বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

সোনারগাঁ বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়নি

প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

সোনারগাঁ (যুগের চিন্তা ২৪) : সোনারগাঁয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে লাল মিয়া (৬৫) নামের এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ভূমিদস্যু হাজী আনোয়ার বাহিনী। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার ললাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আব্দুস সামাদ ও তার ছেলে মহিউদ্দিনকে আটক করেছে। তবে হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারনে থানায় কোন মামলা হয়নি।  

পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, উপজেলার ললাটি গ্রামে ১৯ শতাংশ বসতবাড়ি নিয়ে খোরশেদ মিয়ার সাথে তার প্রতিবেশী আব্দুস সামাদের বিরোধ চলছিল। আদালতে মামলা থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি আব্দুস সামাদ ওই জমি উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে হাজী আনোয়ারের কাছে বিক্রি করে দেয়।

 বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজী আনোয়ার আব্দুস সামাদ ও তার ছেলে মহিউদ্দিনের উপস্থিতিতে বন্দরের মুরাদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী হাবিবুল্লাহ, মিঠু ও আলামিন সহ একদল ভাড়াটিয়া স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে ওই জমিতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে তা দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় হট্টগোল শুনে খোরশেদ মিয়ার ফুপা লাল মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে জমি দখলে বাধা দেয়। 

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী হাজী আনোয়ার লাল মিয়ার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি মারা যান। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এসময় সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসে এলাকাবাসী আগুন লাগিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আব্দুস সামাদ ও তার ছেলে মহিউদ্দিনকে আটক করে। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, হাজী আনোয়ার নিজেকে সোনারগাঁয়ের সংসদ সদস্যের নাতি এবং ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, নারায়ণগঞ্জের এসপি ও এএসপি (খ-সার্কেল) এর ঘনিষ্ঠ লোক বলে পরিচয় দিয়ে গত ৫ বছর যাবত ভূমিদস্যুতা সহ নানা অপকর্ম করে আসছে। 

এছাড়া সে নিজেকে দেশের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর ছেলে বন্ধু বলেও পরিচয় দেয়। মালয়েশিয়ায় আদম পাচারকারী হাজী আনোয়ারের সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্যের রক্তের কোন সম্পর্ক নেই। 

২০১৪ সালে তিনি প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর হাজী আনোয়ার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে স্বঘোষিত নাতি বনে যায়। এছাড়া সে নিজের কুকর্মের স্বার্থে বিভিন্ন সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে থাকে। 

তার এসব কুর্কীতির কারনে এমপি মহোদয় তাকে দূরে সরিয়ে দেয়। কিন্তু এরপরেও থেমে থাকেনি তার অপকর্ম।  

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান হত্যাকান্ডের বিষয়ে বলেন, এ ঘটনার পরপরই দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় অবশ্যই মামলা হবে। নিহতের আত্মীয়স্বজনরা লাশ দাফন করে থানায় আসবে বলেছে। 

এই বিভাগের আরো খবর