মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

মুসলিমনগর ফের অশান্ত !

প্রকাশিত: ১৬ মে ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ফতুল্লার মুসলিমনগরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে দ্বন্ধ দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। দলীয় কর্মকান্ডসহ এলাকার নানা বিষয়ে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ মান্নান, থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শরিয়ত উল্লাহ বাবু, যুবলীগ কর্মী সোহেল মিয়া ও ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান টিটুর সাথে দ্বন্ধ প্রকাশ্যে আসছে। 


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাবু ও টিটু ছাত্রলীগ নেতা মান্নানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে প্রতিবাদ করছে। অপরদিকে ডিশ লাইসের ব্যবসা নিয়ে অর্থ আত্মসাৎতের বিষয়ে মান্নানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যুবলীগ নেতা সোহেল মিয়া। 


তবে মুসলিম নগরের ছাত্রলীগ নেতা এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগের পরও নীরব ভুমিকা পালন করছেন তিনি। কোন কথারই পাল্টা প্রতিউত্তর নেই তার। তবে বিরোধী শিবিরের ফেসবুকে প্রতিবাদে মান্নান সমর্থকদের মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করতেও দেখা যায়। 


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে খলিলুর রহমান টিটু লিখেছেন, নৌকা কারো পৈত্রিক বা ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। নৌকা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির। নৌকার সুফল কারো হাতে কুক্ষিগত করে রাখতে দিবোনা। নৌকার সুফল  পৌছে যাবে প্রতিটি  নৌকার সমর্থকদের কাছে। 


কোন অদু বদু চদুদের কাছে আর একটা সাধারণ মানুষের অধিকার ও ক্ষুন্ন হতে দিবোনা। ক্ষমতার অপব্যবহার অনেক সহ্য করেছে এনায়েতনগর ৩নং ওয়ার্ডের তৃনমূল নৌকার সাধারণ কর্মীরা,আর নয়। এখনো সময় আছে বন্ধ করো পরের মাথায় কাঁঠাল  ভেঙে খাওয়ার চিন্তাভাবনা। অনেকের হিসেব বাকি খাতায় রয়ে গেছে। যে  কোন সময় হালখাতার অনুষ্ঠান হয়ে  যেতে পারে।’


টিটুর পোষ্টের কমেন্টেসে শাহাদাৎ হোসেন হৃদয় লিখেছেন ‘ভাইজান এখনি উপযুক্ত সময় ঐ সব খারাপ মানুষদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর। যারা সাধারন মানুষকে বোকা বানিয়ে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এখনি যদি ওদের নির্মূল করা না যায়,তাহলে এরা আরো জঘন্য ধরনের কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করবে না। অচিরেই এদের বিনাশ হবে ইনশাআল্লাহ।’


টিটু আরো একটি পোষ্টে লিখেন,‘এম.এ মান্নানের মতো  লোক  যে সমাজে থাকবে সেই সমাজে আমি টিটুর মতো দুই/চার/বিশ জনের নামে মিথ্যা মামলা হওয়াটা কি স্বাভাবিক নয়..?’ কারন আমাদের মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করতে পারলেই তো ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে নিজের পকেটে কিছু টু পাইস ঢুকে মান্নাদের মতো লোকদের। তারা আবার নিজেদের অহংকার উপাধি দেয়। 


লজ্জা,লজ্জা,লজ্জা লাগে এদের মতো কলংকিত ব্যক্তিদের নির্লজ্জতা ভাব দেখে। পুলিশের দালালী করে যে নিরিহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করতে চায় সে কি মানুষ নাকি? সে সমাজের কীট।’ টিটু তার নিজের ফেসবুক পোষ্টে আরো লিখেন,‘আসলে কি মুসলিম নগরের অহংকার,নাকি মুসলিম নগরের কলংক এম,এ মান্নান জানতে চাই ?’

 

এই পোষ্টের প্রউত্তরে মান্নানের পক্ষে জুয়েল লিখেছেন ‘দলের নাম ব্যবহার করস তোরা। তোরা দলকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটে পুটে খাস। ব্যাটা ৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি তারপরও তগো হিংসা হয়? কালো টাকায় তোদের সাহস অনেক বেড়ে গেছে। শয়তানের ক্ষমতা  শেষ  তোদের কালো টাকার ক্ষমতা বেশি দিন থাকবো না।’


