সর্বত্র সিগারেট সহজলভ্য, কিশোরদের প্রকাশ্যে ধূমপান
প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০১৯
বিশেষ প্রতিনিধি (যুগের চিন্তা ২৪) : শহরের নয়ামাটি হোসিয়ারী এলাকা। গুলসান সিনেমার গলিতে পান বিড়ি সিগারেটের দোকানের সামনে জটলা। সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টা। সিগারেট কিনে ধরালো এক কিশোর।
লম্বা টান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়লো আরেক কিশোরের মুখের উপর। কিশোরটি কেসে ও হেসে ফেললো। বললো ‘দোস্ত তুই একটা টান দে। বাইত খাইতে (ধুমপান) পারি নাই। বাবায় গ্যারেজে যায় নাই। সকালে কষ্ট অইছে। নিয়ত করছিলাম কামে আইলে সকালেই দুইটা সিগারেট খামু।’
বন্ধু কিশোরটি সিগারেটটা নিয়ে টানতে শুরু করলো। সে খুব স্বাভাবিকভাবেই টান ছিল। পাশের কিশোরটি বলে উঠলো ‘দোস্ত আমার কাশি উঠে ক্যা ? তুই টানলে দেহি কাশিটাশি আহেনা। তুই দেহি বড় মাইনষের মত টানতে পারছ।’ অভিজ্ঞ কিশোরের উত্তর ‘আরে বেটা তিন বছর ধইরা ওস্তাদের লগে স্টিক টানি। ওস্তাদেই শিখাইছে।
ওস্তাদে কইছিল মাঝে মধ্যে স্টিক টানলে নাকি শরীরটা চাঙ্গা লাগে। তয় আমার কাছে কিছুই লাগেনা। খালি একটা ভাব জাগে। সবাই আমার দিকে চাইয়া থাকে। নিজেরে নায়ক নায়ক লাগে। আবার অনেকে খারাপও কয়।
খোঁজ নিয়ে জানাগেল, শহরের নয়ামাটি, উকিলপাড়া, ২নং রেলগেট, নন্দীপাড়া, পালপাড়া, দেওভোগ কাটা কাপড় মার্কেট, গুলসান সিনেমা হলের পেছনে থানকাপড় মার্কেট, করিম মার্কেট, ডিআইটি মার্কেট, জিমখানা এলাকা, টানবাজার রং-সূতার মার্কেট, র্যালী রিভার ভিউ মার্কেট, থানা পুকুর পাড় হকার্স মার্কেট, চাষাড়া হকার্স মার্কেট, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্ত্বর, শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কের দু’পাশের ফুটপাত, কালীরবাজার ও দ্বিগুবাবুর বাজারসহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রকাশ্যে ধূমপানের মচ্ছব চোখে পড়ে। যুবক ও মাঝ বয়েসীদের চেয়ে কিশোর বয়সীদেরই বেশি সিগারেট কিনতে দেখা যায়। ওরা দামী সিগারেট কিনে। শহরের সর্বত্র সিগারেটের প্রকাশ্য বিজ্ঞাপন ও ধূমপানের উৎসব চলে।
শহরের নয়ামাটি হোসিয়ারী এলাকা, করিম মার্কেট, টানবাজার পার্ক, দ্বিগুবাবু বাজার ও চাষাড়া মোড়ের কয়েকজন সিগারেট বিক্রেতার সাথে আলাপকালে তারা জানান, চাষাড়া এলাকায় কলেজ ছাত্ররাই বেশি সিগারেট টানে। ওরা রাখঢাক করেনা। বই-খাতাতো ব্যাগেই থাকে। প্রথমে চায়ের অর্ডার। সাথে স্টিক। চায়ে চুমুক দিয়ে সিগাতে টান। সে এক ভিন্ন মাস্তি ! ওটা টিনএজার ছাড়া কেউ করতে পারেনা।
সিগারেট বিক্রেতার কথার ধরনে বুঝে নিতে কষ্ট হয়না গোঁফ গজানোর আগেই কেনো আজকাল টিনএজ ছেলেরা চেইন স্মোকার হয়ে যায়। মনির হোসেন চাষাড়া মোড়ে চা-সিগারেটের দোকান চালায়।
তার দোকানের এককাপ চা পান করতে লাইনে দাঁড়াতে হয় মাঝে মধ্যে। সে জানালো চাষাড়ায় দোকান চালাই। অল্প বয়েসী কাউকে সিগারেট দিতে মন চায়না। তবুও দিতে হয়। না দিলে অযথা ঝামেলা হবে। ভাই আমাদের কিছু করার নাই। আমরা চাইনা কারো সন্তান নষ্ট হোক।
ধূমপান প্রসঙ্গে একজন প্রবীন ধূমপায়ী শেখ মাকসুদুর রহমান বলেন, আমি নিজেও অল্প বয়সে ধূমপান শিখেছি। ক্লাস এইটে পড়ার সময় আমি সিগারেট ধরি। ধূমপান অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তবে আমাদের সময়কালটায় অর্থাৎ ষাটের দশকে আমরা ধূমপান করতাম অনেক রাখঢাক করে। এখনকার মত এতটা খোলামেলা ভাবে ধূমপানের প্রশ্নই তখন ছিলনা।
এখনতো মুরুব্বি দেখে কেহ সিগারেট বা নিজেকে আড়াল করেনা। সবকিছু প্রকাশ্যে চলে। সামাজিক অবক্ষয় বেড়েছে। আজকাল দশ বছর বয়সেই কিছু কর্মমুখি বালক ধূমপান করতে শিখে ফেলে।
বিশেষ করে শহরের নয়ামাটি, উকিলপপাড়া ও আশপাশ এলাকায় হোসিয়ারী কারখানাগুলোতে কাজ করতে এসে কিশোররা ধূমপানের সাথে পরিচিত হয়। এখানে পারিবারিক কোন বিধি-নিষেধ নেই। আছে উল্টো কর্মক্ষেত্রের অবাধ স্বাধীনতা। ফলে ইচরে পাকাদের পাল্লায় পড়ে অনেকে ধূমপান করতে শিখে।
- এসপি হারুনকে সরানোর নেপথ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ
- নারায়ণগঞ্জের লজ্জা ঢাকলেন শামীম ওসমান
- সমাবেশ করার অনুমতি চায়নি শামীম ওসমান
- শামীম ওসমানের শঙ্কা ছিলো ভিকিকে ক্রসফায়ার দেয়া হতে পারে
- ডা.শাহনেওয়াজ, তাঁর স্ত্রী, মেয়ে, জামাতা করোনায় আক্রান্ত
- কাকে ভয় দেখালেন শামীম ওসমান
- ৫ ইউনিয়নকে নাসিকে যুক্ত করা হচ্ছে : মেয়র আইভী
- জাপা নেতা পিজা শামীমকে মারধর করলেন সেলিম ওসমান (অডিওসহ)
- যুগান্তরের প্রার্থী তালিকা ভিত্তিহীন : গণপূর্তমন্ত্রী
- মে মাসে না’গঞ্জের পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ !
- ছাত্রজীবনের সেই তিনজনেই এখন এমপি, ডিসি, এসপি (ভিডিও)
- ‘গাইড বই’ চালাতে স্কুলে স্কুলে ঘুষ!
- পুরোনো রূপে ফিরছে নারায়ণগঞ্জ
- কেন্দ্রে যাচ্ছেন আইভী
- করোনায় আক্রান্ত দুই সহোদর থাকেন না’গঞ্জ, বাড়ি মুন্সিগঞ্জ