শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভয়াবহ দূষণের কবলে শীতলক্ষ্যা, সুপেয় পানির সংকট বাড়ছে

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

মাহফুজ সিহান : পানির অপর নাম শুধু জীবনই নয়, অনেক ক্ষেত্রে মরণও হয়। খাবার উপযুক্ত বিশুদ্ধ পানিকে জীবন বলা গেলেও ময়লা আবর্জনা আর জীবাণুযুক্ত পানিকে জীবন না বলে মরণই বলতে হয়। দেশের অন্যান্য জায়গার ন্যায় দখল-দূষণে বিপর্যস্ত শীতলক্ষ্যার পাড় ঘেঁষা ৭২ বর্গকিলোমিটার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ২০ লাখ লোকের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ একটি বড় সমস্যা। 

 

অথচ, একসময় দারুণ প্রশস্ত ছিল শীতলক্ষ্যা। ১৮৮৬ সালে জেলা বোর্ড ১৬ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি স্টিমার ক্রয় করে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জের ভেতর ফেরি পারাপারের ব্যবস্থা করে। ওই সময় শীতলক্ষ্যা-নদীর সঙ্গমস্থল খুবই প্রশস্ত ছিল এবং মাইলের পর মাইল জলরাশি বিস্তৃত ছিল। কুণ্ডু ব্রাদার্সের কার্গো সার্ভিস এবং ‘আইজিএন অ্যান্ড আরএসএ’র বড় বড় স্টিমার নিয়মিত গোয়ালন্দ, কোলকাতা অবধি যাতায়াত করত। কিন্তু এখন চারপাশের কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে আর নানা প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখলে সংকুচিত হয়ে দূষিত হয়ে পড়েছে শীতলক্ষ্যা। ফলে পৌরসভা হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের হাল আমল পর্যন্ত ১২০ বছর পর্যন্ত সুপেয় পানির জন্য ক্রমাগত লড়াই করতে হচ্ছে। 

 

সিটি করপোরেশন এলাকায় পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দুটি ওয়াটার ওয়ার্কস ও ৩১টি ডিপ টিউবওয়েলের মাধ্যমে শীতলক্ষ্যার পূর্বে শহরে ও পশ্চিমে বন্দওে ১২ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে দৈনিক সর্বমোট ১০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে ওয়াসা। এখন ওয়াসার গ্রাহকের সংখ্যা মাত্র ২৮ হাজার। সিদ্ধিরগঞ্জ গোদনাইল ওয়াটার ওয়ার্কস এ আড়াই লাখ লিটার এবং সোনাকান্দা ওয়াটার ওয়ার্কসে ৫৬ লাখ লিটার পানি শোধন করা হয়। ডিপ টিউবওয়েলের মাধ্যমে সাড়ে ৬ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হয়। টোটাল রিজার্ভ বা ওভারহেড ট্যাংক রয়েছে ৮টি। যেগুলোতে প্রায় ৪০ লাখ লিটার পানি ধারণ করে রাখা যায়।

 

ওয়াসার দুটি ওয়াটার ওয়ার্কস প্রকৌশলীদের সূত্রে জানা গেছে, ওয়াটার ওয়ার্কসে পানি শোধনে ওয়াসা তিন ধরনের ক্যামিকেল ব্যবহার করে। অ্যালুমুনিয়াম সালফেট, ক্লোরিন ও ম্যাক্স ফ্লক টি’র ব্যবহার করে শীতলক্ষ্যার পানি পরিশোধন করা হয়। কিন্তু শীতলক্ষ্যার পানি শুষ্ক মৌসুমে অতিমাত্রায় দূষিত হয়। বিভিন্ন ডাইং, ওয়াটার ওয়ার্কসের পাশে নীট কনসার্ন, এসিআইসহ বিভিন্ন কারখানার লাল বর্জ্যে এবং স্রোত কমে যাওয়ায় পানি মাত্রাতিরিক্ত দূষিত হয়ে যায়। সেসময় অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি মাত্রায় কেমিক্যাল ব্যবহার করে পানি বিশুদ্ধ করতে হয়।  

