বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কান্ড : মামলার বাদি হলেন স্বাক্ষী

প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের সোর্স চিহ্নিত ছিনতাইকারী মোঃ আল আমিন (৩০) কে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গনধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ রহস্যজনক কারনে আল আমিনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর ছিনতাই মামলা না নিয়ে নিজেরাই বাদি হয়ে মাদক মামলা দায়ের করেন। 

 

এমনকি পুলিশ ছিনতা্ইয়ের শিকার দুই ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন ও সাজুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া ১৭ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন উদ্ধারে কোন তৎপরতা নেননি বলে তারা অভিযোগ করছেন। 

 

এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং পুলিশের এহেন কর্মকান্ডে পুলিশের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠে। 

 

এ ছাড়াও মাদক মামলায় পুলিশের সোর্স ছিনতাইকারী আল আমিনের সহয়োগী ইলিয়াসকে অন্তর্ভূক্ত না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই দুই ভুক্তভোগী। 

 

শুক্রবার (২০ জুলাই) ভোর ৪টায় এলাকাবাসী আল আমিনকে সিআই খোলা এলাকায় আক্তারের বাড়ি থেকে তাকে আটক করে গনধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। 

 

পুলিশ সোর্স চিহ্নিত ছিনতাইকারী আল আমিন সিআই খোলা এলাকায় আক্তারের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার আটরশি এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে।

 

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে কাঠেরপুল এলাকায় এ ছিনতায়ের ঘটনাটি ঘটায় আল আমিন তার সহযোগী ইলিয়াসসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন। এ সময় তারা ভুক্তভোগী সাজুকে বেধড়ক মারধর করে তার কাছে থাকা ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। 

 

ছিনতাইয়ের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আলাউদ্দিন এগিয়ে আসলে ছিনতাইকারীরা তাকেও মারধর করে তার সাথে থাকা ১৩ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়। পরে রাতেই এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে আল আমিনকে তার ভাড়া বাসায় গিয়ে আটক করে গনধোলাই দেয়। 

 

এক পর্যায়ে গনধোলাই থেকে রক্ষা পেতে আল আমিন নিজে ও তার সন্তানের গলায় ছুরি চালানোর হুমকি দেয়। পরে পুলিশে খবর দিলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নাসির ঘটনাস্থল থেকে আল আমিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। 

 

ছিনতাইয়ের শিকার আলাউদ্দিন ও সাজুর অভিযোগ, এ ঘটনায় সাজু বাদি হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ছিনতাই মামলা নথিভুক্ত করার জন্য একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে নিজেরাই বাদি হয়ে শুধুমাত্র আল আমিনের নাম দিয়ে একটি মাদক মামলা রুজু করেন। এ মামলায় তাদের স্বাক্ষি হিসেবে দেখান। মামলায় আল আমিনের সহয়োগী ইলিয়াস ও অজ্ঞাতদের উল্লেখ করেননি। 

 

এমনকি তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া ১৭ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন উদ্ধারে কোন তৎপরতা নেননি। 

 

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দিন জানান, আটক আল আমিনের কাছ থেকে ২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে মাদকের মামলা করা হয়েছে।  

 

ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত করে ছিনতাইয়ের বিষয়ে কোন প্রমান না পাওয়ায় মামলা নেয়া হয়নি।  অভিযোগে উল্লেখিত অভিযুক্তরা নেশা করে মারামারি করছিলো বলে আমি জানতে পেরেছি।  

 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সাত্তার থানায় উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, ছিনতাইয়ের মামলা দিলে আল আমিন সহজেই জামিন পেয়ে যাবে তাই তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা রুজু করা হয়েছে। 

 

তাছাড়া আল আমিন ও তার সহাযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর