শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

সেলিম ওসমানের স্ত্রী-কন্যার ২ কোটি টাকার অনুদান ঘোষণা

প্রকাশিত: ১০ জুন ২০১৯  

যুগের চিন্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপি সেলিম ওসমানের কোটি কোটি টাকা অনুদান প্রদানের কথা সবার মুখে মুখে। তাঁর সহধর্মিনী মিসেস নাসরিন ওসমান জীবনে একসাথে পথচলার পাশাপাশি সংসদ সদস্য হিসেবে জনগণের সেবার পথেও স্বামীর পথ অনুসরণ করেছেন। নাসরিন ওসমান নিজেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বামী মত দান করেন দু’হাত ভরে। 

 

তাদের দেখানো পথ একইভাবে অনুসরণ করলেন তাদের কনিষ্ঠ কন্যা অন্যন্যা শারমিন। বাবা মায়ের মত তিনিও নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ১ কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি স্কুলটির উন্নয়নে মিসেস নাসরিন ওসমান ঘোষণা করেছেন আরও ১ কোটি টাকা অনুদান। দু’জনে পর্যায়ক্রমে ঘোষিত এ অনুদানের অর্থ প্রদান করবেন। এর আগে এমপি সেলিম ওসমান ব্যক্তিগত তহবিল থেকে স্কুলটি অন্যত্র স্থানান্তরে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করে দিয়েছেন। 

 

এমপি সেলিম ওসমানের উন্নয়ন কাজে সহযোগীতা করতে অনেক আগে থেকেই তাঁর বিভিন্ন সভা সমাবেশে মিসেস নাসরিনের সবর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু সেলিম ওসমান দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার প্রথমবারের মত সোমবার (১০ জুন) নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এ অনুদানের ঘোষণা দেন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুষ্ঠানে সেলিম ওসমান স্বভাব সুলভ উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মঞ্চে ডেকে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান সমস্যা এবং চাহিদা সম্পর্কে জানতে চান।

 

এ সময় স্কুলের কয়েকজন বর্তমান এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। তাদের বক্তব্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরকারিকরণ, লাইব্রেরী স্থাপন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কমনরুম, আধুনিক সাইন্সল্যাব, মেয়েদের বিনা খরচে লেখাপড়ার সুযোগ এবং ফ্রি ক্যারিয়ার ক্লাব নির্মাণের বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আগামী ৩ বছরের আগে যেন স্কুলটি সরকারিকরণের কথা চিন্তা না করা হয়। কারণ স্কুলগুলো সরকারিকরণ হয়ে গেলে সেখানে আর স্থানীয় লোকজনের কিছু করার থাকেনা। স্কুলের উন্নয়নের অগ্রগতি অনেক স্তম্ভিত হয়ে যায়। ইতোমধ্যে স্কুলটি স্থানান্তরের জন্য ৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষা অধিদপ্তর হতে একটি নতুন ভবন এবং সম্পূর্ন ব্যক্তিগতভাবে আরো একটি ভবন নির্মাণ করা হবে। 

 

তিনি আরও বলেন, আগামী ১ জুলাই হতে সেখানে ভবনের ফাউন্ডেশনের কাজ শুরু এবং আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যে নতুন ভবনে ক্লাস চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যেহেতু সেচ্ছায় স্থানান্তরিত হয়ে যাচ্ছে সেহেতু সিটি কর্পোরেশন থেকে একটি ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে। সব মিলিয়ে স্কুলটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্কুল এন্ড কলেজে রূপান্তর করা সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী। এ জন্য আমি এলাকার সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। নবীগঞ্জ এলাকার নারীদের স্বাবলম্বী করতে প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন কিছু শিক্ষার্থী সহযোগিতা করবেন বলে কথা দিয়েছেন। নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুলে নারীদের স্বাবলম্বী করতে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে সেখানেও আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

 

বক্তব্যে এমপি সেলিম ওসমান স্কুলটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, এবং বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, রশিদ ভাই ছিল বলেই আজকে বন্দরে স্কুল কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উন্নয়ন করতে পারছি। আর এই স্কুলটির উন্নয়নের পেছনে সম্পূর্র্ণ কৃতিত্ব স্কুল কমিটির সভাপতি আতাউর রহমানের মুকুলের। সে স্কুলটির উন্নয়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাঁর এ পরিশ্রমের ফলেই উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে।

 

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান মুকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এ রশিদ, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সায়মা খানম, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা নিভা রানী দাস, ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকার, ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন, ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা, ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান বাবুল, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর শিউলি নওশেদ, হোসনে আরা, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালামসহ  এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

 

অনুষ্ঠানে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ বলেন, এমপি সেলিম ওসমান বন্দরের স্কুল কলেজের উন্নয়নে যে ভাবে দুহাত ভরে দান করে যাচ্ছে তা ইতিহাসের পাতায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বন্দরের মানুষ কখনই এমপি সেলিম ওসমানের এমন মহৎ অবদানের কথা ভুলতে পারবে না।

 

সভাপতির বক্তব্যে আতাউর রহমান মুকুল বলেন, ৫০ বছরের উর্ধে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের এমপি সেলিম ওসমানের ভূমিকা অপরিসীম। তিনি ১ কোটি ৫০ টাকা দিয়ে স্কুলের জন্য জমি কিনে দিয়েছেন। সরকারিভাবে একটি নতুন ভবনের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়াও তাঁর সহধর্মিনী এবং মেয়ে আরো ২ কোটি টাকা স্কুলের জন্য অনুদান প্রদান করছেন। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন থেকে একটি ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে সব মিলিয়ে আগামী ১ জুলাই ফাউন্ডেশনের কাজ শুরু করে মার্চের মধ্যে নতুন ভবনে ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি। আর এর সম্পূর্ন কৃতিত্ব আমাদের এমপি সেলিম ওসমানের এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের।

এই বিভাগের আরো খবর