বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

সাধারণ ছুটি আরও ১৪ দিন বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২০  

যুগের চিন্তা ডেস্ক: কাভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে চলমান সাধারণ ছুটি আরও ১৪ দিন বাড়ল। বিভিন্ন নির্দেশনা মানা সাপেক্ষে আগামী ১৭ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।


বৃহস্পতিবার (১৪ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সপ্তম দফায় ছুটি বাড়িয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। এই ছুটির মধ্যে শবে কদর ও ঈদের ছুটিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।


ছুটি বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কারোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১৬ মে’র পর শর্তসাপেক্ষে ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ১৭ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে। সাধারণ ছুটির সঙ্গে ২১ মে’র শবে কদরের ছুটি, ২২, ২৩, ২৯ ও ৩০ মে’র সাপ্তাহিক ছুটি এবং ২৪, ২৫ ও ২৬ মে’র ঈদের ছুটি যুক্ত হবে।

 

প্রজ্ঞাপনে সাধারণ ছুটির নির্দেশনাগুলো নিচে দেওয়া হলো: 

১।  আদেশে বলা হয়েছে, আগামী ১৭ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকাকালীন জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা/ সীমিত থাকবে। ২১ মে (শবে কদরের সরকারি ছুটি), ২২, ২৩, ২৯ ও ৩০ মে সাপ্তাহিক ছুটি এবং ২৪, ২৫ এবং ২৬ মে (ঈদুল ফিতরের সাধারন/ সরকারি ছুটি) এ ছুটি/ নিষেধাজ্ঞার আন্তর্ভুক্ত থাকবে।


২। সাধারণ ছুটি এবং চলাচল নিষেধাজ্ঞাকালে এক জেলা থেকে অন্য জেলা বা এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। জেলা প্রশাসন আইন শৃঙ্খবাহিনীর সহায়তায় এ নিয়ন্ত্রণ সতর্কভাবে বাস্তবায়ন করবে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অতীব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (প্রয়োজনীয় কেনাকাটা, ওষুধ কেনা, চিকিৎসা নেওয়া, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার করা, ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে আসা যাবে না।


৩। সাধারণ ছুটি এবং চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকাকালে জনসাধারণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশমালা  কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।


৪। রমজান এবং ঈদকে সামনে রেখে দোকান পাটে ক্রয়বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। শপিংমলের প্রবেশদ্বারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহন অবশ্যই জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এসব শুপিংমল দোকান পাট বিকাল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।


৫। সাধারণ ছুটির সময় জরুরি পরিসেবা, যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস বন্দসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা, এবং সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এ ছুটির বাইরে থাকবেন।


৬। সড়ক ও নৌপথে সব প্রকার পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন (ট্রাক, লরি, কার্গো, ভেসেল, ইত্যাদি) চলাচল অব্যাহত থাকবে।


৭. কৃষিপণ্য, সার, বীজ, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্পপণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, ও জরুরি সেবা এবং এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, কর্মীদের ক্ষেত্রে এ ছুটি প্রযোজ্য হবে না।


৮। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী, ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যম (ইলেক্টনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া, ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে নিয়োজিত কর্মীগণ এই সাধারণ ছুটি/ চলাচল নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবেন।’


৯। ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রফতানিমুখী শিল্পসহ সব ধরনের কলখারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রনীত স্বাস্থ্যসেবা পরিপালনের নির্দেশনা নিশ্চিত করতে হবে।


১০। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তীতে শিল্প কারখানা, কৃষি এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করা হবে।


১১। সাধারণ ছুটি বা নিষেধাজ্ঞা কালীন কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না।


১২। রমজান ঈদ এবং ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধা বিবেচনায় ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

১৩। সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসসমূহ, প্রয়োজন অনুসারে খোলা রাখবে। সেই সঙ্গে তারা তাদের অধিক্ষেত্রের কার্যাবলী পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। মন্ত্রণালয়/ বিভাগ এবং আওতাধীন অফিসসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে মানতে হবে।


১৪। সাধারণ ছুটি/নিষেধাজ্ঞাকালে কেউ কর্মস্থল কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। এই সময়ে সড়কপথে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান, ও রেল চলাচল এবং অভন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। মহাসড়কে মালবাহী/জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন ব্যাতীত অন্যান্য যানবাহন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।


১৫। আসন্ন ঈদের নামাজের ক্ষেত্রেও বর্তমান বিদ্যমান বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে। উন্মুক্ত স্থানে বড় জমায়েত পরিহার করতে হবে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশণা জারি করবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর