শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

লিংকরোডের রোড-ডিভাইডার যখন মরণ-ফাঁদ

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের চাষাঢ়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত যানজট নিরসনে রোড ডিভাইডার (সড়ক বিভাজক) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যানজট নিরসনের এই ডিভাইডারগুলোই এখন সড়কের মরণ ফাঁদে রূপান্তরিত হয়েছে।


মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরত্বের লিংক রোডের ডিভাইডারের প্রায় অর্ধশতাধিক পয়েন্টে ফাঁকা ছিল। ডিভাইডারের ফাঁকা অংশ দিয়ে উল্টো পথে যাতায়াতের কারণে সড়কে যানজট লেগেই থাকত। যানজট নিরসনে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় ডিভাইডারের ফাঁকা অংশে কংক্রিটের ব্লক দেওয়া হয়। মানুষের উপকারে ডিভাইডারে ব্লক  দেওয়া হলেও ব্লকগুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

 

ডিভাইডারের অধিকাংশ পয়েন্টে কংক্রিটের ব্লক সড়কের দুইপাশে উলটে-পালটে পড়ে থাকে। যার ফলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।


সরেজমিনে দেখা যায়, লিংক রোডের অধিকাংশ পয়েন্টের ডিভাইডার ব্লক গুলো সড়কে এলোপাথাড়িভাবে পড়ে আছে। ডিভাইডারের ব্লক ছেড়ে রাস্তায় পড়ে আছে। কয়েকটি ডিভাইডারের ব্লক সড়িয়ে সড়কের একপাশ থেকে অন্যপাশে রিক্সা, মোটরসাইকেল সহ ছোট ছোট যানবাহনে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সড়কে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও তাদের সামনেই ডিভাইডার ব্লকের মাঝ দিয়ে একপাশ থেকে অন্যপাশে গাড়ি চলে। পুলিশের চোখ পড়লেও নেই কোন সমাধান। অন্যদিকে যাত্রীদের মাঝে বিরাজ করছে মৃত্যুঝুঁকির আতঙ্ক।


জানা গেছে, কিছু সংখ্যক ছোট গাড়ির চালক ও ব্যবসায়ীরা তাদের গাড়ি নিয়ে ব্লক সড়িয়ে দ্রুত যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। অন্যদিকে এরূপ ডিভাইডার পয়েন্টের অধিকাংশ স্থানে ট্রাফিক পুলিশ বক্স রয়েছে। তাদের নজরের সামনে ব্লক সড়াতে দেখেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।


এই রোডে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহনে লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে। গাড়ি ডিভাইডার ঘেঁষে চলে। রাস্তায় পড়া ডিভাইডার ব্লক গাড়ির  চালকের নজরে না পড়লেই ঘটবে প্রাণহানির মতো মারাত্মক দুর্ঘটনা।


ঝালকুড়ির বাসিন্ধা তারেকের সাথে এই বিষয়ে কথা হলে প্রতিবেদককে বলেন, লিংক রোডের মাঝে ডিভাইডারের ব্লকগুলো প্রায় সময়ই রাস্তায় পড়ে থাকে। রাস্তায় কোন বাতি নেই। গাড়ি ডিভাইডারের পাশ দিয়ে চলে। গাড়ির সাথে ব্লকে ধাক্কা লাগা খুবই স্বাভাবিক। সেদিনই শুনলাম অটোরিকশা ধাক্কা লাইগা পড়ে গেছে। বিপরীত পাশ থেকে ওই সময় গাড়ি আসে নাই নয়ত সেদিন গাড়ির সবাই মারা যাইতো।


তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন বলেন, আমাদের ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে ডিভাইডারের ব্লক পড়ে আছে। রাতের বেলা এই রোডে যে স্পিডে গাড়ি চলে চালকের নজরে না পড়লেই ব্লকের সাথে ধাক্কা লাইগা গাড়ি উল্টাইবো। আমরা অনেক সময় দুই একটা পড়ে থাকতে দেখলে আগে উঠায় দিতাম। কিন্তু এখন তো দেখি ৫-৬ টা ব্লক পড়ে থাকে। সবসময় তো এতা ভারি ভারি ব্লক তোলার সময় থাকে না। ব্লক সরাইয়া গাড়ি এই পার থেকে ওপারে নেওয়ার রাস্তা বানাইছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দোকানদার বলেন, সবাই সবার প্রয়োজনমতো ব্লক সড়াইয়া ডিভাইডার ফাঁকা করে নিজের কাজ করে। দেখে সবাই, পুলিশের সামনেই ব্লক সড়ায় অনেকে কিন্তু পুলিশ কিছুই বলে না।


নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দিন আহমেদ এই বিষয়ে  বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে ডিভাইডের একাধিক পয়েন্ট ফাঁকা ছিল। যানজট নিরসনে সেখানে ডিভাইডারের কংক্রিটের ব্লক দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সড়কে ব্লক পড়ে থাকলে সেই ব্লক উঠিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে ব্লক যেন রাস্তায় না পড়ে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর