বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

মুসলিমনগর ঈদগাহ-কবরস্থান নিয়ে পাল্টা পাল্টা কমিটি !

প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : বছরের পর বছর ধরে ফতুল্লার এনায়েত নগরের মুসলিমনগর ঈদগাহ ও কবর স্থানের হিসেব ছিল একটি মৌখিক কমিটির কাছে।

 

সেই কমিটির সভাপতি ছিলেন কামাল উদ্দিন মাদবর ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ফজলুল হক সরকার। সমস্ত টাকা পয়সা তাদের দুজনের কাছেই ছিল। 

 

তবে এবছর মুসলিমনগরবাসী ৭১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন একটি কমিটি করে। এই কমিটির অনুমোদনের সময় কামাল উদ্দিন মাদবরসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন। সম্প্রতি  ঈদগাহে অনুদান উঠে ৩ লাখ টাকার উপড়ে। ঐ টাকা কামাল মাদবর নিজে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নতুন কমিটি তা দেয়নি। 

 

এতে কামাল উদ্দিন মাদবরসহ বেশ কয়েকজন ক্ষিপ্ত হয়ে গত শনিবার আরো একটি কমিটি গঠন করে। এ নিয়ে কয়েকদিন যাবৎ দুই কমিটির সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।  যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকাও রয়েছে বলে জানিেেয়ছে স্থানীয় সূত্র। 

 

ফতুল্লার এনায়েতনগরের একটি গ্রাম মুসলিম নগর। এই গ্রামে রয়েছে একটি কবরস্থান রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। প্রতিবছর স্থানীয়দের উদ্যোগে মুসলিম নগর বায়তুল আমান সরকারী শিশু পরিবারের মাঠে দুটি বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

 

ঈদ জামাতে কবরস্থান ও ঈদগাহের জন্য অনুদান দিয়ে থাকে স্থানীয়সহ মুুসুল্লীরা। বিগত প্রায় ১৫/২০ বছর যাবৎ মুসলিমনগর কবরস্থান ও ঈদগাহের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কামাল উদ্দিন মাদবর ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ফজলুলহক সরকার। তবে তাদের দায়িত্বে কালে কবরস্থানের অল্প কিছু কাজ হয়েছে।

 

১৫ বছর  চালিয়ে আসা কমিটি গত বছর ক্যাশে মাত্র ১৫ হাজার টাকা আছে বলে জানায় স্থানীয়দের। এ কারণে এক বছর আগে স্থানীয় জনসাধারনের দাবীর প্রেক্ষিতে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিও গঠন করা হয়। এই কমিটির তত্বাবধানে এবছর ঈদগাহে জামাতের আয়োজন করা হয়। 

 

এবার ঈদ জামাতে স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ এবং নামাজে আসা মুসল্লিরা অনুদান দেন। ঈদ জামাতের খরচ বাদে এ বছর ক্যাশে উদ্ধৃত রয়েছে ৩ লাখ ১৪ হাজার ৯’শ ২৮ টাকা। তবে এই টাকা নিয়ে পূর্বের কমিটির অনেকেই তুন করে কোন্দল শুরু করেছে বলে জানিয়েছে মুসলিম নগর এলাকাবাসী। 

 

মুসলিম নগর ঈদ উদযাপন ও কবরস্থান উন্নয়ন কমিটির বর্তমান সভাপতি আবুল কাশেম বলেন,জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সমবায়ী জামাল উদ্দিন সবুজ সাহেব কবরস্থানের উন্নয়নের জন্য বছর খানেক আগে একটি কমিটি করার পক্ষে মত দেন। তিনি আমাদের সাথে নিয়ে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও করে দিয়েছেন।

 

আগে একটি মৌখিক কমিটি ছিল। ঐ কমিটি ১৪/১৫ বছর যাবৎ ঈদ উদযাপন ও কবরস্থান উন্নয়ন কমিটির হয়ে কাজ করেছে। কিন্তু সময়ের দাবী ছিল একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন হওয়া।

 

সেই অনুযায়ী এলাকার মানুষের অংশগ্রহনে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয় রেজুলেশনের ভিত্তিতে। এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাতেন বাদলসহ কমিটির অন্য সদস্যরাও এবার বেশ খাটা খাটুনি করেছেন। 

 

এইবার ঈদ জামাতে মানুষ যে অনুদান দেয় তাতে খচর বাদ দিয়ে ৩ লাখ টাকারও বেশি জমা হয়েছে। কিন্তু একটি মহল এই টাকা কুক্ষিগত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। একটি কমিটির পরে পাল্টা কমিটিও কামাল উদ্দিন মাদবর গঠন করেছে। এতে করে একই এলাকার মধ্যে উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

 

বর্তমান কমিটির ক্যাশিয়ার বাদল মাষ্টার বলেন, আমরা নতুন কমিটি করার পর যে টাকা উদ্ধৃত দেখিয়েছি তাতে কবরস্থানের বাকি কাজগুলো করা যাবে। সাথে সাথে আরো কিছু উন্নয়নও করা হবে।

 

এই কমিটির পরে অন্য আরো একটি পাল্টা কমিটিও নাকি শনিবার কামাল উদ্দিন মাতবর সাহেব করেছেন। এতে করে এলাকার পরিস্থিতি অন্য রকমও হতেও পারে।  

 

এলাকাবাসী বলেন, আমরা ঈদগাহে নামাজে যাই। বছরে দুইবার অনুদান দেই। অনুদান দেই দেই আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য। কিন্তু কমিটি নিয়ে যা শুনছি তা দুঃখ জনক। উদ্ধৃত ৩ লাখ টাকার জন্যই কি এই পাল্টা পাল্টি কমিটি কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। 

 

এ ব্যাপারে মুসলিমনগর সাত পঞ্চায়েত প্রধান ফজলুল হক সরকার, আগের যেই কমিটি ছিল সেই কমিটি ভালোই কাজ করেছে। তবে কাশেমসহ বেশ কয়েকজন একটি নতুন কমিটি করেছে। পূর্বের কমিটির না ভেঙ্গে নতুন কমিটি আইনত অবৈধ। 

 

এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে শনিবার একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে এখানে কামাল উদ্দিন মাদবরকে সভাপতি ও মনির হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এলাকার কয়েকশ মানুষের উপস্থিতিতে এই কমিটি করা হয়েছে। 

 

নতুন কমিটি নিয়ে কোন সংঘর্ষ হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,এমন হওয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না। আমাদের এলাকার মানুষ খুব শান্তি প্রিয়। কবরস্থান ও ঈদগাহ কমিটির মধ্যে যারা আছেন তারা কেউ উচ্ছৃঙ্খল নয়। 
 

এই বিভাগের আরো খবর