শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

২০২০ সালে উদ্বোধন হচ্ছে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : দেশের প্রশস্থ সেতুর মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জের সৈয়দপুর-মদনগঞ্জ এলাকায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই। শীতলক্ষ্যা নদীতে পিলার স্থাপনের কাজ শেষ দিকে। চলছে স্প্যান বসানোর কাজ। সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটগামী যানবাহনের অনেক কম সময় লাগবে। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জের সাথে বন্দর, সোনারগাঁওসহ উত্তর অঞ্চলের যোগাযোগ সহজ হবে। নির্ধারিত সময়েই নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। 

সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী নির্মাণ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। সৌদি উন্নয়ন তহবিল ও বাংলাদেশ সরকার যৌথ অর্থায়নে ১২৫৩ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৮ দশমিক ৮৩  কোটি টাকা। ছয়লেনে ২২ দশমিক ১৫ মিটার প্রশস্থ ৩৮টি স্প্যানবিশিষ্ট সেতুর নির্মাণ চুক্তি হয় ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি যা শেষ হবে ২০২০ সালে। সেতুর সংযোগ সড়ক হবে ২১৩০ মিটার। আর সেতু নির্মাণ কাজের ঠিকাদার সাইনিড্রো করপোরেশন লিমিটেড চায়না। সেতুর নির্মাণ কাজও প্রায় ৬৫ ভাগ শেষ হয়েছে। শীতলক্ষ্যার এ সেতু নারায়ণগঞ্জ সদরের সাথে বন্দরের সংযোগ হয়ে যানবাহন যাতায়াত সহজ হবে এবং প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ কমবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাথে

ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে যানবাহন সরাসরি যাতায়াত করবে। এতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে যানবাহনের চাপ কমে যানজট নিরসন হবে।
শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান জানান, দেশের প্রশস্থ সেতুর মধ্যে এ সেতুটি অন্যতম জানিয়ে সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান মাসুদ বলেন, ৬ লেন’র সেতুতে চার লেন দ্রুতগামী যানবাহন চলাচল করবে আর দুই লেন থাকবে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য। এছাড়াও সেতু’র উভয় পাশে ফুটপাথ থাকবে।

এদিকে শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতু চালু হলে যানবাহনের রাস্তা কমে সময় অনেক কম লাগবে বলে জানান চালকরা। তারা জানান, ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটগামী যানবাহনকে এখন ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কে পঞ্চবটি, পাগলা ও যাত্রাবাড়ি ঘুরে যেতে হয়। শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতু চালু হলে যানবাহনের রাস্তা কমে সময় অনেক কম লাগবে বলে জানান চালকরা। 

 

স্থানীয়রা জানান, শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতুর কাজ শুরু হওয়ার পরপরই এই সেতুর আশেপাশের এলাকার জায়গার দাম বাড়ছে। সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলে  এই এলাকার জীবনমান অনেক পরিবর্তিত হয়ে যাবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও আসবে আমূল পরিবর্তন। 

স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, শীতলক্ষ্যা নদীতে পিলার স্থাপনের কাজ শেষ দিকে স্প্যান বসানোর কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে নারায়ণগঞ্জের সাথে বন্দর, সোনারগাঁও, রূপগঞ্জসহ উত্তর অঞ্চলের যোগাযোগ সহজ হবে এবং আশপাশের জমি দাম বৃদ্ধিসহ জীবনযাপনের মান বাড়বে। 

 

তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু প্রকল্প পরিচালক শোয়েব আহমেদ জানান,  চুক্তিমতে পুরো সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই। নির্ধারিত সময়েই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে বাধা সৃষ্টি হওয়ার মত নীচের অংশের কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে বলেন, ৬৫ ভাগ কাজ হয়ে গেছে। 

 

বিগত জোট সরকারের শেষের দিকে সেতু নির্মাণের কোনও সম্ভাব্যতা যাচাই না করেই ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শহরের নবীগঞ্জ খেয়াঘাট এলাকায় সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর করলেও সেটা ছিল নিছক নির্বাচনী প্রচারণা। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদও সেতুর আশ্বাস দিয়েছিলেন। ২০১১ সালের ২০ মার্চ নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ এলাকায় তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্রুত সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। বর্তমানে মদনগঞ্জ পয়েন্টে সেতু নির্মাণের কাজ চলছে।
 

এই বিভাগের আরো খবর