বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সরকারের ব্যর্থতায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি : রিজভী

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২০  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : সরকারের ব্যর্থতায় লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, মহামারী মোকাবেলা করতে হলে সকলের ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না করে সরকার মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। মানুষের জীবন নিয়ে খেলতে গিয়ে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এদেশের মানুষের লাশের সারি বৃদ্ধি পাচ্ছে।


রোববার (২৬ এপ্রিল) সকালে আড়াইহাজারে ত্রাণ বিতরণের সময় তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি'র সাবেক সহসভাপতি ও আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমনের উদ্যোগে খাদ্য ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। এ সময় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনিসহ বিএনপি, ছাত্রদল যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দলের নেতা-কর্মীরা অসহায় দুস্থ ও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারের অনেক নিপীড়ন নির্যাতনের পরও নিজেদের পকেটের টাকায় সারাদেশের মানুষের পাশে পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপি'র নেতাকর্মীরা ১২ লাখ মানুষকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ দিতে পেরেছে। আজকে আড়াইহাজারে মাহমুদুর রহমান সুমন নগদ অর্থ ও খাদ্য দিচ্ছে।


তিনি বলেন, জনগণের টাকায় কেনা ত্রাণ সরকারি দলের লোকেরা চুরি করছে। আওয়ামী লীগের লোক এমন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ঘর থেকে, খড়ের পালা থেকে, খাটের নিচ থেকে চাল ডাল তেল পাওয়া যাচ্ছে। এই ধরনের রাজনৈতিক দল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারীতে দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করতে পারবেন না। 


হাজার হাজার বস্তা চাল ধরা পড়ছে চেয়ারম্যান-মেম্বার অথবা আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে। গোটা দেশকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলে দিয়ে দেশ পরিচালনা করবেন মানুষ সেটা মেনে নেবে না।

 

তিনি আরও বলেন, চীনে যখন করোনাভাইরাস শুরু হল তখন বাংলাদেশ সরকার কোনো পদক্ষেপ নিলেন না। মার্চ মাসে করোনা শুরু হয়েছে সরকার তা জানায় নাই। অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। দেশের জনগণের প্রতি কতটুকু দায়িত্ব আছে তা আপনারাই বুঝতে পারছেন।


বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজকের চিকিৎসকেরা মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। করোনার বিরুদ্ধে যে প্রস্তুতি নেয়ার দরকার ছিল তা নেয়নি। গতকাল বলছে সিটিতে গার্মেন্টস খুলে দেবে। সকল শ্রমিক আসলে কী ভয়াবহ অবস্থা হবে তা অনুমান করা যায়। একজনের হলে সকলে আক্রান্ত হবে। ব্যাপক বিস্তার লাভ করতে পারে।


তিনি বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র স্পেন ইতালিতে হাজার হাজার লোক মারা যাচ্ছে। আর আমাদের দেশে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই, প্রয়োজনীয় ঔষধ নেই। চিকিৎসকরা নার্সরা ভয় পাচ্ছেন। যারা চিকিৎসা করবে তারা যদি ঝুঁকির মধ্যে থাকে, করোনা আক্রান্ত হয় তাহলে কে চিকিৎসা দিবে। বিশ্বে যে পরিস্থিতি দেখছি আল্লাহ না করুক ওইসব দেশের মত যেন না হয়।


উন্নত দেশগুলো লাশের সারি ঠেকাতে পারছে না সে তুলনায় আমাদের কিছুই নাই। সরকার কোন দায়িত্ব পালন করতে চায় না। বুঝেও না। মন্ত্রীরা ঘরের মধ্য থেকে ভিডিও বার্তা দিচ্ছে আর বিএনপি নেতাকর্মীরা ঝুঁকির মধ্যেও অসহায় মানুষদের পাশে ছুটে যাচ্ছে সহযোগিতা করছে।


সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রতিদিন আমরা ৪০০ থেকে ৫০০ লোকের আক্রান্ত খবর পাচ্ছি। মারা যাচ্ছে বহু লোক। যথাযথ পদক্ষেপ নিলে এত আক্রান্ত হতো না। ভিয়েতনাম ও ভুটান পদক্ষেপ নেয়ায় সে দেশে আক্রান্ত হয়নি। 


কিন্তু আমাদের দেশে সরকার পদক্ষেপ নেয়নি বরং সরকারি দলের লোকেরা আত্মসাৎ করছে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে আর তাতে সহযোগিতা করছে সরকার। আবার যারা চুরি করছে তাদেরকে দিয়ে ত্রাণ সহায়তার কথা বলছে। অর্থাৎ চোরকে দিয়ে ঘর পাহারা দেওয়ার কথা বলছে। তাহলে এই সরকার দিয়ে দেশের সঙ্কট মোকাবেলা করা যাবে না।


রিজভী আরও বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছেন। তাকে অন্যায় ভাবে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছিল। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে এসে বলছেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নিচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের অসহায় গরীব দুস্থ ও কর্ম মানুষের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন।


মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, আজকে করোনায় অনেক মানুষ মৃত্যুবরন করছে। বহু মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। গত ১২ বছরে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এটি করেই ক্ষমতাসীনরা ক্ষ্যন্ত হন নি। দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে বিএনপিকে তারা ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবে না। বরং বিএনপি আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হয়েছে।


তিনি বলেন, আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু তারেক রহমান দেশের মানুষের হৃদয়ে ঢুকে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ তাকে ভালোবাসে। তাঁর নেতৃত্বেই আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো।
 

এই বিভাগের আরো খবর