শৈশবে বাবার সঙ্গে হাটে যেতাম এখনতো বাবাই নেই : রানা
প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪): পাখি প্রেমিক মানুষ। পছন্দ করেন পরিবারের সঙ্গে লং ড্রাইভে যেতে। শৈশবেই আপন মামা শহর যুবদল নেতা মোমিন উল্লাহ ডেবিটের হাত ধরে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রদলের রাজনীতিতে। পারিবারিক আর রাজনৈতিক নানান চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বর্তমানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সাখাওয়াত ঈসলাম রানা।
পরিবার আর রাজনীতির নানান বিষয়ে কথা বলেছেন যুগের চিন্তা ২৪ এর ঈদ আড্ডায়। পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো আড্ডার অংশ বিশেষ।
যুগের চিন্তা: কেমন আছেন?
রানা: আসলেই ভাল নেই। নেত্রীকে কারাগারে রেখে আমরা ভাল থাকতে পারছি না।
যুগের চিন্তা: আপনাদের নেত্রীকে মুক্ত করার আন্দোলন নিয়ে সন্তুষ্ট?
না সন্তুষ্ট না। ব্যক্তি স্বার্থের গ্রুপিং এর কারনে প্রত্যাশিত আন্দোলনটা হচ্ছে না।
যুগের চিন্তা: এ অবস্থায় কীভাবে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবেন? সেটা কী সম্ভব?
প্রকৃতপক্ষে যারা সংসদ সদস্য হবেন, মেয়র হতে চাচ্ছেন তারা কী সেভাবে সক্রীয়? আমাদের চেয়েতো তাদের দায়িত্ব বেশি । আন্দোলন করতে টাকার প্রয়োজন। সামাজিক গ্রহণ যোগ্যতার প্রয়োজন। মহল্লায় মহল্লায় দলের সক্রীয়তার প্রয়োজন। তেমন কিছুইতো দেখছি না। এভাবে আন্দোলন সফল হবে কী না তা নিয়ে যথেষ্ঠ শঙ্কা আছে।
যুগের চিন্তা: দিন পারহলেই কোরবানির ঈদ। ঈদের পরিকল্পনা কী?
ঈদটা হয়তো জেল খানাতেই করতে হবে। তারপরেও ইচ্ছা আছে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার। সবাইকে নিয়ে ঈদ করতে না পারলে মন খারাপ থাকে।
যুগের চিন্তা: শৈশবের ঈদ আর এখনকার ঈদের মধ্যে কী পার্থক্য খুঁজে পান?
শৈশবের মজাটা এখন আর নেই। বাবার সঙ্গে হাটে যেতাম এখনতো বাবাই নেই। আমি নিজেই বাবা। ছোট বেলা গরু কিনতে যেতাম বাবার সঙ্গে। একবার পাঁচ হাজার ছয়শ টাকা দিয়ে একটা গরু কিনি। অনেক বড় ছিলো। আর কিছু দিন আগে দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে একটা গরু কিনেছি। মায়ের কাছে বলছিলাম ‘মা, পাঁচ হজার ছয়শ টাকা দিয়ে যে গরুটা ছোটবেলা কিনেছিলাম আজ দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে সেই গরুটাই কিনলাম।’ সামান্য সময়ে জীবন যাত্রার ব্যয় কতো বেড়ে গেছে!
যুগের চিন্তা: রাজনীতিবিদ কেন হলেন, রাজনীতি না করলে কী করতেন?
এমনিতে আমি ব্যবসা করি। ছেলেবেলায়ও ব্যবসায়ী হতে চেয়েছি। তার আগে একদম ছোটবেলা অরেকটা ডেবিট হতে চেয়েছিলাম!(হাসি) পারিবারিকভাবেই হয়তো রাজনীতিটা আমার নেশা হয়ে গিয়েছে।
যুগের চিন্তা: কেমন করে আজকের মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে উঠলেন?
১৯৯২ সালে ছাত্রদলের রাজনীতি শুরু করি জাকির খানের বিপক্ষের শহর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে। সেথেকে কাজ শুরু। নানান ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে আজ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক।
যুগের চিন্তা: পরিবারে কে কে আছেন?
আমার মামা মরহুম মমিনুল্লাহ ডেবিট। তিনিতো মারা গেলেন। তার মৃত্যুর পর আমার বাবাও মারা যান। আমার মা সুলতানা রাজিয়া মহিলা দল করতেন। দিদি বললেই সবাই তাকে চেনেন। আর আমি আর আমার ছোট ভাই। তার বাইরে স্ত্রী ও দুই সন্তান । নয় বছর বয়সী মেয়ে রোবায়দা ইসলাম ঈউকি আর ছয় বছরের ছেলে তাহসিন ইসলাম নিহন।
যুগের চিন্তা: অবসর কাটান কেমন করে?