 

ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ শহর ও বন্দরে ওয়াসার পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক লাইন ৩৮৪ কিলোমিটার। পানি সরবরাহে এলাকাভেদে ৪, ৬, ৮, ১২, ১৬, ১৮ ইঞ্চি পাইপ ব্যবহার করে ওয়াসা। এসব নেটওয়ার্ক লাইনের পাইপগুলো অনেক পুরনো হওয়ায় শোধনকৃত পানি দূষিত হয়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছায়। অভিযোগ পাওয়ার ভিত্তিতে তখন ওয়াসা ক্ষতিগ্রস্ত লাইনের মেরামত করে। 

 

তবে ওয়াসার দাবি, তাদের তত্ত্বাবধানে থাকর সময় জায়গার অভাবে অনেক জায়গায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ডিপ টিউবওয়েল বসানো যায়নি। বারবার জেলা প্রশাসক ও সিটি করপোরেশনকে সমস্যাটির কথা জানালেও তাকে কার্যকর কিছু হয়নি, এলাকায় জায়গা দেয়া যায়নি।

 

এছাড়া ওয়াসার প্রকৌশলীরা কাজ করতে করতে বুঝতে পেরেছেন, প্রতিবছর গড়ে ৩ মিটার পর্যন্ত ভূগর্ভস্ত পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে গভীর নলকূপগুলো বসানো হয় সাধারণত ২০০ থেকে ২৫০ মিটার গভীরে। শহরের গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি উঠাতে কিছুটা কম সমস্যা হলেও শীতলক্ষ্যার পূর্বতীরে বন্দর এলকায় পানি ওঠাতে অনেক সমস্যা। কেননা ওইসব এলাকায় একেতো পানির স্তর অনেক নীচে, উপরন্তু টিউবওয়েলে ওঠানো পানিতে আয়রনের পরিমাণ বেশি। পানি শোধনের উৎকৃষ্ট উপায় নদীর পানি শোধন। তবে নদী যেভাবে দূষিত হচ্ছে তা হয়ে পড়ছে কঠিন থেকে কঠিনতর।  

 

পানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড.আইনুন নিশাত জানান, ‘শীতলক্ষ্যার নদীর উজানে অনেক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, ফার্টিলেজার ফ্যাক্টরি আছে। শীতলক্ষ্যার উপনদী বালু নদীতে প্রচুর ডাইং, গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি, মুরগীর বর্জ্য সবকিছু নদীতে আসছে। শীতলক্ষ্যার পানি তুলে প্রাথমিকভাবে ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়। নানা ক্যামিকেল ব্যবহার করে পানি পরিশোধন করলেও সেখানে অনেক হেভি মেটাল থেকে যায়। পানি পরিশোধনের পর যেসব পাইপ দিয়ে সরবরাহ করা হয় সেগুলো বহু পুরোনো এবং প্রপার মেইটেনেন্স হয়নি। যার ফলে বাইরের ময়লা পাইপে ঢোকে। শীতলক্ষ্যা ও বালু নদী দুটোরই অবস্থা ভালো না। উজানের যেখানে ফ্যাক্টরি থাকুকনা কেন ইটিপি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিশোধন করে পানি ছাড়া নিশ্চিত করতে হবে। যথেষ্ঠ পরিমাণ পানি নদীতে রয়েছে তবে এর গুনগত মান ভাল নয়, যার কারণে পানিতে দুর্গন্ধ।’ 

 

