শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মিতালী মার্কেট নিয়ে আবারও উত্তেজনা, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

সিদ্ধিরগঞ্জ (যুগের চিন্তা ২৪) : সিদ্ধিরগঞ্জের মিতালী মার্কেট দোকানদার সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় দুই গ্রুপের মধ্যে ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। নির্বাচিত কমিটি থাকার পরও মো.লোকমান খানকে সভাপতি ও মো.জামান মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৭ সদস্যের তথা কথিত বুয়া কমিটি গঠন করায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নতুন কমিটির ৬ কর্মকর্তাকে না জানিয়ে কমিটিতে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ জানা গেছে। না জানিয়ে কমিটিতে রাখায় ওই ৬ কর্মকর্তা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। 


তথা কথিত নতুন কমিটির সহ-সভাপতি আবদুল হেকিম, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি সুমন কাজী, ক্রীড়া সম্পাদক মো.মহিউদ্দিন, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক এস এম সালাউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ও কার্যকরী সদস্য-মো. নূরুল ইসলাম অভিযোগ জানান, বহু অপকর্মের হোতা ভূমিদস্যু খ্যাত লোকমান খান, জামান মিয়া ও ফারুকগং তাদের না জানিয়ে কমিটিতে নাম দিয়েছে। 


তারা আরও বলেন, মার্কেটের অর্থ আত্মসাৎকারী জামান চক্রের সাথে আমরা নেই। তাদের না জানিয়ে কমিটিতে রাখা প্রতারণা বলে মনে করছেন । মার্কেটের একটি নির্বাচিত কমিটি বিদ্যমান। লোকমান ও জামান গংদের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ বেআইনী ও মার্কেট উন্নয়নের পরিপন্থী। তাদের এহেন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।


জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াছিন মিয়া সভাপতি ও হাজি ফেরদৌস আহমেদ সাধারণ সম্পাদক হয়ে ২৯ সদস্যের একটি নির্বাচিত কমিটি হয়। নিষ্ঠার সাথে ওই নির্বাচিত কমিটি কাজ করছে। নির্বাচিত একটি কমিটি থাকা সত্বেও মনগড়া আরেকটি কমিটি গঠন করায় দেখা দিয়েছে উত্তেজনা।

 

মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই কমিটির মধ্যে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।  কিসের ভিত্তিতে এই নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে জানতে লোকমান খান ও জামান মিয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়।


 নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানায়, নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে লাখ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মার্কেটের ৬ সস্রাধিক সদস্য। ১২ একর জমিতে গড়ে উঠা দেশের বৃহত্তম এই মার্কেটের নেতৃত্বের লড়াই আর মামলা হামালার জটলায় উবিঘ্ন দোকান মালিকরা। আদালতে গিয়েও নেতৃত্বের বিরোধ অবসান হচ্ছে না দুই যুগেও। ফলে দোকান কিনেও দখল বুঝে পাচ্ছেন না হাজার হাজার সদস্য। শুরু থেকে যারাই মার্কেটের নেতৃত্ব দিয়েছে তারাই করেছে অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাট করেছে দোকান বিক্রির কোটি কোটি টাকা।


অভিযোগ রয়েছে, মার্কেটের প্রতিষ্ঠাতা রফিকুল ইসলাম বহু লোকজনের জমি জবর দখল করায় মামলার কারণে বন্ধ রয়েছে ভবন নির্মাণ কাজ। মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশনের রায় মোতাবেক নারায়ণগঞ্জ শ্রম অধিদপ্তর গঠিত নির্বাচন কমিশনারের অধিনে ২০১৮ সালে ২৯ সদস্যের কার্যকরী পরিষদ নির্বাচিত হয়। ওই নির্বাচিত কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে নির্বাচন বাতিল দাবি করে সাবেক কমিটির লোকজন হাইকোর্টে পর পর তিনটি রিট করে। 

 

এক রিটকারী মো.জামানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে হাইকোর্ট রিট খারিজ করে দেয়। রিট খারিজ হওয়ার পর আইনী বাধা না থাকায় নির্বাচিত কমিটি কার্যক্রম শুরু করলে সাবেক কমিটির লোকজনের অনিয়ম দুর্নীতি আর কোটি কোটি টাকা লোপাট ধরা পড়ে। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা করা হয়। অর্থ লোপাটের অভিযোগ তুলে চলতি বছরের গত ১২ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করেছে বর্তমান হাজি ইয়াছিন মিয়ার নেতৃত্বাধিন কমিটির নেতারা। তার পরও সাবেক কমিটির লোকজন মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিভিন্ন ফন্দি ফিকির করছে।


বর্তমান কমিটির সভাপতি হাজি ইয়াছিন মিয়া জানায়, এরা মার্কেটের কোটি কোটি টাকা আতত্মসাৎ করেছে। নিজের অপকর্ম আড়াল করতে ভুয়া কমিটি গঠন করে মার্কেটের শান্ত পরিবেশ অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে।

এই বিভাগের আরো খবর