বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

শীতলক্ষ্যার বুকে পালতোলা নৌকা, মাঝিদের দৈন্যদশা!

প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০১৯  

শাহজাহান দোলন (যুগের চিন্তা ২৪) : অবহমানকাল থেকেই নদীমাতৃক বাংলার বুকে যাতায়তের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে মানুষের জীবনের সাথে জড়িয়ে রয়েছে এদেশের বিভিন্ন নৌকাগুলো।  


ইতিহাসের পাতা ঘেটে বলা যায় এক সময় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় শতাধিক ধরনের নৌকা ভেসে বেড়াতো বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীগুলোর মধ্যে। এর মধ্যে পালতোলা নৌকা অন্যতম। 


কিন্তু বর্তমান সময়ে নৌযানগুলোতে প্রযুক্তির নানান ছোঁয়ায় যেন, হারিয়ে যেতে বসেছে সনাতন পদ্ধতিতে তৈরী পালতোলা নৌকাসহ  বিভিন্ন কাঠের নৌকাগুলো। গভীর গ্রাম কিংবা হাওড় অঞ্চল ছাড়া মূলত এসব নৌকা চোখে পড়েনা।  


তবে এখনও নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে চলাচল করছে বিভিন্ন রঙের পালতোলা নৌকা। এ রং বে-রঙের পালতোলা নৌকা একটি আকর্ষনে পরিণত হয়েছে লক্ষ্যাপাড়ের দু’দিকের মানুষের মধ্যে ।


শনিবার (২৪ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত শীতলক্ষ্যা কদমতলী ঘাট থেকে বন্দরের মাহমুদ নগর ঘাটে যাত্রীদের পাড়াপাড়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে নৌকার মাঝিরা।


এ সময় সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, শীতলক্ষ্যার পাড় ঘেষে গড়ে ওঠা কদমতলীর ঘাটে যাত্রীদের চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যাই বেশি থাকে।

অন্যদিকে বাংলার লোক সাহিত্য, শিল্প-সংষ্কৃতির অবিচ্ছেদ্য এক অংশ ভাটিয়ালি গানের রাজা নৌকার মাঝিরা জানান, অন্যান্য ঘাঁটগুলোতে ইঞ্জিন চালিত নৌকা থাকায় এখন কেউ পালতোলা নৌকায় নদী পারাপার হয়না। তাই আয় রোজগারও কমে গেছে তাঁদের।


মাঝি আলম মিয়া জানান, এক সময় নৌকা ছিলো যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। কদরও ছিলো অনেক। পাল তোলা নৌকা ছিলো তখন জনপ্রিয় নৌকা। কিন্তু যন্ত্রওয়ালা নৌকার বের হওয়ার কারণে নৌকা চল এখন নেই বললেই চলে। তবুও চালাই। 


আমরা কেবল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্তই এই ঘাটে নৌকা চালাই। এই নৌকাতে সময় বেশি লাগায় যাত্রীদের সংখ্যা খুব কম! সবাই এখন অন্য ঘাট দিয়ে ইঞ্জিনের নৌকায় নদী পাড় হয়। যাও কয়েকজন আসে এরা ঘুরতে আসে। এ দিয়ে কি হয়? দিন শেষে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা থাকে। আর ছোটবেলা  থেকে এই পেশার সাথে জড়িত থাকার কারনে এটা বন্ধও করতে পারিনা!


পালতোলা নৌকা দেখতে আসা তাহমিনা আক্তার নামে এক স্কুল ছাত্রী বলেন, আমি কিছুদিন আগে ফেসবুকে এই নৌকার ছবি দেখে আজকে সরাসরি চলে এলাম দেখার জন্য। 


নৌকায় চড়লাম প্রচন্ড ভালো লেগেছে। কিন্তু এটা ভেবে খারাপ লাগছে এ নৌকা তেমন বেশি দেখা যায় না। হারিয়ে যাচ্ছে। এ সকল ঐতিহ্যে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
 

এই বিভাগের আরো খবর