২০১৯ সালে ৩১ অক্টোবর ওয়াসা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পায় নাসিক। ঢাকা ওয়াসা নাসিকের কাছে হস্তান্তরের সময় নাসিক ওয়াসার কাছে পাওনা ছিল ১ কোট ৯১ লাখ টাকা, আর ওয়াসা নাসিকের কাছে পাওনা ছিলো ১৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। ওয়াসার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের কাছে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে হস্তান্তর করলেও আগামী ১ বছর সিটি করপোরেশন পানি শোধন ও সরবরাহে সক্ষমতা করার জন্য ওয়াসার লোকবল ব্যবহার করতে পারবে। সিটি করপোরেশন লোকবল নিয়োগ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করলে এরপর পুরোটাই সিটি করপোরেশন দেখভাল করবে। 

 

ওয়াসার নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর আব্দুল হাশেম বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে ওয়াসা দায়িত্ব নেয়ার পর পানি সরবরাহে দারুণ কাজ করেছে ওয়াসা। বর্তমানে পানি সরবরাহ নিয়ে দেখভালের দায়িত্ব নিয়ে সিটি করপোরেশনের সাথে ওয়াসার একটা চুক্তি হয়েছে। চুক্তি মোতাবেক সবকিছু নাসিকই করবে। তারা স্বয়ংসম্পূূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা শুধু সহযোগিতা করবো। আমি প্রতিটি মাসিক সভায় একটি বিষয়ই জোর দিয়ে বলেছি, ‘নদী বাঁচানো না গেলে পানি ভালো হবে কি করে?’

 

এদিকে দায়িত্ব নেয়ার পরপরই নাসিক কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম। তিনি জানান, বর্তমানে ৩০ শতাংশ পানি শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উত্তোলনের পর পরিশোধন এবং ৩১টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে উত্তোলন করে বর্তমানে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) মাধ্যমে পানি ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৮২০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প চলছে। এই প্রকল্পে ওয়াসার পাইপ বদলানো, সংযোজন, বিয়োজন ইত্যাদির কাজ শুরু হয়ে গেছে। প্রয়োজনবোধে আমরা নতুন ওয়াটার ওয়ার্কস তৈরির কাজও করতে পারি। 

 

তিনি আরও জানান, শহরে ও বন্দরে প্রায় ১ হাজারেরর অবৈধ গভীর নলকূপ আছে। এসব অবৈধ নলকূপ বৈধ করার জন্য কিছুদিন সময় দিয়ে আমরা বিজ্ঞপ্তি দেবে, না করলে অভিযান চলবে। এছাড়া বকেয়া গ্রাহকের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পানি সরবরাহ ও দেখাশোনার জন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে নতুন একটি বিভাগ তৈরি করা হবে।

 

চলতি মাসের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর উন্নয়ন ও পানি বিশুদ্ধ করতে ঢাকায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী খালেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও সিটি কপোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীও উপস্থিত ছিলেন। 

 

সভার ব্যাপারে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, ‘শীতলক্ষ্যা নদীর পানি বিশুদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ নদীর দুই পাড়ে অবৈধ দখলমুক্ত করে উন্নয়ন করা হবে। এ ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়েছে, এগুলো যাঁচাই-বাঁছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হবে। উন্নয়নের স্বার্থে সরকার যে কোন কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। স্থানীয় সরকার সেটি বাস্তবায়ন করবেন। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে সেভাবে আলোচনা এগিয়ে নিতে হবে।’  

 

ঢাকা ওয়াসা থেকে নারায়ণগঞ্জ ওয়াসার দায়িত্ব নেয়ার আগে ও পরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘ওয়াসার ব্যবস্থাপনা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতায় আসবে এটা দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। দাতা সংস্থাগুলো আমাদের সাথে এখন যোগাযোগ করছে আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য। নারায়ণগঞ্জ ওয়াসা সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর হবার সাথে সাথেই নগরবাসীকে পানি ভালো করে দিতে পারবো না। দীর্ঘ ৫০-৬০ বছর তারা এগুলো চালিয়েছে, অনেক স্থানেই পাইপ ফেটে গেছে। অন্তত ২ থেকে ৩ বছর নগরবাসীকে  নাসিককে সময় দিতে হবে ভালো পানি সরবরাহ করার জন্য।

