বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ভোগান্তিতে ৬ গ্রামের জনগণ

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২০  

স্টাফ রিপোর্টার : প্রায় সাড়ে তিন বছর পার হলেও শেষ হয়নি বন্দরের নাসিক ২৪নং ওয়ার্ডের অবস্থিত নবীগঞ্জ-ঢাকেশ্বরী সড়কের লুহিয়া পুল খ্যাত লুহিয়া ব্রিজের কাজ। এর সাথে ঝুলে আছে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার কাজ। এতে আশেপাশের প্রায় ৬ টি গ্রামের মানুষ মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হলেও নির্লিপ্ত জনপ্রতিনিধি।

 

সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ২৪ ও ২৫নং ওয়ার্ডের নবীগঞ্জ থেকে ১নং ঢাকেশ্বরী পযন্ত এই সড়কটির নবীগঞ্জ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক এখনো পড়ে আছে সংস্কারবিহীন অবস্থায়। অথচ এই সড়কটি এই এলাকার মানুষের সাথে নদীর পশ্চিম পারের এমনকি এক এলাকা থেকে আরেক এলাকার যোগাযোগের প্রধান ও একমাত্র  সড়ক। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে মেরামতের জন্য তুলে ফেলা হয় রাস্তার কার্পেটিং।

 

খোঁড়াখুঁিড় করা হয় বিভিন্ন জায়গায়। কোন রকমে ব্রিজের কাঠামো দাঁড় করানো হলেও ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ এখনো ঠিক করা হয়নি। সংস্কার করা হয়নি এক কিলোমিটারে সে সড়কটি। ব্রিজ দিয়ে পার হওয়া দূরের কথা ব্রিজের আশপাশ দিয়ে রিক্সা চলাচল করাটাও প্রায় অসম্ভব। এই সময় দেখা গেল ভরাট মাটি নিয়ে লুহিয়া ব্রিজের ঢাল এলাকায় ফেঁসে গেছে একটি ভটভটি (স্যালো ইঞ্জিন দিয়ে তৈরী বিশেষ গাড়ি)। অনেক সময় নিয়ে মালামালসহ গাড়িটি সরিয়ে নেয়ার বৃথা চেষ্টা করছে গাড়ির শ্রমিকসহ কয়েকজন যুবক। কিন্তু বাধ্য হয়ে ছোট এই গাড়িটির মালামাল আনলোড করে তারপর গাড়ি সরাতে হয় তাদের।

 


স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ আবু হানিফ জানান, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে এই ব্রিজটি তৈরীর কাজ ধরা হয়েছিল। এরপর প্রায় তিন বছর এই সড়ক দিয়ে এলাকার মানুষের হেঁটে চলাচল করার অবস্থাও ছিল না। এই তিন বছর একরকম অঘোষিত বন্দী করে রাখা হয়েছে এলাকাবাসীকে। বহু নাটকীয়তার পর মাত্র ছয় মাস পূর্বে ব্রিজের ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে, তাই অন্তঃত হেঁটে চলাফেরা করা যাচ্ছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘পত্রিকায় লিখে কি করবেন ? এ নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে, কোন কাজ হয়নি। এই দেখেন! ব্রিজ ঢালাইয়ের পরে ছয় মাস পার হলেও কাজ শেষ হয়নি। এখন বন্ধ আছে।’


এলাকার বাসিন্দা জাফর মিয়া বলেন, কাউন্সিলর আমাদের এতো কাছের অথচ আমাদের এমন দুর্দিনে একটি বারের জন্যও তিনি আমাদের সান্তনা দিতেও আসেননি। আমাদের যেকোন রোগী, গর্ভবতী নারীদের সমস্যার জন্য কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় কোন মালামাল নিয়ে আসা-যাওয়ার জন্য এখনো কোন ব্যবস্থা নেই। একটি সমস্যা একমাস দুইমাস কিংবা এক বছর থাকতে পারে। কিন্তু বিকল্প কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বছরের পর বছর এই অবস্থা থাকলে আমাদের এখন কি করণীয় তা কে দেখবে ? আমরা কার কাছে যাব ? কাকে বললে এই সমস্যার সমাধান হবে ?

 


এবিষয়ে বন্দর নাগরিক কমিটির (বনাক) সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল কবির সোহেল বলেন, এই বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় আমাদের বিষয়টি অবগত করেছেন। আমরা এর আগে বিভিন্ন সময় স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। তার অফিসে কয়েকবার গিয়েও তাকে পাইনি। মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাইনি।


এবিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর আফজাল হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলর শাওন অংকন জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক আমি নির্বাচিত হওয়ার পর এই সমস্যার কথা জানতে পারার সাথে সাথেই এলাকাটি পরিদর্শন করি। তিনি জানান, প্রথম যে ঠিকাদার কাজটি করছিল মূলত তার গাফলতির জন্যই এই কাজের সময় এত দীর্ঘায়িত হয়েছে। এজন্য তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য ঠিকাদারকে কাজটি দেয়া হয়েছে। এখন খুব শ্রীঘ্রই কাজ ধরা হবে এবং আমি আশাকরি কাজটি খুব দ্রুতই শেষ হবে।

 

এই বিভাগের আরো খবর