বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সোনারগাঁয়ে মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পারাপার

প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

জহিরুল হক (যুগের চিন্তা ২৪) : ‘কিছুটা হাঁটলেই ফুটওভারব্রিজ। কিন্তু তা রেখেই সড়ক বিভাজক ডেঙিয়ে ঝুঁকি নিয়েই মহাসড়ক পারাপারে ব্যস্ত সাধারণ মানুষ। যাতায়াতের সুবিদ্ধার্থে  সড়ক বিভাজক সরিয়ে বিভাজকের ওপরে নেট (জাল জাতীয়) কেটে তৈরী করা হয়েছে ‘ফটক’ও।


দৃশ্যটি নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁয়ের মোগারাপাড়া এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের। শুধু পথচারী নয় এ পথে চলাচল করছে যানবাহনও। স্থানীয়দের অভিযোগ, সোনারগাঁও উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফুট ওভারব্রিজ রয়েছে মাত্র একটি। এ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে হলে অনেকটা হেঁটে তারপর যেতে। ততক্ষণে সড়ক পার হওয়া যায়।


প্রতিদিন  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া এলাকা হয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করে।  কয়েক বছর আগে মহাসড়ক চার লেন হওয়ার পর চলাচলকারী গাড়ির গতিও বেড়ে গেছে। 


এতে দূরের যাত্রীরা উপকৃত হলেও ঝুঁকি বেড়েছে উপজেলার মহাসড়ক সংলগ্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার অর্ধলাখ শিক্ষার্থী এবং সড়কের আশপাশে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের   মালিক-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষের। কারণ, সড়কে এত বেশি যানবাহন চলাচল করে যা এড়িয়ে পারাপার খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।


গণমাধ্যম হতে সংগৃহীত তথ্যানুসারে, গত ৮ মাসে নারায়ণগঞ্জে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪৯ জন। জানুয়ারী মাসে সড়ক দূর্ঘটনায় ৮, ফেব্রুয়ারীতে ৮, মার্চে ৭, এপ্রিলে ৬ , মে ৫ , জুনে ১০, জুলাইয়ে ৫, এবং আগস্টে  ১০ জনের মৃত্যু হয়।এর মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের।


সরেজমিন দেখা যায়, যেখানে ফুট ওভারব্রিজ স্থাপন করা হয়েছে সেখানেই রয়েছে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। 


ফলে এগুলোতেই নিয়মিত সাধারণ মানুষ পারাপার হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। ফুট ওভারব্রিজ থাকলেও হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ তা  ব্যবহার করছে। অধিকাংশ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার করছে। একদিকে ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার অন্যদিকে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত মোগড়াপাড়া ফুটওভার ব্রিজটির ওঠার অংশটি হকারদের দখলে।


ফুটওভারব্রিজ থাকা সত্ত্বে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপারের বিষয়ে জানতে চাইলে সোনারগাঁও মোগড়াপাড়া এলাকার মজিদ মিয়া জানান, সড়ক পাড় হতে ব্রিজের থেকে এখান দিয়েই সুবিধা। তাই  সবসময় এখান দিয়েই পার হই। সমস্যা হয় না একটু সাবধানে পার হলেই হয়। 
তাছাড়া এ উপজেলায় সড়ক পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ একটাই। এ ব্রিজ ব্যবহার করতে হলে অনেকটাসময় হাঁটতে হয়। সে সময় হাঁটতে এর চেয়ে অর্ধেক সময়ে এখান দিয়ে পার হওয়া সম্ভব।


সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও নয়াপুর এলাকার মিনারুল ইসলাম বলেন, লক্ষ করে দেখুন ফুট ওভারব্রিজটি আমাদের কলেজ থেকে অনেকটা দূরে। সেখানে পৌঁছানোর আগেই আমরা মহাসড়ক পারপার হতে পারছি। তাহলে এতদূর যাব কেন? 
এলাকাবাসীর মতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অধিকাংশ দুর্ঘটনাই ঘটছে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপারের সময়। এর মধ্যে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ রয়েছে।


এ বিষয়ে এলাকার সমাজপতিরা বলেন, এভাবে ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার বন্ধ করতে হলে জনসচেতনা তৈরী করতে করতে হবে। আর এর জন্য বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষকে বিভিন্নভাবে জনসচেতনা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এর আগেও একাধিকবার মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক পারাপার জনসেচতন করা হয়। 
 

এই বিভাগের আরো খবর