 

তবে নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য আশার কথা হচ্ছে, সম্প্রতি নদী রক্ষায় নানা উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। ১৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে জেলা নদী রক্ষা কমিটির বৈঠকে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার। তিনি বলেন, নদী বাঁচলেই কেবল বাঁচবে আমার দেশ, বাঁচবে দেশের মানুষ। 

 

এসময় জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাংলার প্রাণ নদীগুলোকে আবারো তাদের আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে হবে।’ চলতি মাসের ৫ ফেব্রুয়ারি শীতলক্ষ্যা নদীর ২২৯ দখলদার প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসন।  

 

নাসিকের মতো পানি নিয়ে সচেষ্ট ছিল পৌরসভাও :   
১৮৭৬ সালের প্রতিষ্ঠিত সাড়ে ৪ বর্গমাইলের নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা তৎসময়ের ২৭ হাজার ৮৭৬ জনসংখ্যার জন্য পৌর সুবিধাদির অন্যতম সুষ্ঠু পানি সরবরাহব্যবস্থার জন্য প্রথম থেকেই সচেষ্ট থাকে। পানি সরবরাহের আধুনিক ব্যবস্থা উত্তরণের লক্ষ্যে ১৯০১ সালে শহরে পরিশুদ্ধ পানি সরবরাহের স্কিম তৈরির জন্য সাত হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯০৫ সালে কয়েকজন কমিশনারকে সদস্য করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে নারায়ণগঞ্জে ওয়াটার ওয়ার্কস স্থাপনের উদ্দেশ্যে সরকারের কাছে ৩০ বছরে শোধ দেয়ার শর্তে ১ লাখ টাকা ঋণের আবেদন করার প্রস্তাব করে এবং সর্বমোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় অনুমোদন করে। 

 

১৯০৭ সালে ওয়াটার ওয়ার্কস স্থাপনের জন্য ‘মেসার্স সিমসন এন্ড ব্রাদার্স’ চুক্তি দেয়া হয়। একই সালের ডিসেম্বর মাসে একজন ওয়াটার ওয়ার্কস ইঞ্জিনিয়ারের জন্য কলকাতার ‘স্টেটসম্যান’ ও ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। বাড়িতে বাড়িতে পানির সংযোগ দেয়ার জন্য ‘প্লাম্বারদের’ও এই মাসেই লাইসেন্স দেয়া হয়। পৌরসভার প্রথম লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্লাম্বারদের মধ্যে প্রয়াত হরকান্ত ব্যানার্জির প্রতিষ্ঠানটি অন্যতম। 

 

১৯২২-২৩ সালে নদীর পূর্বপাড়ে ওয়াটার ওয়ার্কস স্থাপন করার জন্য আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। অবশেষে ১৯২৯ সালে ২ লাখ ১২ হাজার ৪৮২ টাকা ব্যয়ে ১ দশমিক ৭৫ লাখ গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন সোনাকান্দা ওয়াটার ওয়ার্কস নির্মাণ সমাপ্ত হয়। কিন্তু এটি চালু হয় ১৯৩১ সালে। ১৯৩৫ সালে পৌর পাঠাগারের সন্নিকটস্থ পানির ট্যাংকটি স্থাপন করা হয়। পরবর্তী সময়ে পানির চাহিদা বৃদ্ধি পেলে ষাটের দশকে অনেকগুলো গভীর নলকূপ বসানো হয়। পরবর্তীতে পানি ব্যবস্থাপনায় ওয়াসার দক্ষতার জন্যই ১৯৯০ সালে নারায়ণগঞ্জের পানি ব্যবস্থাপনা ঢাকা ওয়াসাকে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশুদ্ধ পানির জন্য নগরবাসীর হাহাকারের কারণে পানি ব্যবস্থাপনায় আবারো পৌরসভার মতো নাসিককে দায়িত্ব দেয়ার দাবি ওঠে। 

এই বিভাগের আরো খবর