শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মরলে মরবো, তবুও চাই মার্কেটিং !

ফরিদ আহম্মেদ বাধন

প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২০  

জীবনের চাইতেও ঈদ বড় ! সরকারের পক্ষ থেকে জন সাধারণকে সচেতন করার ব্যাপারে জোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু জনগণ যেনো করোনার সাথে যুদ্ধ করতে নেমেছে মার্কেটিংয়ে। কেনাকাটা করছে দু’হাত খুলে। সাথে কোলের শিশু থেকে শুরু করে ৮/৯ বছরের শিশুরাও বাদ নেই।

 

সবাই যেনো বন্দি জেলখানা থেকে বের হয়ে নেমেছে আনন্দ উল্লাসে। লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ শহরে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মানুষের আনা-গোনা। ছোট্ট শিশুদের হাতে, কোলে করে নিয়ে মার্কেটিংয়ে আসছে নারী পুরুষ। করোনার আতংক নেই কারো।

 

সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা  দেয়া হলেও মানতে নারাজ সাধারণ মানুষ। মার্কেটগুলোতে সচেতন থাকতে বলা হলেও কেউ গাঁয়েই মাখছে না। মার্কেটমুখি মানুষগুলোর মনের ভাবটা এমন-মরলে মরবো, তবুও চাই মার্কেটিং। করোনা সংকটকেও একশ্রেণীর মানুষ তোয়াক্কা করছেনা। ঈদের পরপরই বোঝা এর প্রতিক্রিয়া কি হয় বা কতটুকু ভয়ংকর হয়। 


করোনা ভাইরাস মুক্ত এখনো হয়নি বিশ্ব। বাংলাদেশকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বর্হির্বিশ্ব। দেশে সবচেয়ে করোনার আক্রান্তের সংখ্যা বেশি নারায়ণগঞ্জ। অপরদিকে এই জেলাতেও   করোনায় মৃত্যুর হারও বেশি। সম্প্রতি সরকার লকডাউন কিছুটা শিথিল করার পর থেকে শহরের মার্কেটগুলোতে বেড়েছে জনসমাগম। দোকানগুলোতে সামজিক দূরত্ব মানছেনা কেউ। 


বুধবার সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি থানা এলাকায় থেকে মানুযষের ভীড় করতে দেখা গেছে। শহরে চলেছে রিক্সা ও ইজি বাইক। কারো মধ্যে কোন ধরনের সতর্কতা নেই। শুধু মুখে মাস্ক পড়লেই সচেতনতা মনে করছে অনেকে। প্রকৃতপক্ষে, করোনা পরিস্থিতিতে কি করনীয় তা বেশিরভাগ নরনারীই জানে না। আবার অনেককে দেখাগেছে যে কোন মূল্যে তাদের  ঈদের কেনাকাটা করতেই হবে। এই  কেনাকাটা যেন অমৃত সম ! 


বুধবার দুপুরের দিকে শহরে আসা বন্দর এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, লকডাউন শিথিল করার পরপরই তা স্ত্রীর বায়না ধরেছে তাকে মার্কেটিং করে দিতে হবে। স্ত্রীকে শত বুঝিয়েও কোন কাজ হয়নি। অবশেষে তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানকে ঈদের কেনাকাটা করে দিতেই শহরে  এসেছেন। তিনি ক্ষোভ নিয়েই বলেন, ‘ভাই লকডাউন কি তা অনেকেই বুঝে না।

 

লকডাউন মানে অনেকে মনে করেন ঘরের মধ্যে বন্দী থাকতে হবে। কিন্তু কেনো এই বন্দি। তা যেমন তারা জানে না, আবার কেনো লকডাউন শিথিলতা তাও এই বাঙ্গালী মনে হয় বুঝে না। যদি বুঝতো তাইলে আজকে নারায়ণগঞ্জ শহরে এতো মানুষের ভিড় হইতো না’।  


শহরের মাসদাইর এলাকার বাসিন্দা জামিল হোসেন বলেন, ‘ভাই আমাগো কোন ঈদ নাই।  কোনমতে পরিবার-পরিজন নিয়ে এই সংকট কাটাতে পারলেই হয়। আমরা অনেক কষ্টে আছি। অথচ কিছু মানুষ ঈদ মার্কেট করতে উঠে পড়ে লেগেছে।

 

তাদের অস্থিরতা দেখলে মনে হয় নতুন টাকার গরম সামলাতে পারছেনা। মহিলারা নিষেধ মানছেনা। বাচ্চা নিয়েই মার্কেটে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। শহরে মার্কেটগুলোতে প্রচন্ড ভিড়। যেভাবে মানুষ মার্কেটে যাচ্ছে তাতে যে কোন সময় যে কেই সংক্রমিত হওয়ার আশংকা থাকে। 
 
 

এই বিভাগের আরো খবর