বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সিদ্ধিরগঞ্জে আ’লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বেপোরোয়া সজু বাহিনী

প্রকাশিত: ২০ মে ২০১৯  

সিদ্ধিরগঞ্জ (যুগের চিন্তা ২৪) : সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী উত্তর পাড়া এলাকার হুমায়ন কবীরের ছেলে তানজীম কবীর সজু। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কোন পদে না থাকলেও থানা আওয়ামীলীগের এক নেতার ছবির সঙ্গে নিজের ছবি লাগিয়ে ফ্যাস্টুন ও ব্যানার টানিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগ কর্মী দাবী করেন সজু।

আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকায় জমি দখল, বালু-ভরাট, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। গত তিন মাসে মসজিদের ইমামসহ কমপক্ষে ১২ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে সজু ও বাহিনীর সদস্যরা এবং তাদের অত্যাচারে ৭ জন ব্যক্তি এলাকা ছেড়ে অনত্র চলে গেছে। 

কিন্তু প্রানের ভয়ে থানায় অভিযোগ ও মুখ খুলতে সাহস পায় না ভুক্তভোগিরা। বছরের পর বছর সাজু বাহিনীর অত্যাচার চালালেও স্থানীয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন রকম ব্যাবস্থা গ্রহন করছেন না। কদমতলী উত্তরপাড়া ও আশ্ব-পার্শ্বের এলাকায় লোকজন সজু বাহিনীর নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে। 

তাদের হাত থেকে পরিত্রান চায় এলাকাবাসীরা। এ ব্যাপারে সন্ত্রাসীদের আতঙ্ক নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা। 

সোমবার দিনভর সরেজমিনে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে সজু বাহিনীর বিষয়ে আলাপ কালে উঠে এসেছে অনেক অজানা তথ্য। তারা জানায় কদমতলী উত্তরপাড়া ও আশপার্শ্বের এলাকায় কোন জমি ক্রয় বিক্রয় বালু ভারাট, নির্মান কাজ, বিচার মজলিশ সহ সকল প্রকার কাজ করতে হলে তাদের নির্দৃষ্ট পরিমান টাকা দিতে হয়। 

চাঁদা দিতে না চাইলে তাদের মারধর সহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানীর স্বীকার হতে হয়।গত তিন মাসে নুরুজ্জামান ইউসুফ মিয়া, রজব আলী, সালাম মিয়া, মনিক মিয়া, জাকির হোসেন ও কবির হোসেন সহ কমপক্ষে ১২ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে তারা। 

তাদের অত্যাচারে নাজমুল হোসেন, মতিন মিয়া, আশ্রাফ মিয়া ও বিল্লাল হোসেন সহ কমপক্ষে ৭ জন জায়গা জমি ও ঘর বাড়ী বিক্রি করে অনত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে তারা। 

তানজীম কবীর সজু মিয়ার নেতৃত্বে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড রাজমিস্ত্রি মঞ্জু বাবু মিয়া, অধীর মিয়া, পবন মন্ডল ও মুন্না মিয়া সহ ২৫/৩০ জনের একটি বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে। এ বাহিনীর মাধ্যেমে এলাকার সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এলাকাবাসীরা জানায়, অনেক বিদেশী লোক এই এলাকায় বাড়ী করতে এসে সবত্র হারিয়ে খালি হাতে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। অনেক নীরিহ লোক মারধর সহ বিভিন্ন রকম হয়রানীর স্বীকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। মসজিদের ইমাম সাহেব তাদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন। অনেক ইমাম চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান, বিল্লাল মিয়া নামে এক ব্যক্তি এই এলাকায় বাড়ি করেন কিন্তু বিল্লালের মেয়ের উপর কু-দৃষ্টি পড়ে এই বাহিনীর। পরে বিল্লাল ও তার পরিবারের সদস্য ঘরবাড়ি ছেড়ে ঢাকার বর্তমানে বসাবাস করছেন। গার্মেন্টসে আসা যাওয়া ও ওই এলাকায় বসবাসরত নারী শ্রমিকরাও তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। 

অনেক নারী শ্রমিকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন, এভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় সজু বাহিনীর জুলুম অত্যাচার চলছে। বহুদিন ধরে তাদের শেল্টার দিচ্ছেন সজুর বাবা হুমায়ন কবীর। এ অবস্থান থেকে খুব দ্রুত পরিত্রান চান এলকাবাসীরা। সজু বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে চান তারা। 

স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা বলেন, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন থেকে কতিপয় লোক আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছেন। এ সকল লোকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য নেতাদের অনুরোধ করব। 

তারা বলেন, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ঘোষনা দিয়েছেন এ সকল আগাছা নেতাদের  পরিষ্কার করার জন্য স্থানীয়নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তানজীম কবীর সজু বলেন, আমি কোন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত নই। 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিন পারভেজ বলেন, সজু বাহিনীর বিরুদ্ধে মৌখিক ভাবে অভিযোগ পেয়েছি। খুব শিঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন সহ তাদের গ্রেফতার করা হবে। 

এই বিভাগের আরো খবর