শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা কার্ড স্থানান্তরে কালক্ষেপণ,অবহেলার অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নারায়ণগঞ্জে অবহেলার দরুণ ৬  মাস যাবৎ ভাতা পাচ্ছেন না ১৫ জন মৃত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুতে সম্মানিভাতা প্রাপ্য তার উত্তরাধীগণ। সে হিসেবে সব নিয়মনীতি মেনেই ভাতা পাওয়ার আবেদন করেন।

 

তবে ভাতা কার্ড স্থানান্তরে ধীর গতি হওয়ায় এবং ৬ মাসের মতো অস্বাভাবিক সময় লাগায় এতে পরিবার নিয়ে তীব্র কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। 


বক্তাবলীতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য চিকিৎসা করাতে করাতে প্রায় নিঃস্ব। এই ভাতা দিয়েই পরিবারের বাকিরা দিনাতিপাত করতো। কিন্তু শুধুমাত্র অবহেলার কারণেই তাদের সকলকে এই কষ্ট করতে হচ্ছে।

 

জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা কার্যালয় এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সমন্বয় হতে দেরী হওয়ায় এ ভাতা কার্ড ট্রান্সফার হতে বিলম্ব হচ্ছে। ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য কেউ এই ভাতা কার্ড এখনো পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। 


সদর উপজেলার শীতলক্ষ্যা এলাকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী নাম প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরপরই আমি সব নিয়মনীতি মেনে আবেদন করেছি। কয়েক মাস যাবৎ আমরা ভাতা পাচ্ছি না।

 

আমাদের পরিবারের সদস্যরা পরিবার এই ভাতার উপর নির্ভরশীল। সামনে অন্ধকার ছাড়া এখন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। সবাই শুধু আশ্বাস দিচ্ছে। কিন্তু সবকিছু আশাতেই থেমে আছে। ৬ মাস সময় লাগাটা অস্বাভাবিক, এটি করতে একমাসের বেশি সময় লাগার কথা না।’


সদর উপজেলার ভাতা কার্ড স্থানান্তরের জন্য আবেদন করা এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জানান, গেলো ৫ মাস যাবত ভাতা পাচ্ছি না। আবেদন করে দিয়েছি সাথে সাথে। কর্তৃপক্ষের কাছে জেনেছি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তা বন্ধ রাখা হয়েছে। এটি অবিলম্বে চালু না হলে আমরা কিভাবে সংসার চালাব জানি না।


ভাতা কার্ড টান্সফারের আবেদন করেছেন এমন এক মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা জানান, মারা যাওয়া ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে প্রথম জন মারা যান সেই এপ্রিলে।

 

শুধু ভাতা ট্রান্সফার হতে যদি ৬ মাস সময় লাগে তাতে তার পরিবারের সদস্যরা যারা শুধুমাত্র এই ভাতার উপর নির্ভরশীল তারা চলবে কি করে তা ভাববার কেউ নেই। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা তার পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দিতে অবহেলা করছে বিধায়ই এমনটি হচ্ছে। 


নারায়ণগঞ্জ সমাজসেবা বিভাগের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত এবং  জোর চেষ্টা চালাচ্ছি যাতে করে তারা অবিলম্বে এ ভাতা পেতে পারেন। সাধারণত একাজে ১ মাসের মতো সময় লাগে।

 

তবে উপজেলাগুলোতে মিটিং শেষে আমাদের কাছে কাগজপত্র আসতে সময় লাগলে তাতে আমাদের কিছু করার নেই। তারা যদি দ্রুতসময়ে পাঠানোর পর আমরা ১৫/২০ দিনের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে পারি। 


সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাজাহান ভূঁইয়া জুলহাস বলেন, আমাদের উপজেলা মিটিংয়ে সবকাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই  মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষে আবেদনকারীরা ভাতা পেয়ে যাবেন। তবে এতোটা সময় লাগার কথা নয়।


জেলা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক এড.নুরুল হুদা বলেন, ‘৮ সেপ্টেম্বর জেলা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা প্রণয়ন কমিটির মিটিং এই সিদ্ধান্ত  চূড়ান্ত হয়েছে।

 

তাছাড়া নতুন দুইজন ভাতাকার্ড পাওযার আবেদন করেছে যাদের ব্যাপারে কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নতুন বরাদ্দ  পেলে তাদের সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহিত বলে মিটিং এ চূড়ান্ত হয়েছে।’  

এই বিভাগের আরো খবর