আমি পাখি প্রেমিক মানুষ। পাখিগুলোর দেখাশোনা করি। তার বাইরে লং ড্রাইভে যেতে পছন্দ করি পরিবারের সঙ্গে। লং ড্রাইভে গেলে সাধারণত আমিই ড্রাইভ করি। ড্রাইভারকে দেই না।
যুগের চিন্তা: রাজনীতিতে ব্যর্থতা আর সফলতার কথা বলুন।
এখন পর্যন্ত তেমন ব্যর্থতা নেই। তবে কর্মীদের জন্য ইচ্ছে অনুযায়ী কিছু করতে পারি না। এটাই ব্যর্থতা। আর সফলতা হলো দলের জন্য কাজ করতে পারছি। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক হলাম, মানুষ চেনে, ভালবাসে ,সালাম দেয় এইতো।
যুগের চিন্তা: আপনার দুটো খারাপ দিক সম্পর্কে বলুন।
হুটহাট রেগে যাই। এটা খুব খারাপ জিনিষ। আর. . . . এ মুহূর্তে একটা খারাপ দিকই মনে পরছে (হা হা)।
যুগের চিন্তা: রাজনীতিতে কার প্রতি সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ?
আমার মামার প্রতি। সে যদিও ক্যাডার পটলিটিক্স করতো। তখন এই রাজনীতিই প্রচলিত ছিলো সে জন্য এখন আমরা পারিবারিক ভাবে সাফারার। তাঁর প্রতিই আমি সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ। উনার জন্যই আমি এ যায়গায়।
যুগের চিন্তা: রাজনীতিতে কী পেলেন আর কী হারালেন?
প্রাপ্তি সম্মান, আর হারিয়েছি অনেক। নিজের মামা হারিয়েছি, পরিবারকে সময় দিতে পারিনি। মামলা মোকদ্দমার শিকার হয়েছি।
যুগের চিন্তা: নেতাকর্মীদের প্রতি যদি কিছু বলতে চান।
যে কোন উপায়ে হোক মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। রাজনীতিতে একটা পট পরিবর্তন আসা উচিৎ। সেজন্য যে লড়াই হবে সেই লড়াইয়ের জন্য সকলে প্রস্তুত থাকুন।
যুগের চিন্তা: দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে কোন আহ্বান জানাতে চান?
আল্লারস্থে গ্রুপিংটা বন্ধ করুন। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আপনার যেমন আচরণ করছেন এটা কোনভাবেই উচিৎ না। মহানগর বিএনপি নেতারাতো সৎ ছেলের মতো আচরণ করছেন। আপনাদের মা কারাগারে থাকলেতো এমনটা করতে পারতেন না।
যুগের চিন্তা: অসংখ্য ধন্যবাদ সময় দেয়ার জন্য। ঈদের শুভেচ্ছা নেবেন।
রানা: আপনাকেও ধন্যবাদ। ধন্যবাদ যুগের চিন্তা পরিবারকে। আর বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা।
- স্বদিচ্ছা আর সৎ সাহস থাকলে সবাই উন্নতি করতে পারে: আচল আহমেদ
- গরুর চোখের প্রতি আমার দূর্বলতা আছে : রাজিব
- গরুর গলায় দাম লিখে ঝুলিয়ে রাখতাম : রনি
- সেদিনের পর থেকে আজও ছাগলের মাংস খাইনা : হোসনে আরা বীনা
- কোরবানির কথা মাথায় আসলেই ভয় লাগে : আবুল কাউসার আশা
- পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারবো কী না শঙ্কা আছে : শাহেদ
- দাম যেই শুনেছে সেই বলছে ‘ভাই ঠকছেন’: মোরছালীন বাবলা
- কখনো কোরবানির পশুর হাটে যাওয়া হয়নি : সাংসদ হোসনে আরা বাবলী
- ঈদ সালামি এখন কেউ দিতে চায় না, তাই জোর করে নেই : শাহ নিজাম
- ছোটবেলার ঈদে হৃদয় ছোঁয়া আনন্দ ছিল : এড.আওলাদ
- বাবা হাটে যাওয়ার পর রেললাইনে গিয়ে অপেক্ষা করতাম : অ্যাডভোকেট পলু
- বাবা-চাচা কেউই বেঁচে নেই, আমিই এখন অভিভাবক : আলেপ উদ্দীন
- এবার পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে চাই : খোরশেদ
- গরুর লেজ দিয়ে তৈরী রেসিপি আমার খুবই পছন্দ : কাউন্সিলর রুহুল আমি
- নেত্রী কারাগারে আলাদাভাবে তেমন কোন পরিকল্পনা নেই : গিয়াস উদ্দিন