শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

শহরে ফেরি পারাপারে গতি নেই

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২০  

জহিরুল হক (যুগের চিন্তা ২৪) : শীতলক্ষ্যা নদীর নবীগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ পয়েন্ট দিয়ে যানবাহন পারাপারের জন্য গত দু’বছর আগে দুটি ফেরি চালু করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ)। এ সময় বেশ কয়েকদিন, বহু যানবাহন ভালো ভাবেই পারাপার হয়েছিলো এই ফেরি দুটি দিয়ে। 

পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছিলো সড়ক পথে বন্দর বাসীর সঙ্গে মূল শহরের বাসীন্দারের চলাচলও। তবে হাজীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ ঘাটে চলাচলরত দুটি ফেরির মধ্যে বর্তমানে একটি বন্ধ। ফলে একটি মাত্র ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপারে ভোগান্তী পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এতে নদী পারাপারের জন্য যানবাহনগুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এছাড়া, ঘাট সংলগ্ন এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।

হাজীগঞ্জ ঘাটে সানাউল্লাহ নামে এক অটো রিক্সার চালক বলেন, প্রথমে দিকে ৭ আর ১১ নম্বর দুইটি ফেরি চলত এই ঘাটে তখন আমরা গাড়ি নিয়ে দ্রুতই নদী পাড় হতে পারতাম। কারণ তখন একটা ফেরি যাইতো অন্যটা আসতো। কিন্তু এখন চলে মাত্র একটা, আরেকটা নষ্ট।  তাই ৪০ মিনিট আবার কখনো  এর বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় নদী পার হওয়ার জন্য।

বন্দর নবীগঞ্জ এলাকার বাসীন্দা রোকনউদ্দিন বলেন, যেই পরিমাণে যানবাহন আসে এই ঘাট দিয়ে পারাপারের জন্য। একটি ফেরি তা পারাপারের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই যানবাহনগুলো বসে থাকতে থাকতে এখানে যানজট লেগে যায়। তাই দ্রুত অন্য অরেকটি ফেরি চালু করা দরকার।

এ বিষয়ে চলাচলতর ৭ নম্বর ফেরিটির সুপারভাইজার মোহাম্মদ সিদ্দিক বলেন, আপাতত আমাদের এই ঘাটে একটি ফেরিই চলছে। এর কারণ আমার জানা নেই। আমি এখানে অন্য আরেক সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালন করছি, তাই এ বিষয়ে সেই ভালো বলতে পারবে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন বলেন, নবীগঞ্জ-হাজীগঞ্জ রুটে যেই ফেরি দুটি চলে তার মধ্যে একটি খুব সম্ভবত যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চলছেনা। তবে সেটা খুব দ্রুতই মেরামত করে আবার চলাচলের উপযোগি করা হবে।

অন্যদিকে, বিভিন্ন যানের মাধ্যমে পন্য পরিবহন এবং সাধারণ মানুষের যাতায়তের জন্য হাজীগঞ্জ ঘাটের মতো ৫ নং খেয়াঘাটেও ফেরি সার্ভিস চালু করেছিলো সড়ক ও জনপদ বিভাগ। তবে এই ঘাটে দিয়ে পর্যাপ্ত যান পরিবহন না করতে পারায় অর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে ফেরিটি সরিয়ে নিয়েছে কতৃপক্ষ।

কিন্তু আশেপাশের এলাকার লোকজনের দাবি এখানকার মানুষের ব্যবসায়িক দিক বিবেচনা করে হলেও এই ঘাটে একটি ফেরি রাখা প্রয়োজন। আব্দুল মান্নান নামে এক হোসিয়ারী ব্যবসায়ী জানান, আমি এই ফেরি চালু হতে দেখে বন্দর ইস্পাহানি এলাকাতেই আমার প্রতিষ্ঠান শুরু করি। 

ফেরি দিয়ে ভালো ভাবেই মালামাল আনা নেয়া করতাম কিন্তু হঠাৎ ফেরি বন্ধ। এখন তো আবার আগের মতোই কষ্ট হচ্ছে নদী পারাপারে। তাই আমাদের ব্যবসার কথাটা চিন্তা করে যাতে সরকার এই ঘাটে আবার একটি ফেরি চালু করে। এটাই আমার চাওয়া।

আর (সওজের) উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন এ বিষয়ে জানান, ৫ নং ঘাট দিয়ে যেই ফেরিটা  চলাচল করতো। সেখানে ওটার তেলের পয়সাও পাওয়া যেতো না। কারণ যানবাহন কম ছিলো ঐ জায়গাটা দিয়ে তাই আমরা অর্থিক ক্ষতির বিষয়টা আমাদের ৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমানকে জানাই। তখন তিনি বলেন আচ্ছা তাহলে বন্ধ করে দিন।

সওজের উপ-প্রকৌশলি হাসান বলেন, হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ ফেরি ঘাটের সচল ফেরিটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে ফেরির পারাপার করছে। ফেরির নিচের পাটাতন ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় ভিতরে পানি জমে থাকে। যা কিছুক্ষণ পর পর পানি বের করা জন্য পানির পাম্প বসিয়ে পানি সরানো হচ্ছে। 

তাই ৭ নাম্বার ফেরি ইঞ্জিন পরির্বতন করে ২৫ নাম্বার ফেরির ইঞ্জিন স্থান্তর করে ফেরি পরির্বতন করা হবে। এই রুটে  একটি নতুন ফেরি দেয়া হবে, যা বর্তমান ফেরি থকে আরও বেশি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন। শুধু তাই না নারায়ণগঞ্জে বেশ কিছু ঘাটে আমরা নতুন ফেরি দেয়ার জন্য। আবেদন করা হয়েছে হাজিগঞ্জÑনবীগঞ্জ ঘাট একটি, বক্তাবলিতে একটি ফেরি, আড়াইহাজারে দুইটি, রসুলপুরে একটি।
 
এছাড়া ৫নং খেয়াঘাটÑময়মনসিংহ পট্টি ফেরী ঘাট বন্ধ হবার কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, হাজিগঞ্জÑনবীগঞ্জ ঘাটটি সরাসরি এপার ওপার দেখায় যায় ফেরির অবস্থান। কিন্তু ৫ নং ঘাটে শাপের লেজের মত প্যাঁচের মত থাকায় এপার থেকে ওপার ফেরি দেখা যায় না। 

তার মধ্যে পরিবহনগুলোকে দুই পারে টোল দিতে হয়। বিআইডব্লিউটিএ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে টোল দিতে হয় তাদের। তার জন্য কিছুটা পরিবহন পারাপার কমে যায়। যার কারণে ৫নং আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ঘাটটির ফেরি বন্ধ করে দেয়ার জন বলেন।  
 

এই বিভাগের আরো খবর