সালাউদ্দিন এই পোষ্টে লিখেছেন,মান্নান কি ভাল মানুষ নাকি। সে আসলেই মুসলিম নগরের কলংক। মুসলিম নগরে তার কি অবদান আছে ? 
সম্প্রতি ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শরিয়ত উল্লাহ বাবু তার ফেসবুক পোষ্টে লিখেছেন ‘ছাত্রলীগের ছত্র ছায়ায় পুনরায় উজ্জিবীত হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত শিবির। লজ্জা হয় আমি একজন ছাত্রলীগের কর্মী। যে কোন সময় মরন ছোবল। সাবধান! আওয়ামী পরিবার। হয় মর না হয় মার।


যুবলীগ নেতা সোহেল সৈকত বাবুর পোষ্টের উত্তরে লিখেছেন,‘কথাটা শুনে ভাল লাগলো। কারন সত্যিটা এখন কেউ আর শিকার করে না। তাই এদের মত দালালদের কিছু একটা করা দরকার। তা না হলে সুবিধাবাদীরা একদিন বড় কিছু খেয়ে ফেলবে।’


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএম মান্নানের বিরুদ্ধে  বিভিন্ন অভিযোগ হলেও তিনি এর কোন প্রতিউত্তর করেননি। তবে কার বলয়ের লোকজন মাঝে মধ্যে মান্নান বিরোধীদের পোষ্টে কমেন্টস করেন। অপরদিকে,মুসলিম নগর নয়াবাজার এলাকার ডিশ ক্যাবল ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া বলেন, ডিশ ব্যবসা নিয়ে দুই পার্টনারের সাথে হিসেবের গড়মিল রয়েছে। 

 

একাধিকবার পার্টনার বিল্লাল ও দেলোয়ারকে হিসেব দিতে বল্লে,তারা জানায় সমস্ত হিসেব নেতা মান্নানের কাছে। মান্নানকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সে কোন কথাই বলে না।  নিজের টাকা দিয়ে ব্যবসা করবো কিন্তু টাকা যাবে মান্নানের কাছে এমনটাতো হতে পারে না। এ বিষয়ে একাধিকবার বসার তারিখ দেয়ার কথা বলা হলেও মান্নান বসাতে রাজি হয়নি। মুসলিম নগরের মানুষ কি  নেতা মান্নানের কাছে জিম্মি থাকবে ? 


এব্যাপারে শরিয়ত উল্লাহ বাবু বলেন,ছাত্রলীগ নেতা মান্নান জামাত শিবিরের সাথে আঁতাত করে অনেক আগে থেকেই চলা ফেরা করেন। মুসলিম নগরে আওয়ামীলীগ,ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ অঙ্গদলের অনেক নেতৃবৃন্দ রয়েছে। কিন্তু মান্নান সমস্ত কিছু নিজের বলয়ে রেখে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। যা এক সময় নেতাকর্মীদের মাঝে বিস্ফোরণ ঘটবে। 


এব্যাপারে খলিলুর রহমান টিটু বলেন,এম.এ মান্নান মুলত কাশিপুরের বাসিন্দা। তিনি ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। কাশিপুরে বাসিন্দা হলে মুসলিমনগরকে তিনি ও তার লোকজন কুক্ষিগত করে রেখেছে। নৌকার পক্ষে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দ কাজ করেছেন। শুধু মান্নান এই এলাকায় নিজের ক্রেডিট নিতেই একের পর এক নানা বিতর্ক জন্ম দিচ্ছে। 


এব্যাপারে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মান্নান বলেন,কে কি করলো তা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই। আমার কর্মাকান্ড থানা আওয়ামীলীগ  নেতৃবৃন্দ ও মাননীয় সাংসদ শামীম ওসমান অবগত আছে। আমি যদি কোন অন্যায় কাজ করি তা গোপন করা যাবে না। এখন মিডিয়ার যুগ তাতো প্রকাশ্যে আসতো। যারা আমার বিরুদ্ধে বিষোধগার করছে তারা কি কারণে এমনটি করছে তা আমার জানা নেই। 


ডিশ ক্যাবলে আমি কোন পার্টনার নই। এখানে তিনজন পার্টনারের সাথে হিসেবের গন্ডগোল রয়েছে। এটা তারা  বসে শেষ করার কথা। কিন্তু তারা তা না করে সমস্ত দোষ তারা আমাকে দিচ্ছে। এ বিষয়গুলো পঞ্চায়েত প্রধান ফজলুল হক সরকার সাহেব অবগত  আছে। ২/৪ জনের কুৎসা রটানোকে আমি ভাল বা খারাপ কিছুই বলবো না। জনগনই সেই বিচার করবে। স্বার্থে আঘাত লাগলে অনেকেই অনেক কিছু বলে, তাই বলে আমার কি করার থাকবে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর