শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

স্পট শিবু মার্কেট : আজাদের রক্তে সড়ক রঞ্জিত হলেও নিরসন হয়নি যানজট

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ফতুল্লার শিবু মার্কেটÑপোস্ট অফিস সড়কে যানজট নিত্য হয়ে দাড়িয়েছে। আর এ কারনেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোডের শিবু মার্কেট এলাকা যানবাহনে অতিক্রম করতে দেড়-দুই ঘন্টারও বেশী সময় গাড়িতে বসে থাকতে হয়। 


এ সড়কে মানুষের ভোগান্তি সারাদিন লেগে থাকলেও যানযট থেকে উত্তরণে নেই কোন ধরনের ব্যবস্থা। এ সড়কের যানজট নিরসন করতে গিয়ে গত বছরের ২৫ শে জুলাই পোস্ট অফিস থেকে শিবু মার্কেট হয়ে লিংকরোডে উঠার সময় কাভার্ড ভ্যানকে থামতে সিগন্যাল দেন ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই আবুল কালাম আজাদ (৫৫)। 


কিন্তু কাভার্ড ভ্যানের চালক সিগনাল না মেনে তাকে ধাক্কা দিয়েই লিংকরোডে উঠে যায়। কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় তাঁর মাথায় মারাত্বক আঘাত লাগে। সাথে সাথেই তার রক্তে রঞ্জিত হয় পুরো সড়ক। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ ঘটনার পর থেকে কিছুদিন সড়কে যানজট নিরসন হলে ফের পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে।  


মূলত শিবু মার্কেটÑপোস্ট অফিস সড়কটি ওয়ানওয়ে হলেও নিয়মণীতির তোয়াক্কা না করে পোস্টঅফিস থেকে শিবুমার্কেটে সড়ক হয়ে ভারী যানবাহন গুলো লিংকরোডে আসে। আর এর ফলেই যানজটের তীব্রতা আরো বেড়ে যায় বলে দাবি করছে এলাকাবাসী। তারা বলছেন যানজট নিরসন করতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশের রক্তে সড়কটি রঞ্জিত হলেও এ সমস্যার কোন সমাধান হয়নি।


বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সরজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোডের শিবু মার্কেট এলাকা সড়ক জুড়ে কাভার্ড ভ্যান, ট্রাকের লম্বা লাইন। যানযটে যাত্রীরা বসে আছে। অথচ পোস্ট অফিস থেকে শিবুমার্কেটে কাভার্ডভ্যান,  ট্রাকসহ ছোট বড় গাড়ি চলছে। এ সড়কে দুইটি ভারী যানবাহন যাতায়াতের ব্যবস্থা না থাকলেও অবাধে চলছে।

এসব গাড়িগুলো শিবু মার্কেটে লিংকরোড সড়কে উঠতেই দুই পাশ থেকে গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। ফলে শিবু মার্কেটÑপোস্ট অফিস সড়কসহ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোডে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘযানজট। 


অন্যদিকে দেখা যায়, সড়কের উপরেই কার্ভাড ভ্যান পার্ক করে মালামাল উঠানামা করা হচ্ছে। ঘন্টা-আধাঘন্টা সময় গাড়ি এইভাবে পার্ক করে রাখঅঘন্টা-আধাঘন্টা সময় গাড়ি এইভাবে পার্ক করে রাখা হয়। এই সকল বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানযট। 


যানযটে থাকা যাত্রীদের চেহারায় বিরক্তির ছাপ। যাত্রীদের কর্মঘন্টা নষ্ট হলেও যেন তাদের করার কিছু নেই। শিক্ষক ঈমান আলী। অটো থেকে নেমে সামনে ট্রাকের ড্রাইভারদের সাথে কথা বলছে। এই রাস্তায় কি দুটো ট্রাক চালনো যায়। আপনারা কিভাবে এই রাস্তায় মধ্যে এইভাবে ট্রাক নিয়ে ঢুকে পড়েন। 


ট্রাক ড্রাইভার থেকে কোন উত্তর না পাওয়ায় আবার এসে বসে পড়লেন। তিনি যুগের চিন্তা ২৪ এর প্রতিবেদকে বলেন, আমি আমার ছাত্রদের পড়াতে যাবো বেলা ১২ টায়। এখন বাজে সাড়ে ১২টা। এটা কোন প্রধান সড়ক না। এরপরেও এতো যানযটের কোন মানে হয় না।  


দাপাইদ্রাকপুর এলাকার বাসিন্ধা মো. ইয়াসিন বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা উঠাবো। এখান থেকে টাকা উঠায় আবার মেয়ে স্কুলে যাবো বেতন দেওয়ার জন্য। এতো দেরী হচ্ছে । মনে হয়না আজকে আর বেতন দিতে যেতে পারব। মাঝখানে একজন ট্রাফিক পুলিশ মারা গেল। তখন কয়েকদিন যানযট কম ছিল। মাস খানেক না যেতেই আবার একই অবস্থায় যানযট লেগে আছে।  


শিবু মার্কেট এরাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তোফায়েল আহমেদ বলেন, এই সড়কে যানযট এখন একটু বেশি হচ্ছে। দিনের সময় আগে গাড়ি কমই থাকত সড়কে । ফতুল্লার খান সাহেব ওসমানী স্টেডিয়াম এই সড়কে কাজ করছে। একটা সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সড়কে যানযট বেড়ে গেছে।

এছাড়া আমরা গাড়ির চালকের উপর মামলা করছি প্রতিদিনই। কাভার্ড ভ্যান সহ অন্যান্য বড় গাড়ি গুলো চাষাড়া হয়ে লিংক রোডের দিকে যাবে। পোস্ট অফিস  থেকে লিংক রোডে গাড়ি যেন না আসে আমরা দ্রুত সেই ব্যবস্থা গ্রহন করব।
 

এই বিভাগের আরো খবর