শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

২৫০০ টাকা হলে হাটের সবেচেয়ে বড় গরুটা কেনা যেত : হালিম আজাদ

প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ঈদ মানেই অন্য রকম এক মিলন মেলা। শত ব্যস্ততার মাঝে ঈদ উৎসবে আনন্দের কমতি নেই। ঈদের আমেজ অন্যান্য কাজ এখন নিতান্ত গৌণ। 

আর তাই এ আনন্দকে দ্বিগুন করতে যুগের চিন্তা ২৪’এর পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে ঈদুল আজহার বিশেষ সাক্ষাৎকারের। ঈদুল আজহার এবারের সাক্ষাৎকারের আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কবি হালিম আজাদ। 

ঈদুল আজহার উদযাপন, কোরবানির পশু কেনা, কোরবানীর তাৎপর্য, শৈশবের কোববানির ঈদ ও নানা স্মৃতি, রাজনৈতিক প্রস্তুতিহ নানা বিষয়ে নিয়ে কথা হয় তাঁর সাথে।  

কথপোকথনে এবারের ঈদুল আজহা উদযাপন কোথায় করবেন জানতে চাইলে কবি হালিম আজাদ বলেন, ‘আমি ঈদ উদযাপন করি নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকায় দুই জায়গায়। এবারও তাই করবো। ঈদের আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা করতে নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লার বক্তাবলির বাড়িতে যাব।

ঈদুল আজহায়  সারাদিনের ব্যস্ততা নিয়ে তিনি বলেন, ঈদে সকাল বেলা ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে আসবো। বাব-মায়ের কবর জিয়ারত করবো। তারপর নিজ বাড়িতে যাব আত্মীয় স্বজন,বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেখা করবো।

কোরাবানি ঈদের গরু কেনা নিয়ে তিনি জানান,  গরুর দাম এবার বেশি। তাই একটু  দেরি করেই গরু কেনা হয়েছে।

ছোটবেলায় কোরবানির ঈদ উদযাপন হাঁটে যাওয়ার স্মৃতিচারণ করে  কবি হালিম আজাদ বলেন, ছোটবেলায়ই তো বাবা মারা যায় তাই বাবার হাত ধরে গরুর হাঁটে যাওয়ার স্মৃতিগুলো আমার তত স্পষ্ট নয়। তবে বড় ভাইয়েদের সাথে ঈদে হাঁটে যেতাম। ঐ সময় ফতুল্লায় নারায়ণঞ্জে সবচেয়ে বড় হাট বসতো। 
আমরা বন্ধুরা মিলে প্রায় সময়ই হাঁটে যেতাম।  তবে একটা মজার ব্যাপার ছিল যা এ সময়ে এসে উপলদ্ধি করি যে সে সময় গরুর দাম ছিলো খুব কম। মাত্র ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা হলে হাটের সবেচেয়ে বড় গরুটা কেনা যেত।  

যতবড়ই হোক না কেন ঐ গরুর দাম ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে ছিলো। কিন্তু এখন তো তা হয় না। এখন ঐ গরুই আমরা কিনি দেড় দুই লাখ  থেকে ২০ লক্ষ ৩০ লক্ষ টাকায়ও। 

তবে এখনতো শুধু গরু নয় সকল প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেশি। আগের চেয়ে জীবনযাত্রারমান অনেকাংশে বেড়ে গেছে। এক প্লেট ভাত খেতেই লাগে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
 
ছোটবেলার ঈদ উৎসবে শৈশবের আনন্দময় সময়গুলোর মত এখন ঈদগুলো সেভাবে উপভোগ করেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আগের মত কখনওই ঈদ উপভোগ করা সম্ভব না। শুধূমাত্র আমার ক্ষেত্রে না সবার ক্ষেত্রেই একই পরিবর্তণ আসবে বলে  হবে বলে আমার মনে হয়। 

আগে ছোটবেলায় যখন পাড়া, আত্মীয়স্বজনদেও বাসায় ঘুরে বেড়াতাম তখন সবাই উপহার দিত। খুব ভালো লাগতো। কেউ চারআনা কেউ আট আনা করে দিত। আর একটাকা দিলেতো কথাই নেই। 

কোথায় কিভাবে খরচ করবো সে চিন্তা করেই দিন কেটে যেত। ঈদ আসলেই আমরা বন্ধুরা একসাথে ঘুরে বেড়াতাম। তবে এখন আর সম্ভব না। সময়ের সাথে সাথে বয়সের সাথে সাথে অনুভূতির ও পরিবর্তন হয়।

ঈদেও  গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে  তিনি বলেন, আমার ২৫ বছর যাবৎ শারিরীক অসুস্থতার কারণে মন ভরে গরুর মাংস খেতে পারি না। খেলেও আর কী দু’এক টুকরো খাই। আর খুব বেশি হলে  ঝরা মাংস হলে একটু খাওয়া হয়। এর চেয়ে বেশি খাওয়া ডাক্তারের বারণ আছে।

ঈদুল আজহা বা কোরবানীর ঈদে শিক্ষণীয় বিষয়  ও তাৎপর্য নিয়ে তিনি বলেন,  কোরাবানি ঈদের মূল উদ্দেশ্যে হল ত্যাগ। এ দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সকলের নিজেদেও মনের কালিমা পশু  কোরাবনির মধ্যে দিয়ে হত্যা করে। 

তবে মূল তাৎপর্য এটা হলেও আমার মতে ঈদ মানে যে শুধু মুসলামনদেও জন্য তা কিন্তু তা নয়। এখন আমরা পুজাপার্বনে ঈদ উৎসবে সবাই একসাথে হই। এটাও কিন্তু ঈদ উৎসব বা যেকোনো উৎসবের মহাত্ম।  

ঈদ শুভেচ্ছায় যুগের চিন্তা পরিবারসহ সকল নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে  কবিি আজাদ বলেন, সবাই শান্তিপূর্ণভাবে এবং সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করুক। এটাই কামনা। সবাইকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
 

এই বিভাগের আরো খবর