বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সাকিকে উদ্ধারের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন বাবা এপন’র

প্রকাশিত: ১৪ মে ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর সালে আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১০টার দিকে দেওভোগ এল,এন রোড বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয় শিশু সাদমান সাকি। নিখোঁজের ১৭ মাস পার হলেও সন্তানকে ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা সৈয়দ ওমর খালেদ এপন (৪৬)।

 

প্রভাবশালীরাও নানাভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন তাকে। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি পদে ছিলেন তিনি। ক্ষমতাশীন সরকারের একজন কর্মী হয়েও ছেলেকে খুঁজে পেতে চতুর্দিক থেকে নানা বাধা আসছে। উপায়ন্তর না দেখে ছেলেকে ফিরে পেতে মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছেন এপন। 


প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদনপত্রে তিনি লিখেছেন,  বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জন্মলগ্ন হইতেই আমার পরিবার পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।  তৎসহ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমার পিতা যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার ছিলেন এবং সুদীর্ঘ ২৪ বৎসর বিরতিহীনভাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মর্মে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সততার সহিত দায়িত্ব পালন করিয়া বিগত ২০১১ সালে পরলোকগমন করেন পাশাপাশি আমি নিজেও দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদে অধিষ্ঠত ছিলাম।


বিগত ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর সালে আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১০টার দিকে আমার বাড়ির সামনে থেকে কতিপয় লোকজন আমার দেড় বছরের শিশু সৈয়দ সাদমান সাকিকে কতিপয় লোকজন অপহরণমূলক গুম করে রাখলে তাৎক্ষণিক আমি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ দিলে কোন এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে থানা কর্র্তৃপক্ষ বর্ণিত বিষয়ে কোনপ্রকার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে প্রথমে তাহা শুধুমাত্র সাধারণ ডায়েরি (জি.ডি) হিসেবে এন্ট্রি করে এবং পরবর্তীতে ঘটনার ১৩ দিন পর তথা ১৩ ডিসেম্বর সেটিকে মামলা (নং- ৩২) হিসেবে এন্ট্রি করে।  


এপন আবেদন পত্রে প্রধানমন্ত্রীকে জানান, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, মামলা দায়েরের পর প্রায় ১৭ টি মাস অতিবাহিত হওয়া স্বত্বেও আজ অবধি প্রশাসনের পক্ষ থেকে শান্তনা ও আশ্বাস ব্যতিত আমি আর কিছুই পাইনি। শিশু পুত্রকে উদ্ধারের নিমিত্তে সর্বাত্মক চেষ্টার পাশাপাশি সম্ভব্য সকলের দ্বারে দ্বারে পাগলের মতো আকুতি-মিনতি করে কোন প্রকার আশানুরুপ ফল না পেয়ে একজন অসহায় ও হতাশাগ্রস্থ পিতা গিসেবে আমি আজ মনোবেতর জীবনযাপন করছি।

 

পাশাপাশি দেড় বৎসরের শিশুপুত্র হারানোর শোকে কাতর হইয়া আমার স্ত্রী আজ নির্বাক, বাকরুদ্ধ ও প্রায় শয্যাশায়ী, যেন দেখায় কেউ নেই। আর তাই উপায়ন্তর না দেখে দুঃখ ভারাক্রান্ত চিত্তের আকুতি নিয়া শিশুপুত্রকে নিজ বুকে ফিরে পাবার প্রত্যাশায় শেষ আশ্রয়স্থল তথা আপনার দুয়ারে ভিক্ষাপ্রার্থী হলাম।


এপন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আবেদনপত্রে লিখেন, স্বজন হারানোর যন্ত্রণা যে কতটা মর্মান্তিক ও দূর্বিষহ হতে পারে বাংলার বুকে তা আপনার চেয়ে অধিক আর কেই বা জানে। এবং অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আপনি নিজেও সূদুর ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট থেকে আজও পর্যন্ত স্বজন হারানোর মর্মান্তিক ও দুর্বিসহ যন্ত্রণা বয়ে চলেছেন।

 

আর তাই আমার দেড় বৎসরের নিষ্পাপ শিশুপুত্রকে একবারের জন্য হলেও আপনার রাসেল ভেবে দয়া করে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করে আমার বুকে ফিরিয়ে দেবার নিমিত্তে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশদানের মাধ্যমে একজন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের সন্তান হিসেবে আমার প্রতি আপনার সদয় মহানুভবতা কামনা করছি।


এপন জানান, আমার কথার সত্যতা যাচাইপূর্বক যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশদানে আপনার সবিনয় মর্জি কামনা করছি। 
 

এই বিভাগের আরো খবর