শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

শ্রুতি’র ২৭ বছর পূর্তি ও রনজিত পুরস্কার প্রদান আগামীকাল

প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০১৯  

স্টাাফ রিপোর্টর (যুগের চিন্তা ২৪) : শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি, নারায়ণগঞ্জের ২৭ বছর পূর্তি উদযাপন ও রনজিত পুরস্কার প্রদান আগামীকাল শুক্রবার (২ আগস্ট)। ওই দিন বিকাল ৫ টায় শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে এ বর্ষ পূর্তি ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠিত হবে।


অনুষ্ঠানে রনজিত পুরস্কার গ্রহণ করবেন কথাসাহিত্যিক মামুন হুসাইন। লেখকের হাতে এ পুরস্কার হিসেবে নগদ ২৫ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেয়া হবে।


সংগঠনের সভাপতি আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা করবেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, কথাসাহিত্যিক ইমতিয়াজ হোসাইন ও কবি ওবায়েদ আকাশ। পরে সুবিধাবঞ্চিত দু’জন শিশুকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হবে।


পুরস্কার প্রদান ও আলোচনা শেষে রয়েছে-অরিন্দম পাল ঝিনুকের গ্রন্থনা ও নির্দেশনায়, শ্রুতি শিশুদলের পরিবেশনায় ‘ঝরা কুঁড়ির গল্প’ এবং কবি জীবনান্দ দাশের জীবনী ও কাব্যের সম্মিলনে শ্রুতিকণ্ঠের পরিবেশনায় আবৃত্তি-নৃত্যনাট্য-নকশা ‘নদী নক্ষত্র মানুষ’। পরিবেশিত হবে অরিন্দম পাল ঝিনুকের সুর ও কণ্ঠে, রনজিত কুমারের কবিতা থেকে সুরারোপিত গান নিয়ে বিশেষ আয়োজন ‘বুক পকেটের কবিতা’।


উজ্জ্বল উচ্ছ্বাসের পরিকল্পনায় ও নির্দেশনায় রয়েছে, রনজিত কুমারের সপ্নাবলম্বনে মূকাভিনয় ‘সপ্নবাজ রনজিত’ এবং আহামেদ ব্রাদার্সের পরিবেশনায় বাঁশি, বেহালা ও তবলার সুর লহরী ‘সুরে সুরে সাতাশ’।


এর আগে, শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে  শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি প্রবর্তিত ‘রনজিত পুরস্কার ২০১৯’ (পূর্বে শ্রুতি পুরস্কার’) ঘোষণা করা হয়। শ্রুতির পরিচালক ধীমান সাহা জুয়েল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।


সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির কার্যকরী কমিটি এবারের পুরস্কারের জন্য মামুন হুসাইনের নাম নির্বাচন করে। নিজস্ব সৃজন শৈলীতে বাঙলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াসে সক্রিয় থাকার জন্য তাকে এ পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রুতি।


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির সভাপতি আবদুর রহমান, নীতি নির্ধারণী সদস্য কবি কাজল কানন, পাঠাগার ও পাঠচক্র বিভাগের উপ-পরিচালক অচিন পাঠ্য, পরিবেশ উন্নয়ন বিভাগের উপ-পরিচালক রাসেল আদিত্য, কার্যকরী সদস্য- শারেফ আহম্মেদ, অভি জাহিদ, অপার অরণ্য, চারণ শিকড়সহ সংগঠনের সদস্য এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা।


কথাসাহিত্যিক মামুন হুসাইন ১৯৬২ সালের ৪ মার্চ কুষ্টিয়া জেলা শহরের কমলাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আলতাফ হুসাইন, মা- হোসনে আরা বেগম। মামুন হুসাইনের শৈশব-কৈশোর কেটেছে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলায়। তিনি পড়েছেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৭৭ সালে এসএসসি এবং ১৯৭৯ সালে এইচএসসি পাস করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এমবিবিএস করেন ১৯৮৫ সালে। এরপর সরকারি কর্মকমিশনের অধীনে চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।


পরে মামুন হুসাইন মেডিকেল সোসিওলজি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করেন। ২০০২ সালে এমফিল এবং ২০০৯ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি ২০১১ সালে সাইকিয়াট্রিতে এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। মামুন হুসাইন বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।


মামুন হুসাইনের সাহিত্যে সক্রিয়তা আশির দশকে হলেও প্রাথমিক অবস্থায় তিনি সাহিত্যের ছোটকাগজগুলোতেই লিখতেন। বেশ পরে তিনি ১৯৯৫ সালে প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘শান্ত সন্ত্রাসের চাঁদমারি’ প্রকাশ করেন। গ্রন্থটি প্রকাশের আগেই তিনি বাংলাদেশের গল্পধারায় ভিন্নধর্মী গল্পকার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ মিলিয় মামুন হুসাইনের গ্রন্থ ১৯টি।


প্রসঙ্গত, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি প্রথমে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের নামে তার অনুমতি নিয়ে একটি পুরস্কার প্রবর্তন করে। শিল্পী তার জীবদ্দশায়ই পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম নির্বাচন করেন। তার নির্বাচনে প্রথম পুরস্কার পান কবি শামসুর রাহমান।


এরপর শিল্পী এসএম সুলতানের মৃত্যুর পর শ্রুতি পুরস্কারের সার্বিক কর্তৃত্ব চলে আসে শ্রুতির হাতে। তখন উদ্দেশ্য ও মান ঠিক রেখে পুরস্কারটি নাম পরিবর্তন করে ‘শ্রুতি পুরস্কার’ করা হয়। এরপর ১টি ‘সূর্যশিল্পী সুলতান পুরস্কার’ ও ১২টি শ্রুতি পুরস্কার হিসেবে মোট ১৩টি পুরস্কার প্রদান করা হয়।


এ বছরের ২ জানুয়ারি শ্রুতির প্রতিষ্ঠাতা রনজিত কুমার পরলোক গমন করলে প্রতিষ্ঠানের প্রতি তার দায় ও সামগ্রিক কর্ম বিবেচনায় বর্তমান কমিটি শ্রুতি পুরস্কারটি ‘রনজিত পুরস্কার’ নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয়।

এই বিভাগের আরো খবর