রী মুক্তি আন্দোলন করতে গিয়ে অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। তা ছাড়া ছোটবেলা থেকেই দনিয়ার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে যুক্ত থাকায় এ এলাকার মানুষের সঙ্গে আমার নিবীড় সখ্যতা। সে অধিকার থেকেই দলীয় মনোনয়ন চাইছি।’


মাতুয়াইল, ডেমরা, সারুলিয়া ও দনিয়া ইউনিয়ন এবং মোট ১৪টি সিটি ওয়ার্ড (৬০ নম্বর থেকে ৭০ নম্বর এবং ৪৮, ৪৯ ও ৫০ নম্বর) নিয়ে ঢাকা-৫ আসান। ভোটার সংখ্যা ৪ লক্ষাধিক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান মোল্লা। গত ৬ মে তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। (সূত্র: দৈনিক আমাদের সময়)

এই বিভাগের আরো খবর