সিদ্ধিরগঞ্জে শিশু জিদান হত্যাকান্ডে কোর্টের নির্দেশে থানায় মামলা
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২০
বিশেষ প্রতিনিধি (যুগের চিন্তা ২৪) : অবশেষে কোর্টের নির্দেশে হত্যা মামলাটি রুজু করলো সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। আলোচিত শিশু জিদান হাসান তন্ময় হত্যার ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা রুজু করেছিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা। বাদীপক্ষের তুমুল আপত্তি অগ্রাহ্য করে অপমৃত্যু মামলা নেয়ায় সমালোচনার পাত্র হন ওসি কামরুল ফারুক। বাদীপক্ষ হাল ছাড়েনি। যার ফলে অপমৃত্যু মামলাটি পুলিশ স্টাবলিস্ট করতে পারেনি।
একটি হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাওয়ায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির ভূমিকায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনের ইমেজ ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী ও বোদ্ধামহল। তাদের মতে, ওসি কামরুল ফারুক এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌতম তেওয়ারীর ভূমিকা ছিল রহস্যময়। একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে উক্ত দুই সিনিয়র ও জুনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা মিলে দিব্যি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে আসামী পক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক ফায়দা লোটার। বাদীপক্ষ, তাদের আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীরা সজাগ থাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি’র সব চেষ্টাই ভেস্তে গেছে। জিদান হত্যায় ২৭ ডিসেম্বর প্রথমে অপমৃত্যু (নং ৩৯) মামলা নেয় পুলিশ।
এরপর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর ৫ জানুয়ারী অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে নারায়ণগঞ্জের বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী ‘ক’ আদালত। যার নং-২। এর ১৩ দিন পর গতকাল আদালতের নির্দেশে হত্যা মামলাটি রুজু করতে বাধ্য হলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলা নং-২২ তাং ১৭/১/২০২০।
ইতিপূর্বে আটককৃত ৪ আসামী (রতন, সাব্বির, রাহাত ও ইয়াছিন) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘মাথায় আঘাতজনিত কারনে রক্তক্ষরণ’। ময়নাতদন্ত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ আসাদুজ্জামান।
জানাগেছে, গত ৫ জানুয়ারী দুপুরে এড. মো. শরীফ হোসেন মামলার বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি রুজু করে যার সি.আর মামলা নং ০২/২০২০। হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীরা হলো সিদ্ধিরগঞ্জ চৌধুরী বাড়ী এলাকার মো. শাহীন মিয়ার ছেলে মো. সাব্বির হোসেন (১৬), পাইনাদী মিজমিজি এলাকার জহুরুল ইসলামরে ছেলে মো. ইয়াছিন (১৬), চৌধুরী বাড়ী বন্ধু সিনেমা হল বাসিন্দা মজিবুর রহমানের ছেলে মো. রাহাত হোসেন (১৫)।
এর আগে নিহত শিশু জিদান হাসান তন্ময় এর মা নারায়ণগঞ্জের নব নিযুক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম (পিপিএম-বার) এর নিকট একটি অভিযোগ দায়ে করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন আসামী রতন, রাহাত হোসেন, সাব্বির হোসেন, ইয়াছিন, মো. মাইনুদ্দিনরা মিলে তার ছেলে তন্ময়কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। হত্যার ঘটনায় গত ২৭ ডিসেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে থানার কর্মকর্তা আসামীদের দ্বারা অবৈধভাবে প্রভাবিত হয়ে হত্যা মামলা না নিয়ে অপমৃত্যু মামলা করে।
নিহতের মা হোসনে আরা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ আমার ছেলে হত্যা মামলা নিতে আগ্রহী ছিলো না বিধায় আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে একটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু করে। আমার একমাত্র ছেলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
সুরতহালে তথ্য গোপন :
নিহতের মা হোসনে আরা বেগম আরো অভিযোগ করেন, পুলিশ আমার ছেলের লাশের সুরতহাল রিপোর্টটিতে তথ্য লুকিয়েছেন। যখন হত্যাকারীরা আমার ছেলের লাশ আমার ফেলে রেখে দিয়ে যায় তখন আমি আমার ছেলের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। তবে পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে সেই আঘাতের বিষয়টি উল্লেখ করেনি।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক। তিনি জানান, এটা কখনওই সম্ভব না। কারন আমাদের কাছে যখনই কোনো অভিযোগ আসে সেটা হত্যা হোক বা আত্মহত্যা তা আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থ গ্রহণ করি। এখানে নিহতের পরিবার যে কথা বলছে তা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই না।
পরিকল্পিত হত্যা :
নিহতর স্বজনরা জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া ক্লাব সংলগ্ন পাইনাদী শুক্কুর আলীর ছেলে রতনের সাউন্ড সিষ্টেম ও ছোট বাতির দোকান। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রতন কাজ করার কথা বলে মিজমিজি মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফারুক ঢালির ছেলে জিদান হাসান তন্ময়কে নিয়ে যায়।
শুক্রবার সকালে তন্ময়ের বাড়ির সামনে ইজিবাইক দিয়ে নিয়ে তন্ময়ের বাবা ফারুক ঢালীর কাছে লাশ বুঝিয়ে দেয়। এ সময় তন্ময়ের বাবা লাশ বহনকারীদের তার ছেলের মৃত্যুর কারন জানতে চাইলে বিদুৎ পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে চলে যায়। নিহতের পরিবার ধারনা করে তন্ময়কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সিদ্ধিরগঞ্জে জিদান হোসেন তন্ময় নামে এক কিশোরকে তারই বন্ধু রতন ডেকে নিয়ে যায়। এরপর পরে রাতে আর বাসায় ফিরেনি তম্ময়। পরদিন ২৭ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকালে রতনসহ আরো দুইবন্ধু তম্ময়ের লাশ নিয়ে তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দিয়ে বলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গছে।
তখন নিহতের পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। অপর দিকে পুলিশ এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি ইউডি মামলা রুজু করেন। হত্যা মামলা না নিলেও এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে রতনসহ সাব্বির ও ইয়াছিন নামে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ।
- আড়াইহাজারে হাত-পা বেধে অটো চালককে হত্যা করে অটো ছিনতাই
- শিশু আলিফকে নির্যাতনের পর হত্যা, লাশ বুকে নিয়ে মর্গে বাবা
- সরকারি ত্রাণ কার্ডের জন্য অর্থ নিচ্ছেন ইউপি সদস্য ও আ’লীগ নেতা!
- তুইসহ তোর দুই বাচ্চার লাশ বের করবো : সালমা ওসমান লিপি
- সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১ : আহত ১
- শামীম ওসমান আমার মত শাহ নিজামকেও কিক মেরে বের করে দিবেন
- বক্তাবলী আতংক
আর কতো লাশে বন্ধ হবে টেঁটা যুদ্ধ - ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ কচুরিপানায় পরে মাটি চাপা দিয়ে গুম(ভিডিও)
- দৌঁড়ঝাপ করেও পদ বঞ্চিত এমপি বাবু !
- আত্মগোপেনে নাজিম উদ্দিন, শামীম ওসমানের হুংকার !
- বিয়ের আগেই বাবা হয়েছিলেন নাজিমউদ্দিন!
- সাইনবোর্ডে আবাসিক হোটেলে পুলিশের অভিযান, ৩ পতিতাসহ আটক ১০
- ক্রসয়ারের ভয় দেখিয়ে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিল পুলিশ, তোলপাড়
- নাইটগার্ডকে তুলে নিল ভিকি !
- রূপগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৮ জনের মৃত্যু, বাড়ছে আতঙ্ক