মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

শামীম ওসমান সমর্থন করেছেন, কোন ছাড় নেই : এসপি হারুন (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেছেন, আমরা মনে করি নারায়ণগঞ্জে যেসকল সমস্যাগুলি আছে তার মধ্যে মূল সমস্যা হচ্ছে মাদক। 


আমরা মাদক ব্যবসা, ভূমিদস্যু, চুরি, গড ফাদার ব্যবসা এসবের  বিরুদ্ধে অভিযান ঘোষনা করছি। যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি সেখানেই যাচ্ছি। আমরা কিছু কিছু মাদক ব্যবসায়ী গডফাদাদের ধরতে পারি না, তবে কিছু মাদকসেবী লোককে আমরা গ্রেফতার করেছি। 


আমাদের এ অভিযানে সদরের এমপি শামীম ওসমান আমাদেরকে সমর্থন করেছেন। উনি নিজেও কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় মাদকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আজকে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা আমাদের সমর্থন করছেন। সাংবাদিকরা আমাদের সমর্থন করছেন। 


সুতরাং আপনারা যারা পর্দার অন্তরালে মাদক ব্যবসা করবেন, ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও গড ফাদার ব্যবসা করবেন আর বড় ভাইয়ের হুমকি দিবেন সেটা হবেনা। আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব এবং সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। 


আমরা প্রতিটা থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বার্ত াপাঠিয়ে দিছি যেসকল পুলিশ সদস্য মাদক সেবনকারী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে জড়িত তাদেরকে আমরা ডোপ পরীক্ষা করব। যদি তার রক্তের মধ্যে মাদকের কোন আলামত প্রমানিত হয় তাহলে রসসকল পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। মাদক সেবন করে এরকম লোক বা পুলিশ সদস্যকে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিতাড়িত করব। 


শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুর ১২টায় চাষার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে পুলিশ মেমোরিয়ল ডে উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 
এর আগে নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ, ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশ-৪ ও র‌্যাব-১১ সহ বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে পুলিশ কার্যালয় থেকে একটি র‌্যালী বের হয়ে নগরীর শহদী মিনারে এসে শেষ হয়। 


এ সময় পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জে সেভেন মার্ডার হয়েছে এরকম আরো অনেক আলোচিত ঘটনা ঘটেছে এর মূল কিন্তু একটা বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড। উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই মাদক ব্যবসা, চুরি ব্যবসা, জমি ব্যবসা, গড ফাদার ব্যবসা ও নানা অপরাধ কর্মকান্ড করা। যারা বিভিন্ন এলাকার গডফাদাররা এসব কর্মকান্ডে পশ্রয় দিচ্ছেন তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছি।  যখনই হাতে নাতে প্রমান পাবো কারো কথা শুনবোনা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। 


তিনি আরো বলেন, কিছু পুলিশ সদস্য সাধারণ মানুষের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে তাদেরকে হয়রানি করে তাই আমাদের অভিযান শুধু মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নয় ওই সকল পুলিশ সদস্য যেসকল পুলিশ সদস্য সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের এ অভিযান। 


এ সময় পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, প্রতি বছর পুলিশ মেমোরিয়াল ডে পালন হচ্ছে। যেসকল পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় মারা যায় সেসকল পুলিশ সদস্যদের স্মরণে আমরা এই দিনটি পালন করে থাকি । 


আজকে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে উপলক্ষে র‌্যালী করেছি ও যেসকল পুলিশ সদস্য শহীদ হয়েছে তাদের সরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছি। এই দিনটি আমাদের পালন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে যেসকল পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারা গেছেন এই বীর শহীদের স্মৃতি ধারণ করে তাদের স্মরণ রাখা। 


মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বলেন, মাদকের সাথে কিছু কুচক্রী মানুষ আছে যাদের বিরুদ্ধে আমারা সঠিক প্রমান পাচ্ছি না কিন্তু তারা যে মাদক ব্যবসা করে সে অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। আমরা পুলিশ সদস্যরা ওই সকল মাদক ব্যবসায়ীদের সর্ম্পকে তথ্য নিচ্ছি এবং তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছি ।


ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে এসপি হারুন বলেন, ইতিমধ্যে আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি যারা মানুষের বাড়ি ঘর দখল করে নিয়ে যায় সেই ভূমিদস্যূর বিরুদ্ধেও অভিযান চালাচ্ছি । নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন এলাকার ভূমিদস্যুর তথ্য আমরা নিচ্ছি । 


এক সময় মানুষের বোধশক্তি কম ছিল কথাবলার সাহস পেতনা তারা কিন্তু এখন আমাদের কাছে আসছে আমার সে সুযোগ করে দিচ্ছি। আমরা বিভিন্ন এলাকায় বলে দিয়েছি যারা মাদক ব্যবসা করে এবং ভূমিদস্যু করে আমরা যখনি হাতে নাতে প্রমান পাব আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোঠর ব্যবস্থা নিব ।


মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আমাদের কিছু কিছু পুলিশ সদস্য জড়িত আছে। যেসকল পুলিশের বিরুদ্ধে আমরা এমন অভিযোগ পাচ্ছি তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। 


ইতিমধ্যে আমরা কিন্তু অনেক পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করেছি। আমরা চাই কোন পুলিশ সদস্য যদি যেকোন অপরাধের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হক । ভূমিদস্যুকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য কিন্তু আমরা বন্দরের ওসিকে ক্লোজ করেছি। 


চাষারা থেকে পাগলা পযন্ত বিভিন্ন স্থানে অবৈধ স্ট্যান্ড স্থাপনা আমরা এর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিবো। চাষারা মোড় থেকে সাইনবোর্ড পযন্ত বিভিন্ন স্থানে কাটা রয়েছে আমরা আস্তে আস্তে এর ব্যবস্থাও নিব। 


পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, একসময় নারায়ণগঞ্জে ডিবির অপতপরতা ছিল বিভিন্ন থানায় সিভিল টিমের অপতপরতা ছিল আমরা কিন্তু ডিবির অপতৎরাত বন্ধ করেছি প্রত্যেকটা থানার সিভিল টিম বন্ধ করেছি এর উদ্দেশ্য কিন্তু একটায় ওই সব সিভিল টিমের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে সাধারণ অভিযোগ এসেছে। আমাদের আড়াইহাজার পুলিশের মধ্যে সামান্য কিছু পুলিশ সদস্য অপরাধ করবে বলে আমরা কিন্তু তাদেরকে ছাড় দিচ্ছিনা ।


এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন), মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, (অপরাধ), মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, (ডিব) মোহাম্মদ নুরে আলম, (ডিএসবি) মোঃ ফারুক হোসেন, (ক সার্কেল) মোঃ ইমরান সিদ্দিকী, (খ সার্কেল) মোঃ খরশেদ আলম, (গ সার্কেল) মোঃ আনিচ উদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্র সাহা, (ট্রাফিক) মোঃ আব্দুর রশীদ, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামরুল ইসলাম, ফতুল্লা থানার শাহ মোঃ মুঞ্জুর কাদের, সিদ্দিরগঞ্জ থানার মীর শাহীন শাহ পারভেজ, বন্দর থানার মোঃ রফিকুল ইসলাম, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক হাবিবুর রহমানসহ জেলার বিভিন্ন স্তরের পুলিশ সদস্য বৃন্দ । 

 

এই বিভাগের আরো খবর